Sundarbans

সম্পাদক সমীপেষু: সুন্দরবন রক্ষা করতে

বাঁধে ভাঙন ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে মেরামত করতে হবে। এখন দেখা যায়, বাঁধ ভাঙলে তবে কাজ হয়। এ তো উল্টো পদ্ধতি।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১৬ অগস্ট ২০২০ ০২:১৯
Share:

ছবি সংগৃহীত

প্রায় পঞ্চাশ বছর সুন্দরবনের গোসাবার এক দ্বীপে বসবাস সূত্রে প্রাকৃতিক পরিবেশ, জীববৈচিত্র, জনপদ, জনজীবনকে চিনেছি। ঝড়, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, বন্যা এবং এগুলির সঙ্গে নিবিড় ভাবে যুক্ত আছে প্রায় পঞ্চাশ লক্ষ মানুষের জীবন, জমি-জিরেত, আহার্যের সংস্থান। পরবর্তী প্রজন্মের সুরক্ষার জন্য, প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও বিপদ প্রতিরোধের জন্য বাঁধগুলোকে অন্তত নদীর দিকে ‘ব্লক-ব্রিকিং’, বা কংক্রিট করা দরকার। প্রয়োজনে কোথাও রিং বাঁধ করা দরকার জমির জন্য ক্ষতিপূরণ দিয়েও। নিয়মিত জোয়ার-ভাটার পরিবর্তন, নদীর গতি পর্যবেক্ষণ ও বাঁধের দেখভাল করতে হবে। এটা সেচ দফতরের কাজ।

Advertisement

বাঁধে ভাঙন ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে মেরামত করতে হবে। এখন দেখা যায়, বাঁধ ভাঙলে তবে কাজ হয়। এ তো উল্টো পদ্ধতি। এতে অপব্যয় বেশি। বাঁধগুলোর সর্বত্র ম্যানগ্রোভ লাগানো আবশ্যক। সব দ্বীপে প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলগুলোর পরিকাঠামো বাড়িয়ে বিপর্যয়ের সময় আশ্রয়কেন্দ্র করে দেওয়ার পরিকল্পনা করতে হবে। বর্তমানে দ্বীপের ভিতরে দু’একটি বিচ্ছিন্ন ‘ডিজ়াস্টার সেন্টার’ আছে, যা স্থায়ী সমাধান নয়। দ্বীেপর মধ্যে অপেক্ষাকৃত বড় রাস্তা ও গ্রামের মধ্যে থাকা প্রধান রাস্তাগুলো উঁচু করে কংক্রিট ঢালাই করে দিতে হবে, যাতে একটি এলাকায় জল ঢুকলেও পাশের এলাকায় যেতে না পারে।

সুকুমার পয়রা

Advertisement

গোসাবা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা


কে সি নাগ

তেলমাখা বাঁশ বেয়ে বাঁদরের ওঠানামা হোক বা চৌবাচ্চার ফুটো দিয়ে জল বেরিয়ে যাওয়া— যাঁর পাটিগণিতের মারপ্যাঁচ থেকে নিস্তার পায়নি বাঙালি, তিনি কে সি নাগ। ১০ জুলাই ১৮৯৩ সালে হুগলির গুড়াপের নাগপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন কেশবচন্দ্র নাগ। কিষেনগঞ্জ হাইস্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়ে তিনি চলে আসেন কলকাতায়। রিপন কলেজ (বর্তমানে সুরেন্দ্রনাথ কলেজ) থেকে আই এসসি পরীক্ষায় পাশ করেন প্রথম বিভাগে। বিএ পাশ করেন অঙ্ক ও সংস্কৃত নিয়ে।
প্রথমে ভাস্তারা যজ্ঞেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয় ও পরে কিষেনগঞ্জ হাইস্কুল, বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজিয়েট স্কুলে শিক্ষকতা করেন তিনি। কেশবচন্দ্রের সুখ্যাতি শুনে স্যর আশুতোষ মুখোপাধ্যায় তাঁকে নিয়ে আসেন ভবানীপুরের মিত্র ইনস্টিটিউশনে। দীর্ঘ কর্মজীবন পার করে এই স্কুল থেকেই প্রধান শিক্ষক হিসাবে অবসর নেন তিনি।

মিত্র ইনস্টিটিউশনে কেশবচন্দ্রের সহকর্মী কবিশেখর কালিদাস রায়ের বাড়িতে বসত সাহিত্যিকদের আড্ডা, ‘রসচক্র সাহিত্য সংসদ’। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়, জলধর সেন প্রমুখ দিকপাল সাহিত্যিকদের পাশাপাশি কেশবচন্দ্রও ছিলেন সেখানকার অন্যতম সদস্য। কালিদাস রায়ের অনুপ্রেরণাতেই কেশবচন্দ্রের প্রথম বই নব পাটীগণিত প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে কেশবচন্দ্রের নিজস্ব একটি বাঁধানো খাতা, যাতে বিভিন্ন গাণিতিক সমস্যার সহজ সমাধান করেছিলেন নিজে হাতে, সেটি বই আকারে মুদ্রিত হয় অঙ্কের সহায়িকা ম্যাট্রিক ম্যাথমেটিক্স নামে। এর পরেও প্রকাশিত হয়েছে তাঁর অসংখ্য বই। বাংলা ছাড়াও হিন্দি, উর্দু, নেপালি ভাষায় অনূদিত হয়েছে বইগুলি। হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, বিকাশ রায়, সুভাষ মুখোপাধ্যায়, সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ তাঁরই কৃতী ছাত্র।

স্বামী অভেদানন্দের বহু বক্তৃতা, ভগিনী নিবেদিতার বিভিন্ন লেখা তিনি অনুবাদ করেছিলেন। গাঁধীজির ভারত ছাড়ো আন্দোলনে যোগদান করে কারাবরণও করেছেন। অসামান্য মেধার এই মানুষটিকে শরৎচন্দ্র আখ্যায়িত করেছিলেন ‘গণিত শিল্পী’ হিসেবে। যাঁর পাঠ্যবই না পড়ে স্কুলের গণ্ডি পেরোনো সম্ভব হয়নি, সেই প্রবাদপ্রতিম মানুষটির জন্মদিন রয়ে গেল বাঙালির অগোচরেই।

বাসবদত্তা ভৌমিক

বীরনগর, নদিয়া

প্লাস্টিক দূষণ

আমাদের জীবনে ধাতব জিনিসের ব্যবহার ক্রমশ কমছে। সেই জায়গা দখল করছে প্লাস্টিক। কাপ, প্লেট, গ্লাস, জলের বোতল, মগ সবই তৈরি হচ্ছে প্লাস্টিক দিয়ে। শুধু তা-ই নয়, কৃষিক্ষেত্র, চিকিৎসা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিভিন্ন শাখায় প্লাস্টিক দ্রব্যাদির ব্যবহার বাড়ছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকে বিভিন্ন ধরনের পলিমার আবিষ্কৃত হওয়ায়, তাদের ব্যবহার ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই কৃত্রিম পলিমার নির্মিত বস্তু দেখতে সুন্দর ও দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় দিনে দিনে এর চাহিদাও বাড়ছে।
প্লাস্টিকের বহু সুবিধা থাকলেও সবচেয়ে বড় অসুবিধা হল, এটি প্রকৃতিতে মিশে যায় না। ভারতে জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও অতিরিক্ত প্লাস্টিক-নির্ভরতার কারণে প্রতি বছর প্লাস্টিক বর্জ্যের পরিমাণ ৫৬ লক্ষ মেট্রিক টন ছাড়িয়ে চলেছে। পৃথিবীর মাটি, বাতাস, প্রাণী ও উদ্ভিদ প্লাস্টিক দূষণের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পৃথিবীর তিন ভাগ জল ও তাতে থাকা জলজ প্রাণী-উদ্ভিদ। একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, যে ভাবে দূষণ বাড়ছে, তাতে ২০৫০ সালের মধ্যে সমুদ্রে মাছের থেকে প্লাস্টিকের সংখ্যা বেশি হবে।

প্লাস্টিকের হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য কোনও কঠোর আইন ভারতে নেই। একটাই আইন রয়েছে, ৫০ মাইক্রনের কম প্লাস্টিকের ব্যাগ কেউ উৎপাদন বা ব্যবহার করতে পারবে না। কিন্তু সরকারি নিয়মের তোয়াক্কা না করে সব ধরনের প্লাস্টিকের উৎপাদন চলছে। কলকাতার বহু তল্লাটে দীর্ঘ দিন জল জমে থাকার অন্যতম কারণ হিসেবে উঠে এসেছে প্লাস্টিক দূষণ।
প্লাস্টিক দূষণ বন্ধ করতে সাধারণ মানুষকে পাটজাত দ্রব্যের ব্যবহারে উৎসাহিত করতে হবে। এতে এক দিকে পাট তার হারানো ঐতিহ্য ফিরে পাবে, অন্য দিকে আমাদের পরিবেশও সুরক্ষিত থাকবে।

রবীন রায়

শ্যামনগর, উত্তর ২৪ পরগনা

স্বজনপোষণ

নেপোটিজ়ম বা স্বজনপোষণ। শব্দটি মানুষকে বেশ নাড়িয়ে দিয়েছে। সুশান্ত সিংহ রাজপুত আত্মহত্যা করার পর মানুষ সলমন খান, কর্ণ জোহর-সহ বেশ কয়েক জন বিখ্যাত মানুষের বিরুদ্ধে স্বজনপোষণের অভিযোগ জানিয়েছেন। কিন্তু স্বজনপোষণ রাতারাতি উদয় হয়নি। আজ আমরা বলছি স্বজনপোষণ করা যাবে না। আসল ট্যালেন্টকেই সম্মান জানাতে হবে। কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে সেটা দেখাতে পারছি কী? বাড়িতে যখন নিজের বাচ্চাকে পড়াতে পড়াতে কাজের মাসির বাচ্চাটিকেও পড়াতে বসাই, আর দেখি সেই ছেলেটির পাশে আমার সন্তান কোনও বিষয় পেরে উঠছে না, তখন কত জন সেই মানবিকতা বজায় রাখতে পারি?

মেয়ে পড়াশোনায় ভাল। কিন্তু তাকে পড়িয়ে কী লাভ, যখন বিয়ে দিয়ে দিতে হবে? তার থেকে ছেলেটি বুদ্ধিতে খাটো হলেও তার পিছনে খরচ করা অনেক ভাল বলেই এখনও এই সমাজ মনে করে। মাছের মাথাটি ছেলের পাতে তুলে দিই, বেশি ভাল জামা বা দামি কোনও জিনিস বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পছন্দের জনকেই দিয়ে থাকি। এগুলো কি নেপোটিজ়ম নয়?

ভিড় বাসে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটিকে বসতে না দিয়ে চেনা কোনও যাত্রীকে জামাইআদরে জায়গা ছেড়ে দিতেও আমরা লজ্জা পাই না। ট্রেনে আগে থেকে উঠে রুমাল, তাস দিয়ে জায়গা রাখার প্রচলন এখনও আছে। দাঁড়িয়ে থাকা মানুষদের কী হবে, ভাবার সময় পাই না আমরা। সারা বছর পার্টির যে কর্মী কাজ করে গেল, সে ভোটের আগে টিকিট পেল না। টিকিট পেল সিনেমার অভিনেতা। এটাকেই বা কী বলা যায়? নেপোটিজ়ম তো আমাদের রক্তে।

আনিসুল হক

নজরুল পল্লি, পূর্ব বর্ধমান

চিঠি বিলি বন্ধ

সোদপুর নাটাগড় পোস্টঅফিস (৭০০১১৩) থেকে চিঠি বিলি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ছ’-সাত মাস আগেও এখান থেকে ডাকব্যবস্থা চালু ছিল। হঠাৎ কী কারণে এটা বন্ধ করা হল, জানতে চাইছি।

দেবাশিস বড়ুয়া

কলকাতা-১১০

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement