বিদ্যাসাগর সেতু। ফাইল চিত্র।
বিদ্যাসাগর সেতুর রেলিং-এর উপর জাল বসানো নিয়ে অসুবিধা হওয়ার খবরটি (সেতুতে জাল বসাতে নারাজ কল্যাণ, উল্টে তোপ পুলিশকেই, ১৫-৩) পড়ে যারপরনাই অবাক হলাম। আমি এক জন অবসরপ্রাপ্ত ব্রিজ এবং স্ট্রাকচারাল এঞ্জিনিয়ার। এই খবরটির সূত্রে ১৯৯৩-৯৪ সালে নিউ ইয়র্ক শহরের কয়েকটি ঘটনার কথা মনে পড়ে গেল। সে সময় ঠিক এখানকার মতো কয়েক জন মানুষ ব্রিজের উপর উঠে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন। মেয়রের অফিস থেকে সঙ্গে সঙ্গে ব্রিজের রেলিং-এর উপর জাল বসানোর নির্দেশ আসে। আমি তখন নিউ ইয়র্কের কুইন্স-এর নর্দার্ন বুলেভার্ড ব্রিজের দায়িত্বে ছিলাম। দ্রুত ঠিকাদারকে দিয়ে ব্রিজের রেলিং-এর উপর জাল বসিয়ে দিয়েছিলাম। তাই ভেবেই পাচ্ছি না যে, কী করে এখানকার কর্তৃপক্ষ জাল লাগানোর বিপক্ষে ফরমান দিচ্ছেন! জালের ওজন প্রতি বর্গমিটারে কয়েক কেজির বেশি হবে না। তা ছাড়া, বিদ্যাসাগর সেতু প্রতি দিন ৮৫ হাজার যানবাহন চলাচলের জন্য তৈরি করা হয়েছে। এখন সেখানে তার অর্ধেক গাড়ি চলাচল করে। সুতরাং, অসুবিধা কোথায়?
এ ছাড়া, প্রতিটি ব্রিজ ডিজ়াইন করার সময় যথেষ্ট ‘ফ্যাক্টর অব সেফটি’ ধরা থাকে। সুতরাং, সেতুুর উপর জাল লাগাতে এমনিতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। তবে, কেউ যদি মনে করেন যে কাজটি দৃষ্টিনন্দন হবে না, তা হলে অন্য কথা। মনে প্রশ্ন জাগছে, তা হলে কি নিউ ইয়র্ক শহরে মানুষের প্রাণের দাম আছে, এখানে নেই?
আলোক সরকার, কলকাতা-৭৫
সরুক বাজার
কলকাতার দক্ষিণে হরিদেবপুর থেকে কবরডাঙা পর্যন্ত যেতে মাঝপথে মহাত্মা গান্ধী রোডে কেওড়াপুকুরে রাস্তার দু’পাশে একটা বাজার বসে। কিন্তু সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সেখান দিয়ে যাতায়াত করাটা নিত্যযাত্রীদের পক্ষে দিন দিন বিভীষিকা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ব্যস্ত রাস্তাটির দু’দিকে দোকানের টিন দিয়ে ঘিরে রাস্তাটিকে আরও অপ্রশস্ত করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও সেখান দিয়ে বাস থেকে অটো, সাইকেল, ভ্যান, অসুস্থ রোগীদের নিয়ে অ্যাম্বুল্যান্স— কারও যাতায়াত বাদ থাকে না। বাজারটির কারণে সকালের ব্যস্ত সময়ে এখানে ভয়ানক যানজটের সৃষ্টি হয়। খুব বেশি যানজট হলে মাঝেমধ্যে হরিদেবপুর থানা থেকে পুলিশ এসে পরিস্থিতি সাময়িক ভাবে সামাল দেয় বটে, কিন্তু তাঁরা ফিরে গেলেই আবার যে-কে-সেই অবস্থা হয়। এলাকায় লোকসংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় এই দুর্বিষহ অবস্থার কথা স্থানীয় প্রশাসনকে বার বার জানানো হয়েছে। কিন্তু বহু বছর পর আজও রাস্তাটির অবস্থার কোনও পরিবর্তন হয়নি। প্রশাসনকে অনুরোধ, বাজারটিকে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় স্থানান্তরিত করে রাস্তাটিকে জনসাধারণ এবং যান চলাচলের জন্যে উপযুক্ত ভাবে প্রশস্ত করা হোক।
সুব্রত সেনগুপ্ত, কলকাতা-১০৪
পুনর্নির্মাণ
চাঁপদানি পুরসভা এলাকা জুড়ে কেএমডিএ-র পক্ষ থেকে ২৪ ঘণ্টা পানীয় জল সরবরাহের জন্য রাস্তা খুঁড়ে বিভিন্ন ব্যাসার্ধের পাইপ বসানো হচ্ছে। যার ফলে রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থা। নিয়মানুযায়ী পাইপ বসানোর পর রাস্তা পুনর্নির্মাণের দায়িত্ব কেএমডিএ-র। কিন্তু অত্যন্ত বিলম্বিত ও নিম্ন মানের পুনর্নির্মাণ হচ্ছে। চাঁপদানি পুরসভার পুরপ্রধান সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে এ ব্যাপারে সতর্ক করার পরও কাজ ত্বরান্বিত হচ্ছে না। কেএমডিএ কর্তৃপক্ষের কাছে পুরবাসীর অনুরোধ, রাস্তার পুনর্নির্মাণ যথাযথ ভাবে দ্রুত সম্পন্ন করা হোক।
সিদ্ধার্থ দত্তচৌধুরী, ভদ্রেশ্বর, হুগলি
সময় নষ্ট
কিছু দিন আগে ব্যাঙ্ক থেকে একটা এসএমএস পাই— “কাইন্ডলি রেফার টু আওয়ার আর্লিয়ার মেসেজ, ইউ আর ওয়ান্স এগেন রিকোয়েস্টেড টু রেজিস্টার নমিনেশন থ্রু আইবিএস/ পিএনবি–ওয়ান/ বেস ব্রাঞ্চ বাই ২৫.০৩.২০২৩; পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক।” অগত্যা দৌড়তে হল ব্যাঙ্কে। আগেই শুনছিলাম লম্বা লাইন পড়ছে এই জন্য। সকাল সকাল গিয়ে লাইন দিয়ে আগে ফর্ম তুলে ফিল-আপ করে এ বারে জমা দেওয়ার লম্বা লাইনে দাঁড়াতে হল। একে ভিড়, তাতে ব্যাঙ্ককর্মীরাও ভীষণ ব্যস্ত। ঘণ্টাখানেক পরে এক জন জানালেন, যাঁদের পাসবুক-এ নমিনেশন রেজিস্টার্ড কথাটা লেখা আছে, তাঁদের ফর্ম জমা করতে হবে না। পাসবুক খুলে দেখলাম আমার লেখা আছে। সুতরাং, বৃথা সময় নষ্ট। ব্যাঙ্কের ফর্মও নষ্ট। অথচ, এসএমএস-এর সঙ্গে ‘প্লিজ় ইগনোর ইফ অলরেডি ডান’ লেখা থাকলে বা ব্যাঙ্কে ঢোকার মুখে বাংলায় ‘যাঁদের নমিনেশন রেজিস্টার্ড আছে, তাঁদের নতুন করে ফর্ম জমা দেওয়ার দরকার নেই’ কথাটি লেখা থাকলে, অযথা এত মানুষের সময় নষ্ট বা ব্যাঙ্কের ফর্ম নষ্ট হত না।
সুকুমার মুখোপাধ্যায়, কলকাতা-১৪৯
নির্দেশিকা জরুরি
১৫ নম্বর রেলগেটের পরিবর্তে নির্মিত ব্যারাকপুর রেল ওভারব্রিজ বারাসত-ব্যারাকপুর রোডের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি একটি বিচিত্র ধরনের ব্রিজ, যার ব্যারাকপুরের দিকে বড় গাড়ির যাতায়াতের জন্য কোনও সোজাসুজি রাস্তা নেই। ফলে ব্যারাকপুর থেকে বারাসতের দিকে যেতে হলে ব্রিজের পাশের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার পর ইউ টার্ন নিয়ে উল্টো দিকের রাস্তাকে পেরিয়ে ব্রিজে উঠতে হয়! বারাসতের দিক থেকে ব্যারাকপুরে আসার সময় ব্রিজ থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে অনেকখানি ঘুরে বারাসত যাওয়ার রাস্তাকে ক্রস করে ব্রিজের পাশের রাস্তা দিয়ে কিছু দূর যাওয়ার পর ব্রিজের নীচ দিয়ে গিয়ে ঘোষপাড়া রোড হয়ে ব্যারাকপুর স্টেশনের দিকে যেতে হয়। এ এক অদ্ভুত পরিকল্পনা! বারাসতের দিক থেকে আসার সময় ব্রিজ থেকে নামার পর সামনের রাস্তা দু’চাকা ও ছোট গাড়ি ছাড়া অন্য সকল বড় যানবাহনের জন্য যে বন্ধ, এই মর্মে কোনও রকম নির্দেশিকা ব্রিজে ওঠার আগে, ব্রিজের কোনও অংশে বা সামনের রাস্তার প্রবেশমুখে দেওয়া নেই। ফলস্বরূপ হামেশাই দেখা যায়— ট্রাক-জাতীয় বড় গাড়ি সামনের রাস্তায় প্রবেশের পর উচ্চতা নিরোধক বারের সামনে দাড়িয়ে গিয়েছে। অপরিসর এই রাস্তায় গাড়ি ঘোরানো সম্ভব না হওয়ায় ওই বড় গাড়িকে ফিরতে হয় ব্যাক গিয়ার দিয়ে। তাতে শুরু হয় যানজট। এতে অনেক সময় ছোটখাটো দুর্ঘটনাও ঘটে। বারাসতের দিকে ব্রিজের শুরুতে ও ব্যারাকপুরের দিকে ব্রিজ থেকে নামার আগে লিখিত নির্দেশিকা দরকার। দুর্ঘটনা রুখতে দিনের ব্যস্ত সময়গুলিতে ব্যারাকপুরের দিকে ব্রিজের প্রবেশ মুখে যানবাহন নিয়ন্ত্রণের জন্য ট্র্যাফিক পুলিশ বা সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগেরও প্রয়োজন।
তপনকুমার সরকার, ব্যারাকপুর, উত্তর ২৪ পরগনা
ঐতিহাসিক
উলুবেড়িয়ার এসডিও অফিসের সামনে অবহেলায় পড়ে আছে রানি ভিক্টোরিয়ার আমলের একটি সার্টি লেটার বক্স বা ক্রাউন টপ লেটার বক্স। ১৮৫৪ সালে ইন্ডিয়া পোস্ট অফিস অ্যাক্ট চালু হওয়ার পর, ১৮৫৭ সালে রানি ভিক্টোরিয়া ভারতের শাসনভার গ্রহণ করলে, এই ধরনের লেটার বক্স ভারতের বিভিন্ন স্থানের সঙ্গে দ্রুত ডাক যোগাযোগের জন্য স্থাপন করে। উক্ত লেটার বক্সটি সার্টি অ্যান্ড কোম্পানি নামক এক সংস্থা ১৮৫৬-৫৭ সালে স্কটল্যান্ডে তৈরি করে। বর্তমানে এটি ব্যবহারযোগ্য হওয়া সত্ত্বেও অবহেলায় পড়ে রয়েছে। লেটার বক্সটিকে সঠিক ভাবে সংরক্ষণ করা ও সুরক্ষিত রাখার প্রয়োজন রয়েছে।
অরিজিৎ আচার্য, উলুবেড়িয়া, হাওড়া