মলিন জামাকাপড় পরা এক শীর্ণকায় প্রবীণ হাতে একটা বড় প্লাস্টিকের কৌটোয় কিছু লজেন্স ভরে বিক্রি করছেন। ফাইল ছবি।
কিছু দিন আগে বিবাদী বাগ রেলস্টেশন থেকে বিকেলে আপ দত্তপুকুর লোকাল ধরে বাড়ি ফিরছিলাম। ট্রেনে উঠে একটা আসনও পেয়ে গিয়েছিলাম। দেখি, কামরাটির একটি বড় অংশ দখল করে আছেন মূলত মাঝবয়সি অফিস-ফেরত যাত্রীরা, যাঁরা সকলেই শিক্ষিত বলে আমার ধারণা। এর পর ট্রেনটি প্ল্যাটফর্ম ছাড়তেই দেখি মলিন জামাকাপড় পরা এক শীর্ণকায় প্রবীণ হাতে একটা বড় প্লাস্টিকের কৌটোয় কিছু লজেন্স ভরে বিক্রি করছেন। হঠাৎই লক্ষ করলাম, ওই অফিস-যাত্রীদের কেউ কেউ তাঁর জামা ধরে টানছেন, কেউ তাঁর গায়ে একটু খোঁচা দিচ্ছেন। কেউ আবার তাঁকে উদ্দেশ করে এমন সব উক্তি করছেন, যাতে বৃদ্ধ উত্তেজিত হন।
তিনি হলেনও। রেগে গিয়ে বেশ কয়েকটি অপশব্দ প্রয়োগ করলেন। শুনে আরও উল্লাসে ফেটে পড়লেন ওই হেনস্থাকারীর দল।
এক জন বৃদ্ধকে এমন ভাবে হেনস্থা হতে দেখে স্থির থাকতে পারলাম না। আমিও বয়স্ক। দশ বছরেরও বেশি হল অবসর নিয়েছি। চূড়ান্ত অপমানিত হতে পারি জেনেও থাকতে না পেরে প্রতিবাদ করি। প্রশ্ন তুলি তাঁদের বিবেক নিয়ে। ভেবেছিলাম, আমার এই প্রতিবাদে উল্টে হয়তো আমাকেও হেনস্থা হতে হবে। তা অবশ্য হয়নি। বরং, পুরো কামরাটিই বেশ খানিক ক্ষণ নিস্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। সে দিন গন্তব্যে পৌঁছতে পৌঁছতে কেবলই ভাবছিলাম ওই বৃদ্ধটির কথা। যে বয়সে তিনি কী খাবেন, কী পরবেন, সেটা তাঁর পরিবারের অন্যদের দেখার কথা, সেখানে তিনি কতখানি অসহায় হলে অশক্ত শরীরেও ট্রেনে লজেন্স ফেরি করেন। অথচ আমরা, তথাকথিত শিক্ষিত ব্যক্তিরাও, সাময়িক আনন্দ লাভের জন্য তাঁদেরও হেনস্থা করে মজা উপভোগ করি। দিন দিন এ কোথায় নেমে যাচ্ছি আমরা?
সমীর কুমার ঘোষ, কলকাতা-৬৫
উদ্ভট প্রক্রিয়া
‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্পটি আমাদের পাড়ায় সমস্যার সৃষ্টি করছে। সংশ্লিষ্ট রেশন ডিলার যুবকটি তাঁর মোটরবাইক নিয়ে পাড়ার বিভিন্ন মোড়ে এসে দাঁড়ান। কবে কোন মোড়ে আসবেন, তা জানা থাকে না। তার পর সেখানে কার্ড দেখিয়ে চলে মেশিনে আঙুলের ছাপ নেওয়ার পালা। এখানে আবার আঙুলের ছাপ মেলা এক ভাগ্যের ব্যাপার, চার-পাঁচ বারের চেষ্টায় হয়তো মেলে। কিন্তু প্রায়ই মেশিনের ব্যাটারিতে চার্জ থাকে না। কোনও মতে ছাপ নেওয়া হলে এ বার আসে রেশন দোকানে গিয়ে খাদ্যশস্য তোলার পালা। কবে দোকান খোলা পাওয়া যাবে তা ঠিক থাকে না, যে-হেতু ডিলার দোকান বন্ধ রেখে মোড়ে মোড়ে ঘুরছেন। আর দোকান খোলা পেলে সেখানে ভিড় হয় অস্বাভাবিক। এতে ডিলার ও জনসাধারণ, উভয়ই হয়রান হচ্ছেন। এ ধরনের উদ্ভট প্রক্রিয়ায় কার সুবিধা হচ্ছে?
অরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা-৮৪
মঞ্চের অব্যবস্থা
সোদপুর জনবসতির দিক থেকে এক গুরুত্বপূর্ণ শহর। কলকাতার প্রায় সমস্ত বড় বাণিজ্যিক সংস্থার শাখা এখানে রয়েছে। এ-হেন এক জায়গায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্যে মঞ্চ বলতে পানিহাটি পুরসভার অন্তর্গত পানিহাটি লোকসংস্কৃতি ভবন, এবং এই ভবনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হল ‘নজরুল মঞ্চ’ নামের একটি হল। নজরুল মঞ্চে কমবেশি শ’দুয়েক দর্শকাসন রয়েছে। বড় হল-এর দর্শকাসন এগারোশো। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত, মনোজ মিত্র, পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, দেবশঙ্কর হালদার-সহ বহু নাট্যব্যক্তিত্ব এখানে অভিনয় করেছেন। প্রতি বছর এখানে নাট্য মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
কিন্তু এই দু’টি মঞ্চের শৌচাগারের হাল অবর্ণনীয়।সেখানে ছিটকিনি নেই, জল প্রায় পাওয়া যায় না বললেই চলে, সারা ক্ষণই অপরিচ্ছন্ন, দুর্গন্ধময় থাকে। ফলে শৌচালয় ব্যবহারকারী, বিশেষত মহিলাদের দুর্দশা সহজে অনুমেয়।
এ ছাড়া মঞ্চগুলির সাউন্ড সিস্টেম এবং লাইটিং-এর অবস্থা ভাল না হওয়ায় পরিশ্রমের প্রযোজনা ঠিকমতো সম্পন্ন করা সম্ভব হয় না। অথচ, সমস্যাগুলো নিয়ে কথা বলতে গেলে কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিরা তাতে কর্ণপাতও করেন না। মঞ্চ দু’টির সমস্যাগুলির আশু সমাধান প্রয়োজন।
স্বপ্না বন্দ্যোপাধ্যায়, সোদপুর, উত্তর ২৪ পরগনা
গরিবের দুরবস্থা
বেশ কিছু দিন ধরে দেখা যাচ্ছে রাজ্যের বহু দরিদ্র খেটে খাওয়া মানুষ একশো দিনের কাজে তাঁদের পাওনা মজুরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। শুধু তা-ই নয়, একশো দিনের কাজ থেকেও তাঁরা বঞ্চিত হচ্ছেন। কারণ, রাজ্যে দীর্ঘ দিন এই প্রকল্প বন্ধ হয়ে আছে। কিন্তু কেন? ভারতের অন্য রাজ্যগুলি যদি ওই প্রকল্প সারা বছরই চালু রাখতে পারে, তবে পশ্চিমবঙ্গের মানুষের প্রতি কেন এই বিমাতৃসুলভ আচরণ? কেন্দ্রীয় সরকারের বক্তব্য, দেশের বিভিন্ন রাজ্য, যেখানে অ-বিজেপি সরকার রয়েছে, সেখানকার সরকার নিয়মিত কেন্দ্রের পাঠানো টাকার হিসাব দিচ্ছে আর তাদের একশো দিনের পাওনা আদায় করে নিচ্ছে। ব্যতিক্রম এ রাজ্য। কেন্দ্র থেকে বার বার বলা সত্ত্বেও তারা প্রকল্পের টাকার হিসাব দিচ্ছে না। বিধানসভার বিরোধী দলনেতার মুখে হামেশাই শোনা যায় যে, রাজ্য ওই টাকার হিসাব দিলেই কেন্দ্র আবার একশো দিনের পাওনা টাকা পাঠাবে। রাজ্য আর কেন্দ্রীয় সরকার তাদের হিসাবনিকাশ নিয়ে আলোচনা করে দ্রুত সমস্যা মেটাক, যাতে ওই গরিব মানুষগুলো ঠিক সময় একশো দিনের কাজের মজুরি পেয়ে যান।
স্বপন কুমার আঢ্য, ভান্ডারহাটি, হুগলি
বিদ্যুতের তার
জাতীয় সড়ক ১৬ বম্বে রোডের ধারের একটি বাড়িতে আমাদের বাস। আশপাশে আরও বাড়ি আছে। এই রাস্তার একেবারে ধারেই একটি পুরনো মসজিদও আছে। কিছু দিন আগে হঠাৎ দেখলাম, আমাদের বাড়ি ও মসজিদের পাশ থেকে হাই-ভোল্টেজ লাইন লাগানোর জন্য গর্ত খোঁড়ার কাজ চলছে। এতগুলি লোকের জীবনের ঝুঁকি উপেক্ষা করে বাড়ি ও মসজিদের খুব কাছ দিয়ে বিদ্যুতের লাইন নিয়ে যাওয়া কি ঠিক হচ্ছে? মসজিদে বিভিন্ন অনুষ্ঠান হয়, তার জন্য আশপাশের পাড়া থেকে বহু মানুষ জমায়েত হন। তা ছাড়া ভবিষ্যতে মসজিদ প্রসারিত হতে পারে। বিদ্যুতের তার গেলে সেই কাজ বাধাপ্রাপ্ত হতে পারে। খুঁটিগুলি যে-হেতু অনেকগুলি বাড়ির লাগোয়া এবং বম্বে রোডের ধারে বসছে, ফলে যে কোনও সময়ে গাড়ির ধাক্কায় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, বাড়িঘর জ্বলে যেতে পারে। এমনকি প্রাণহানিও হতে পারে। তা ছাড়া ঝড়বৃষ্টিতে তার ছিঁড়লে সেখান থেকেও বড়সড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে যায়। এমনটা ঘটলে তার দায় কি বিদ্যুৎ বিভাগ বা প্রশাসন নেবে? এটা কি আদৌ আইনসম্মত? অথচ, দেহাটি খাল বরাবর ফাঁকা জায়গা দিয়ে ওই তার সহজে টানা যেতে পারত। প্রসঙ্গত, এই লাইন টানতে গিয়ে যথেচ্ছ ভাবে গাছ কাটাও চলছে। উপযুক্ত ব্যবস্থা করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
পিন্টু আলি, কোলাঘাট, পূর্ব মেদিনীপুর
দুর্গন্ধময়
সিঙ্গুর মহামায়া স্কুলের পিছনে, নেতাজি মূর্তির পাশেই এলাকার সমস্ত আবর্জনা ফেলার কারণে অসহ্য দুর্গন্ধের জন্য রাস্তা দিয়ে চলাচল করা রীতিমতো অস্বস্তিকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর পাশ দিয়েই দৈনিক কয়েক হাজার ক্রেতা-বিক্রেতা সিঙ্গুর হাটে যান। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ, জনস্বাস্থ্য রক্ষার তাগিদে স্কুলের পাশে ময়লা ফেলা বন্ধ করতে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হোক।
তাপস দাস, সিঙ্গুর, হুগলি