রাস্তাঘাটে দুর্ঘটনা ঘটার জন্য পথচারীরা কারও থেকে কম দায়ী নন। —ফাইল চিত্র।
সম্প্রতি বেহালা চৌরাস্তার কাছে মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পর কলকাতা পুলিশের ট্র্যাফিক কন্ট্রোল ব্যবস্থা সম্বন্ধে নানা প্রশ্ন উঠছে। এমনকি অভিযোগ উঠছে পুলিশ-প্রশাসনের বিরুদ্ধেও। প্রায় ৩১ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিভিন্ন গাড়ি চালানোর অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি যে, রাস্তাঘাটে দুর্ঘটনা ঘটার জন্য পথচারীরা কারও থেকে কম দায়ী নন। হাত তুলে চলন্ত গাড়িকে থামতে বলে রাস্তা পারাপার করা, জ়েব্রা ক্রসিং ব্যবহার না করার অভ্যাস আমাদের যেন অস্থিমজ্জায় ঢুকে গিয়েছে। ওই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পরেও যে আমাদের হুঁশ হয়নি, সেটার প্রমাণ বিভিন্ন দৈনিক সংবাদপত্রে প্রকাশিত পথচারীদের রাস্তা পারাপার করার ছবি।
গত কয়েক বছরে কলকাতা এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয়ের সংখ্যা যেমন বেড়েছে, তেমনই বেড়েছে ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিতে কর্মরত শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীদের সংখ্যাও। কিন্তু সেই তুলনায় রাস্তার সংখ্যা বৃদ্ধি বা পুরনো রাস্তা প্রসারিত হয়নি। এর উপর আছে শহরের মধ্যে বেশ গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি এলাকা, যেমন যাদবপুর, গড়িয়াহাট, বিধান সরণি ইত্যাদি, যেখানে হকারদের দ্বারা ফুটপাত দখল করার ফলে লোকজনকে যাতায়াতের জন্য প্রায়শই রাস্তা ব্যবহার করতে হয়।
উপরন্তু, গত দশ-পনেরো বছরে লোকসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন রকম যানবাহনের, বিশেষত ব্যক্তিগত গাড়ি বা দু’চাকার সংখ্যা শহর এলাকায় এতটাই বেড়েছে যে, ছোট-বড় প্রায় প্রতিটি মোড়েই ট্র্যাফিক পুলিশের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হচ্ছে। কিন্তু এই বিশাল সংখ্যক পুলিশের খরচ বহন করার ক্ষমতা কি আদৌ আমাদের সরকারের আছে? আমার মতে, সবার আগে প্রয়োজন আমাদের নিজেদের বদলানো। প্রবল অসহিষ্ণুতা, ট্র্যাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা, যন্ত্রকে যন্ত্র বলে না মানা ইত্যাদি কু-অভ্যাসগুলি পরিত্যাগ করতে পারলেই রাস্তাঘাটে দুর্ঘটনার সংখ্যা অনেক কমে যাবে। আর পরিশেষে বলি, দুর্ঘটনা তো শুধু বড় বড় চৌরাস্তার মোড়েই হয় না বা যেখানে সিগন্যাল আছে, সেখানেই হয় না। তাই অন্যকে দোষী সাব্যস্ত করার আগে নিজেদের অবস্থান নিয়েও ভাবার প্রয়োজন আছে।
অমিত কুমার চৌধুরী, কলকাতা-৭৫
পতাকার মর্যাদা
সম্প্রতি সাড়ম্বরে পালিত হল ভারতের স্বাধীনতা দিবস! সমগ্র দেশবাসী জাতীয়তাবোধের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে এবং বীর বিপ্লবীদের কঠোর আত্মত্যাগ ও দেশমাতৃকার প্রতি তাঁদের নিঃস্বার্থ ভালবাসাকে সম্মান জানিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন-সহ নানাবিধ দেশাত্মবোধক কর্মযজ্ঞে শামিল হয়েছিলেন! কিন্তু, প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও একটা দৃষ্টিকটু প্রবণতার পুনরাবৃত্তি রোধ করা গেল না— স্বাধীনতা দিবস পালন করার পরে যত্রতত্র জাতীয় পতাকা পড়ে থাকার চিরাচরিত রেওয়াজ, যা দেশের পতাকাকে অবমাননার এক জঘন্য নিদর্শন! কেন্দ্রীয় সরকারের ‘হর ঘর তিরঙ্গা’ কর্মসূচি জাতীয় পতাকা ক্রয় করার ক্ষেত্রে জনমানসে আগ্রহ বৃদ্ধি করলেও, স্বাধীনতা দিবস-উত্তর পর্বে যত্রতত্র অবহেলিত ভাবে জাতীয় পতাকা ফেলে রাখার রেওয়াজে পরিবর্তন আনতে পারেনি! ভারতবাসী হিসাবে দেশের পতাকার যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ এবং তার মর্যাদা রক্ষার দায়টা কিন্তু আমাদের উপরেই বর্তায়। এ বিষয়ে জনসাধারণের আরও সচেতন হওয়া উচিত। রাস্তাঘাটে কোথাও ভারতের পতাকা পড়ে থাকলে, সেগুলো সংগ্রহ করে নিজেদের কাছেই রাখতে হবে। অন্তত, দেশমাতৃকার সম্মান রক্ষার্থে এই কর্তব্যটুকু পালন করা আমাদের উচিত নয় কি?
সৈকত কর্মকার, গোবরডাঙা, উত্তর ২৪ পরগনা
জলমগ্ন
কিছু দিন আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ‘অমৃত ভারত স্টেশন’ প্রকল্পের শিলান্যাস করেছেন ভার্চুয়াল মাধ্যমে। রেলের সূত্র অনুযায়ী, বিভিন্ন রাজ্যের ৫০৮টি স্টেশনের আধুনিকীকরণের কাজ শুরু হবে, যার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে মোট ৩৭টি স্টেশন রয়েছে। কিন্তু পূর্ব রেলের হাওড়া মেন লাইনে বেলুড় থেকে শুরু করে প্রায় সব ক’টি স্টেশনের আন্ডারপাস অত্যন্ত অপরিসর, অধিকাংশ সময় জলমগ্ন থাকে। এর ফলে সেখানে প্রবল যানজট হয়। রেলযাত্রী তো বটেও, অন্যদেরও নাকাল হতে হয়। এমন দুর্বিষহ অবস্থা নিয়ে এর আগেও বহু বার রেল কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে চিঠিপত্র দেওয়া হয়েছে, কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি। পূর্ব-রেল কর্তৃপক্ষের কাছে পুনরায় আবেদন করছি, প্রতিটি রেল স্টেশনে একাধিক আন্ডারপাস তৈরি এবং তার সম্প্রসারণ করা হোক।
সিদ্ধার্থ দত্তচৌধুরী, ভদ্রেশ্বর, হুগলি
ভাঙা পথ
বেহালা শখেরবাজারের সঙ্গে টালিগঞ্জ-করুণাময়ী সংযোগকারী গুরুত্বপূর্ণ মতিলাল গুপ্ত রোডে গত তিন মাস যাবৎ ভূগর্ভস্থ জলের পাইপলাইন বসানোর কাজের জন্য গাড়ি চলাচলের পথ সঙ্কীর্ণ হয়েছে। রাস্তা দ্বিমুখী হওয়ার ফলে এখানে ভীষণ যানজটের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। সঙ্গে অটোর দৌরাত্ম্য তো আছেই। যান নিয়ন্ত্রণে পুলিশের কোনও সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে না। দীর্ঘ দিন ধরে এই পাইপলাইনের কাজ চলার ফলে পথটিও ভেঙে গিয়ে বীভৎস রূপ ধারণ করেছে। বর্ষায় পথের গর্তে জল জমে পরিস্থিতি দুর্বিষহ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি চৌরাস্তার মোড়ে ঘটে যাওয়া ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন এখানেও না হয়, সেই কারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করি।
অগ্নিভ চক্রবর্তী, কলকাতা-২৯
নতুন বাস
হাওড়া জেলার গড়চুমুক ও গাদিয়াড়া জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। অনেক মানুষ এখানে বেড়াতে আসেন। এ ছাড়াও উলুবেড়িয়া থেকে গাদিয়াড়ার মধ্যে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অফিস, বিডিও অফিস, এসআই অফিস-সহ অনেক প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ট্রেনিং কলেজ প্রভৃতি অবস্থিত। এই সব অফিসের স্টাফ, শিক্ষক-শিক্ষিকা, ছাত্রছাত্রীদের বাসে করেই এই পথে যাতায়াত করতে হয়। কিন্তু সরকারি বাস কয়েকটা চললেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। সিটিসি-র কাছে আবেদন, সকালে স্কুল ও অফিস টাইমে গাদিয়াড়ার দিকে এবং বিকালে সাড়ে চারটের পর কলকাতার দিকে ১৫-২০ মিনিট অন্তর বাস চালালে সকলেই উপকৃত হবেন।
পুলক কাঞ্জি, সাঁকরাইল, হাওড়া
পাটের বিপদ
মাঠে পাট উঠলে সেই পাট কাচার পর বাঁশের ভারায় জল ঝরিয়ে সেটাকে রাস্তায় মেলে শুকনো করা হয়। কিন্তু এর ফলে পাট মোটরসাইকেল ও সাইকেলের চাকায় জড়িয়ে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটে। রাস্তায় বড় বড় পাটের দড়ি দিয়ে গরু বেঁধে রাখা হয়, তাই যানবাহন এলে গরু ভয়ে লাফাতে থাকে, গরুর দড়িতে গাড়ির চাকা আটকে গিয়ে অনেক দুর্ঘটনা ঘটে। অবিলম্বে রাস্তায় বড় দড়ি দিয়ে গরু বাঁধা এবং পাট শুকনো করা নিষিদ্ধ হোক।
মঞ্জুশ্রী মণ্ডল, তারকেশ্বর, হুগলি