No Parking

সম্পাদক সমীপেষু: অন্যায় আয়ের পথ

এমনিতেও শহরে অনেক বাজার সংলগ্ন এলাকায় বা এলাকার কাছাকাছি পার্কিংয়ের কোনও ব্যবস্থা নেই। যেমন, যাদবপুর। অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পথে কিছু কিনতে হলে গাড়ি রাখতে অসুবিধা হয়।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২৩ ০৪:১৭
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

‘ক্যাব-ট্যাক্সি বন্ধ রেখে লালবাজার অভিযান আজ, আশঙ্কা দুর্ভোগের’ (৬-১১) খবরটি পড়ে একটি অভিজ্ঞতার কথা না বলে পারছি না। ট্যাক্সি এবং অ্যাপ-ক্যাব সংগঠনগুলির অভিযোগ, যান শাসনের নামে এ ভাবে মামলা দায়ের করে জরিমানা আদায়ের মাধ্যমে সরকারের আয় বৃদ্ধিই এখন পুলিশের মুখ্য উদ্দেশ্য হয়ে পড়েছে। এ উপলব্ধি আমারও।

Advertisement

নবমীর রাত একটার পর নিজের গাড়ি নিয়ে প্রতিমা দর্শনে বেরিয়েছিলাম সন্তোষপুর থেকে। সঙ্গে এক জন বৃদ্ধাও ছিলেন। মণ্ডপ ও রাস্তা যাতে ফাঁকা পাওয়া যায়, তাই আমরা ওই সময়ে গিয়েছিলাম। রুবি মোড় হয়ে বোসপুকুর শীতলা মন্দির মণ্ডপের সামনে গাড়ি থামাই সঙ্গীদের নামানোর জন্য। তাঁরা নেমে যাওয়ার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই এক বাইক আরোহী পুলিশ এসে আমার গাড়ির নম্বর প্লেটের ছবি তোলেন। সঙ্গে উপস্থিত আমার আত্মীয় সংশ্লিষ্ট পুলিশ আধিকারিককে অনুরোধ করেন কেস না দিতে। গাড়িটি চালু অবস্থায় ছিল, ওখানে পার্কিং করার প্রশ্নই ছিল না। তা ছাড়া, রাস্তা প্রায় ফাঁকাই ছিল। এক সপ্তাহ পরে মেসেজ পাই ২৩-১০’এর রাত্রি ১:৫৮-তে আমার গাড়িকে কেস দেওয়া হয়েছে। ৫০০ টাকা সাত দিনের মধ্যে অর্থাৎ ৩০-১০’এর মধ্যে জমা দিতে হবে।

ওই দিন রাস্তায় কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের কাছে যত বারই পার্কিং এরিয়া কোথায় জানতে চেয়েছি, তাঁদের সবারই একই কথা ছিল— ‘সামনে এগিয়ে যান।’ যত সামনেই এগোই না কেন, পার্কিং এরিয়ার সন্ধান কেউ দিতে পারেননি। পরিচিত এলাকা হলে অসুবিধা হয় না। কিন্তু কম পরিচিত এলাকায় পুজোর রাতে অসুবিধা হয়। পুলিশের বলে দেওয়া উচিত ছিল, পুজোর সময় গাড়ি নিয়ে বেরোবেন না। পার্কিং লটের সন্ধান দিতে পারব না। আমার অভিজ্ঞতায় বুঝলাম, গাড়ি করে প্রতিমা দর্শন করতে যাওয়া অপরাধ। কিন্তু বয়স্কদের কী ভাবে ঠাকুর দেখতে নিয়ে যাব তা হলে? প্রধান রাস্তা ছেড়ে অপ্রধান রাস্তায় কিছু পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা উচিত ছিল।

Advertisement

এমনিতেও শহরে অনেক বাজার সংলগ্ন এলাকায় বা এলাকার কাছাকাছি পার্কিংয়ের কোনও ব্যবস্থা নেই। যেমন, যাদবপুর। অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পথে কিছু কিনতে হলে গাড়ি রাখতে অসুবিধা হয়। অনেকেই এইট বি এবং সুলেখা মোড়ের মাঝে রাস্তার ধারে গাড়ি রেখে বাজারে যান। কিন্তু তার জন্য আমার পরিচিত অনেকেই জরিমানা দিতে বাধ্য হয়েছেন। সরকার কী চাইছে— আমরা, গাড়ি ব্যবহারকারীরা যেন তেন প্রকারেণ জরিমানা দিয়ে যাই সরকারের আয় বাড়াতে? সর্বত্র পর্যাপ্ত পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা সম্ভব নয় জানি। কিন্তু আধুনিক নগরে এ বিষয়ে সরকারের কোনও উপযুক্ত পরিকল্পনা থাকবে না কেন?

অলক চক্রবর্তী, কলকাতা-৭৫

ডাকের গাফিলতি

প্রায় ৪৩ বছর ধরে আমরা একটি লিটল ম্যাগাজ়িন প্রকাশ করছি। এ রাজ্যের নানা স্থানে আমাদের কিছু গ্রাহক আছেন, যাঁদের সরকারি ডাক বিভাগের মাধ্যমে পত্রিকা পাঠানো হয়। বছর দশেক আগেও অধিকাংশ গ্রাহককে সাধারণ ডাকে পত্রিকা পাঠানো হত। সেগুলি তাঁরা পেতেন। বেশ ক’বছর ধরে সাধারণ ডাকে অনেকেই পত্রিকা পান না। তাই ইদানীং স্পিড পোস্ট অথবা রেজিস্টার্ড পার্সেলে পত্রিকা পাঠাতে হচ্ছে। গত ১৬ অক্টোবর বিধাননগর সিসি ব্লক সাব-পোস্ট অফিস থেকে রেজিস্টার্ড পার্সেলে পত্রিকা পাঠানো হয়। দিন দশেক পরে প্রাপক পত্রিকা না পেয়ে জানান। আমি রসিদ নম্বর দিয়ে ডাক বিভাগের ওয়েবসাইটে দেখি, পত্রিকা ২০ অক্টোবর পুরুলিয়ার দুলমি-নাদিহা সাব-পোস্ট অফিসে পৌঁছে গিয়েছে। এর পর পোস্ট অফিস থেকে বেশ ক’বার প্রাপকের ঠিকানায় গিয়ে তাঁকে না পেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মী পত্রিকা ফেরত নিয়ে চলে আসেন। ডাক বিভাগের ওয়েবসাইটে কবে কখন ডাককর্মী প্রাপককে পাননি, সে সব লেখা রয়েছে। প্রাপককে ঘটনাটি জানাতে তিনি জানান, ডাক বিভাগের ওয়েবসাইটের তথ্যগুলি অসত্য। তিনি দুলমি-নাদিহা সাব-পোস্ট অফিসে গিয়ে পোস্ট মাস্টারকে ঘটনাটি বলেন। কিছু ক্ষণ অপেক্ষা করে সংশ্লিষ্ট ডাককর্মীর দেখা পান এবং তাঁর অসত্য উক্তির তীব্র প্রতিবাদ করেন। বাদানুবাদের পর ডাককর্মী পত্রিকাটি প্রাপকের হাতে তুলে দেন। পত্রিকা প্রাপ্তির কথা পরে ও‌ই ব্যক্তি আমাকে জানান।

সরকারি চাকুরে ডাককর্মীরা সাধারণ ডাককে একেবারেই গুরুত্ব দেন না— এ রকম অজস্র উদাহরণ দেওয়া যায়। কোনও অভিযোগ জানালে তাতে কাজও হয় না। সরকারি ডাক পরিষেবা ব্যবহারকারী প্রধানত সাধারণ মানুষ। বেসরকারি কুরিয়ারে খরচ বহন করা সবার পক্ষে সম্ভব হয় না। তাই সরকারি ডাক ব্যবস্থার এই শোচনীয় অবনতির শিকার হতে হয় সাধারণ মানুষকে। জানি না এ ভাবেই হয়তো এক দিন সরকারের সব কিছু ব্যক্তি মালিকানায় ঠেলে দেওয়ার ইচ্ছেকে সফল হতে দিয়ে ডাককর্মীরা নিজেদের পায়ে কুড়ুল মারবেন।

বরুণ ভট্টাচার্য, কলকাতা-৩৯

যন্ত্রণার ট্রেনযাত্রা

গত ৩১ অক্টোবর ভোর ৫.৪৫-এ হাওড়া থেকে মুম্বই যাওয়ার ট্রেনটি ছাড়ার সময় নির্ধারিত ছিল। আগের দিন রাতে অশীতিপর বৃদ্ধা মাকে নিয়ে স্টেশনে না থেকে ভোর ৪.১৫-এ বাসস্থান থেকে হাওড়া স্টেশনের ক্যাব বুক করি স্লট নির্ণয় করে। হঠাৎই ৩০ অক্টোবরের রাত ১০.৩০-এ একটি এসএমএস আসে আইআরসিটিসি থেকে যে, ট্রেনটি ভোর ৫.৪৫-এর বদলে সকাল ১১.১৫-য় ছাড়বে। ফলে ক্যাবের অগ্রিম বুকিং বাতিল করতে হয়। নির্ধারিত সময়ে ছেড়ে টাটানগর পর্যন্ত ট্রেনটির যাত্রা মোটামুটি ঠিকঠাকই ছিল। এর পরে বিলম্বিত হতে থাকে ট্রেনের সফর। ভুসওয়াল পৌঁছয় প্রায় বারো ঘণ্টা দেরিতে। এর পর যাত্রীরা সবাই যখন মুখিয়ে আছি মুম্বই আসছে বলে, তখন হঠাৎই জানানো হয় যে, ট্রেনটি দাদার স্টেশনে যাত্রা শেষ করবে। রাত তখন সাড়ে আটটা। মানসিক ও শারীরিক ভাবে ক্লান্ত-বিধ্বস্ত এই যাত্রীদের নিয়ে এ ভাবে ছেলেখেলা রেল কর্তৃপক্ষ কেন করল?

পার্থ দত্ত, কলকাতা-১০২

দামি ওষুধ

প্রতিটি ওষুধের দাম দু’-তিন মাস অন্তর লাফ দিয়ে বাড়ছে। ওষুধ মানুষকে কিনতেই হয়, ঘটিবাটি বিক্রি করেও। মাঝে মাঝে সংবাদপত্রে দেখি ওষুধের দাম নাকি কমছে, সরকার নাকি দাম বেঁধে দিয়েছে। কিন্তু বাস্তবে তার কোনও প্রতিফলন দেখা যায় না। ওষুধের বহুজাতিক কোম্পানিগুলো ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছে। এর থেকে কি কোনও পরিত্রাণ নেই?

অরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা-৮৪

জল অমিল

বনগাঁ অধর মেমোরিয়াল মহকুমা হাসপাতাল জেলার প্রান্তিক মানুষের কাছে একটি নির্ভরশীল স্বাস্থ্য পরিষেবা কেন্দ্র। প্রতি দিন বহু মানুষকে চিকিৎসার জন্য এখানে আসতে হয়। চিকিৎসা পরিষেবা ঠিকঠাক থাকলেও কয়েকটি বিষয়ে পরিষেবায় যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। যেমন, প্রয়োজন রয়েছে আরও বেশি বেডের। তা ছাড়া, পরিস্রুত পানীয় জলের সুলভ ব্যবস্থা না থাকায় রোগীর পরিজনদের জলের জন্য খুবই সমস্যায় পড়তে হয়। একটা ভগ্নপ্রায় পানীয় জলের কল থাকলেও তাতে পরিস্রুত জল পাওয়া যায় না। বাধ্য হয়ে চড়া দামে বোতল বোতল জল কিনে খেতে হয়। এখানে কয়েক জন ব্যবসায়ী অনেক বেশি দামে জল বিক্রি করে থাকেন, অথচ প্রশাসন নির্বিকার। বর্তমানে সরকার বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে যে সব স্বল্প মূল্যের বিনিময়ে পরিস্রুত পানীয় জলের প্রকল্প চালু করেছে, তা এখানে করা খুব দরকার। এই বিষয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

ভবানী শঙ্কর রায়, ঝাউডাঙা, উত্তর ২৪ পরগনা

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement