Tokyo Olympics

সম্পাদক সমীপেষু: পদকের আশা

‘ফ্রেন্ডলি ম্যাচ’ আন্তর্জাতিক ফুটবলের ক্ষেত্রে ক্রিকেটের টেস্ট ম্যাচের সমার্থক। এই ম্যাচের ফলাফলের ভিত্তিতে ফিফা সংশ্লিষ্ট দু’টি দলকে মূল্যবান র‌্যাঙ্কিং পয়েন্ট দিয়ে থাকে।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২১ ০৪:২৯
Share:

‘টোকিয়োয় নেই কোনও বঙ্গ শুটার’ (৫-৪) পড়ে মনে হল, ভারতীয় শুটাররা কি নিজেদের মেলে ধরবেন টোকিয়ো অলিম্পিক্সে? ২০১৯ সালে দেখা গিয়েছিল, নবীনে-প্রবীণে ভরা ভারতীয় শুটাররা বিশ্ব শুটিংয়ের মান অনুযায়ী রয়েছেন একেবারে প্রথম দিকে। এর প্রমাণ তাঁরা দিয়েছিলেন ওই বছর বিভিন্ন দেশে আয়োজিত পাঁচটি আইএসএসএফ শুটিং বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতায় মোট সোনার পদক জয়ের মাপকাঠিতে চিন, আমেরিকা, রাশিয়া, ইটালি, হাঙ্গেরি, ক্রোয়েশিয়ার মতো বিশ্ব শুটিংয়ে বাঘা বাঘা প্রথম সারির দেশকে অনেক পিছনে ফেলে। মোট ৩০টি পদক জয় করে (২১টি সোনা, ৬টি রুপো ও ৩টি ব্রোঞ্জ) ভারত প্রথম হয় দ্বিতীয় স্থানাধিকারী চিনের থেকে (১১টি সোনা) ১০টি সোনা বেশি পেয়ে। মাঝে এক বছরের উপর করোনার দাপটে অন্য খেলাগুলির সঙ্গে শুটিংও বন্ধ ছিল। তা সত্ত্বেও টোকিয়ো অলিম্পিক্সগামী ভারতীয় শুটারদের খেলার মানে যে মরচে পড়েনি, তা প্রত্যক্ষ করা গেল এ বছরে নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত আইএসএসএফ শুটিং বিশ্বকাপের প্রথম প্রতিযোগিতাটি (২০-২৮ মার্চ) থেকেই। সেখানে অধিকাংশ ভারতীয় শুটার আবার দেখালেন তাঁদের বিশ্ব মানের ক্রীড়াদক্ষতা। ভারত জয় করল ১৫টি সোনা, ৯টি রুপো ও ৬টি ব্রোঞ্জ পদক।

Advertisement

অংশগ্রহণকারী ৫৩টি দেশের মধ্যে সেরা দেশ বলে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করল ভারত। নয়াদিল্লির বেশ কিছু ইভেন্টে ভারতীয় শুটাররা সোনা-রুপো পেলেও সেগুলি টোকিয়ো অলিম্পিক্সভুক্ত হয়তো নয়। তবুও একাধিক শুটারদের দুরন্ত বিশ্ব মান বিচার করলে আশা করা যেতেই পারে যে, টোকিয়ো অলিম্পিক্সে অংশগ্রহণকারী ১৫ জন শুটারের যে কেউ এ বার একাধিক সোনা জয় করে এক নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করতে পারেন। বঙ্গের কোনও শুটার না থাকলেও টোকিয়ো অলিম্পিক্সে ভারতের অন্য শুটাররা সাফল্য লাভ করলে ভারতীয় হিসেবে আমাদের গর্বের ভাঁড়ার পূর্ণ হবে।

তাপস সাহা, শেওড়াফুলি, হুগলি

Advertisement

লজ্জার পরাজয়

সম্প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরশাহির বিরুদ্ধে ০-৬ গোলের বিরাট ব্যবধানে পরাজয়ের পর, ভারতীয় ফুটবল দলের কোচ ইগর স্তিমাচ আনন্দবাজার পত্রিকা-য় একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন (‘হার থেকে শিক্ষা নাও, মনবীরদের পরামর্শ ইগরের’, ২-৪)। এই লজ্জাজনক হারের সপক্ষে যে যুক্তির জাল বিস্তার করেছেন তিনি, তা পড়ে বেশ অবাক হতে হল। কোচের বক্তব্য, যে হেতু এটি ছিল একটি ফ্রেন্ডলি ম্যাচ, সে হেতু এই ফল নিয়ে বিশেষ হা-হুতাশ করে লাভ নেই। এই ধরনের ম্যাচগুলিই নাকি বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দলগত শক্তি এবং নবাগত ফুটবলারদের ব্যক্তিগত নৈপুণ্য যাচাই করে নেওয়ার আদর্শ মঞ্চ বলে গণ্য হয়ে থাকে। বিদেশি কোচের কথাগুলির মধ্যে কোনও সারবত্তা নেই, এমন কথা মোটেই বলা যায় না। কিন্তু এ ক্ষেত্রে কিছু প্রশ্ন তোলা সমীচীন।

প্রথমত, ‘ফ্রেন্ডলি ম্যাচ’ আন্তর্জাতিক ফুটবলের ক্ষেত্রে ক্রিকেটের টেস্ট ম্যাচের সমার্থক। এই ম্যাচের ফলাফলের ভিত্তিতে ফিফা সংশ্লিষ্ট দু’টি দলকে মূল্যবান র‌্যাঙ্কিং পয়েন্ট দিয়ে থাকে। দ্বিতীয়ত, এই তথাকথিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা আর কত দিন চালিয়ে যেতে চান ইগর? দেখা যাচ্ছে, ভারতের জাতীয় কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে, গত ২১ মাসে ১২টি ম্যাচে শুধুমাত্র প্রথম একাদশেই মোট ৩৮ জন ফুটবলারকে ব্যবহার করেছেন কোচ, যার মধ্যে এক ডজনেরও বেশি হলেন ডিফেন্ডার। অথচ, এই ক্রমাগত পরীক্ষার ফল মোটেই সুবিধাজনক নয়। ইগরের আমলে ভারত জিতেছে একটিমাত্র ম্যাচ, তাও ২১ মাস আগে, তাইল্যান্ডের বিরুদ্ধে।

আশঙ্কা হচ্ছে, ভারতের জাতীয় কোচ হিসেবে প্রায় দু’বছর কাটিয়ে দিলেও ইগর একটি স্থায়ী প্রথম একাদশ তৈরি করার ব্যাপারে মনস্থির করে উঠতে পারেননি। তাই পরীক্ষার নাম করে একগাদা ফুটবলারকে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে সুযোগ দিয়ে যাচ্ছেন। সবচেয়ে আপত্তিকর হল, আধ ডজন গোলে হেরে যাওয়াটা ‘তেমন কিছু নয়’ মানসিকতা দিয়ে উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা। কোচের স্মরণ থাকা উচিত, তাঁর হাতে এই মুহূর্তে যে দলটি রয়েছে, সেটি দেশের জাতীয় দল। সেটি খারাপ ফল করলে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে সামগ্রিক ভাবে দেশের ফুটবলের উপর। এমনিতেই এই মুহূর্তে ভারতীয় ফুটবলের আইএসএল নামক একটি সাদা হাতি ছাড়া বলার মতো বিশেষ কিছু নেই। ঘরোয়া ফুটবলে বিদেশিদের ভিড়ে যাঁদের মহানায়ক বলে মনে হয়, আন্তর্জাতিক আসরে দেখা যায় তাঁদের বেশির ভাগেরই পার্শ্বচরিত্রে অভিনয়ের ক্ষমতাও নেই। গত ২০১৯ এশিয়ান কাপে মোটামুটি ভাল খেলে আশা জাগিয়েছিল ভারতের জাতীয় দল। কিন্তু গত দু’বছরে বেশ খানিকটা মুখ থুবড়ে পড়েছে সেই অগ্রগতি।

সামনেই বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বের তিন-তিনটি ম্যাচ, যার ফলাফলের উপর অনেকটাই নির্ভর করছে ২০২৩ সালে এশিয়ান কাপের যোগ্যতা অর্জন। ঠিক তার আগেই এই বিশ্রী পরাজয় কি কোনও ভাবে সুনীল ছেত্রীদের মনোবল বাড়াতে সাহায্য করবে? অতিমারি আর পরীক্ষা-নিরীক্ষার দোহাই দিয়ে আর কত দিন চলবে জাতীয় দল নিয়ে এই ছিনিমিনি খেলা? ইগরের উপর আর কত দিন ভরসা রাখবেন দেশের ফুটবলপ্রেমী মানুষ? সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের কর্তারা অন্য সময়ে নিয়মিত সমাজমাধ্যমে নানা আশাব্যঞ্জক কথা শুনিয়ে থাকেন। এই ৬-০ পরাজয়ের পর তাঁরাই বা মুখে কুলুপ এঁটেছেন কেন?

দ্যুতিমান বসু, রামকৃষ্ণ বিহার, দিল্লি

সিন্ধুর হার

অলিম্পিক্সের দোরগোড়ায় ভারতীয় শাটলাররা কি ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছেন? দেশের এক নম্বর শাটলার তথা রিয়ো অলিম্পিক্সের রুপোজয়ী পি ভি সিন্ধু ২০১৯ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জয়ের পর লাগাতার ব্যর্থ হয়ে চলেছেন। খেতাব জয় দূরের কথা, ধারাবাহিক ভাবে বিভিন্ন টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালের গণ্ডি পর্যন্ত পেরোতে অক্ষম হচ্ছেন। একের পর এক টুর্নামেন্টের প্রথম রাউন্ড থেকেই ছিটকে গিয়েছেন। এমনকি র‌্যাঙ্কে পিছিয়ে থাকা প্রতিযোগীদের কাছে একাধিক বার পরাজিত হয়েছেন। অপর দিকে দেশের অন্য এক শীর্ষ শাটলার সাইনা নেহওয়াল চোটে-আঘাতে জর্জরিত। পুরুষ বিভাগে দেশের এক নম্বর শাটলার কিদম্বি শ্রীকান্ত তো একেবারেই হারিয়ে গিয়েছেন। ২০১৭ সালের পর তিনি কোনও টুর্নামেন্টই জিততে পারেননি। শাটলার বি সাই প্রণীত ও এইচ এস প্রণয় মাঝেমধ্যে শিরোনামে এলেও, খেতাব জয়ের রসদ নেই। পুরুষ ডাবলসে এক সময় সাড়া জাগানো সাত্ত্বিক-চিরাগ জুটিও প্রত্যাশা অনুযায়ী প্রদর্শনে ব্যর্থ।

সুদীপ সোম, হাবড়া, উত্তর ২৪ পরগনা

গোষ্ঠ পাল

‘চিনের প্রাচীর’ (পত্রিকা, ২০-৩) নিবন্ধ প্রসঙ্গে সংযোজন করতে চাই। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য ফুটবল মাঠকে বেছে নিয়েছিলেন অসংখ্য বাঙালি। তাঁদের অন্যতম ছিলেন ‘চিনের প্রাচীর’ গোষ্ঠ পাল। তিনি কোনও দিন ইংরেজদের চাকরি করেননি। ভারতীয় দলের অধিনায়ক হওয়া সত্ত্বেও, মহাত্মা গাঁধীর আন্দোলনকে সমর্থন করে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যাননি। তাঁর ছেলে নীরাংশু পালের এক সাক্ষাৎকার থেকে জানা যায়, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু এক বার গোষ্ঠ পালের খেলা দেখতে এসেছিলেন, তবে নেতাজির সঙ্গে তাঁর কখনও কথা হয়নি। গাঁধীজি, নেহরু, আশুতোষ মুখোপাধ্যায় ও বিধানচন্দ্র রায়ের সঙ্গে তাঁর ভাল সম্পর্ক ছিল। ছাত্রাবস্থায় কলকাতায় থাকাকালীন তাঁর খেলা দেখতে যেতেন রাজেন্দ্রপ্রসাদ। রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর পদ্মশ্রীর জন্য গোষ্ঠ পালের নাম মনোনীত করেছিলেন তিনি নিজে।

সায়ন তালুকদার, কলকাতা-৯০

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement