কলকাতায় পঙ্গপাল হামলা ১৯৬১-তে (পঙ্গপাল বৃত্তান্ত ২৯-৫)হলেও, রাষ্ট্রপুঞ্জের ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচারাল অর্গানাইজেশন (এফএও)-র একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, উনিশের শতকে প্রতি কয়েক বছর অন্তর পঙ্গপালের হামলা চলত ভারতে। বিশেষ করে ১৯২৬ থেকে ১৯৩২ সময়কালে পঙ্গপাল হামলায় ভারতে প্রভূত ক্ষতি হয়। সমসময়ে তার পরিমাণ ছিল প্রায় ২ কোটি টাকা। ওই সময়ে পশুখাদ্যের বিপুল ক্ষতি হওয়ায়, ব্যাপক হারে মৃত্যু হয়েছিল গবাদি পশুর।
ভারতে পঙ্গপাল হানার ইতিহাসে ১৯৯৩ স্মরণীয়। ওই বছর পঙ্গপাল ১৭২ বার হানা দিয়েছিল। এর পরও পঙ্গপাল হানা দেয় ১৯৯৭, ২০০৫, ২০১০, ২০১৫ এবং ২০১৯-এ। ব্রিটিশ ভারতে পঙ্গপালজনিত সমস্যা সমাধানের জন্য প্রশাসনিক বিভাগ গঠিত হয়েছিল। এফএও-র রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে, ১৯২৬-৩২ সালের পঙ্গপাল হানার জন্য ব্রিটিশ সরকার মরুভূমির পঙ্গপাল সম্পর্কে বিস্তারিত গবেষণা শুরু করে ১৯৩২ থেকে। যার ফলে নয়া দিল্লিকে সদর দফতর করে ‘লোকাস্ট ওয়ার্নিং অর্গানাইজ়েশন’ গঠিত হয় ১৯৩৯ সালে। করাচিতে ছিল এর শাখা। মরুভূমির পঙ্গপালের ওপর নজরদারি রেখে তাদের গতিপথে সম্ভাব্য রাজ্যগুলিকে সতর্ক করা ছিল এই সংস্থার উদ্দেশ্য।
সংস্থাটি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ভূমিকা ছিল হেম সিং প্রুথি-র (১৮৯৭-১৯৬৯)। শিয়ালকোটে জন্ম তাঁর। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কীটপতঙ্গ বিশেষজ্ঞ প্রুথি, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডক্টরেট (১৯২৫)। ১৯৩৮-এ তাঁরই উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘এন্টোমলজিক্যাল সোসাইটি অব ইন্ডিয়া’। ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের জ়ুলজি শাখার সভাপতি (১৯৪০)প্রুথি’র পঙ্গপাল বিষয়ে যুগান্তকারী গবেষণাপত্র হল 'The Desert Locust Cycle of 1940-46 in India' (১৯৫০)। তাতে তিনি পঙ্গপালদের জনন, গতিপথ প্রভৃতি বিষয়ে সবিস্তার লেখেন। ১৯৬৩-তে প্রকাশিত হয় তাঁর ‘টেক্সটবুক অব এগ্রিকালচারাল এন্টোমলজি’ গ্রন্থ।
নন্দগোপাল পাত্র, সটিলাপুর, পূর্ব মেদিনীপুর
টি-সেল
‘কমে যায় টি-সেল, নয়া দিশা কোভিড যুদ্ধে’ (২৬-৫) লেখার সূত্র ধরে বলি, লিম্ফনোড, টনসিল, প্লীহা ইত্যাদি অর্গানগুলিকে ‘সেকেন্ডারি লিম্ফয়েড অর্গান’ বলা হয়। বোন ম্যারো আর থাইমাসকে ‘প্রাইমারি লিম্ফয়েড অর্গান’ বলে। সেকেন্ডারি লিম্ফয়েড অর্গানগুলি ছাঁকনির মতো রক্তে অ্যান্টিজেন ও জীবাণুদের নিজেদের মধ্যে ছেঁকে নিয়ে জমা করে। এই অর্গানগুলির মধ্যে টি-সেল ও বি-সেল থাকে। সংগৃহীত অ্যান্টিজেনের উপস্থিতিতে টি-সেল ও বি-সেলের সংখ্যা বৃদ্ধি হয়। পরে এই টি-সেল (সাইটোটক্সিক টি-সেল) ওই অ্যান্টিজেনের সঙ্গে যুদ্ধ করে অ্যান্টিজেনকে মেরে দিতে সাহায্য করে। বি-সেল অ্যান্টিবডি তৈরি করে অ্যান্টিজেনকে বিনষ্ট করতে পারে।
টি-সেল ও বি-সেল মানুষের দেহের বোন ম্যারোতে (মজ্জাতে) তৈরি হয়। সেখান থেকে টি-সেল যখন গলার থাইমাস গ্রন্থিতে পৌঁছয়, তখন সেখানে এদের ডেভেলপমেন্ট হয়, এটা ‘থাইমিক এডুকেশন’ নামে পরিচিত। তাই এদের থাইমাস গ্রন্থির নামানুসারে টি-সেল বলা হয়।
ইন্টারলিউকন-৭ (আইএল-৭) একটি সাইটোকাইন, এটি একটি ছোট ইমিউন-নিয়ন্ত্রক প্রোটিন। বোন ম্যারো, থাইমিক স্ট্রোমাল সেল ও ফাইব্রব্লাস্টস আইএল-৭ তৈরি করতে পারে। কোভিড-১৯ রোগীদের রক্তে এই সাইটোকাইনের পরিমাণ কমে যায়, তাই এটাকে ওষুধ হিসেবে রোগীদের দেহে প্রয়োগ করলে টি-সেল বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকে।
সোমনাথ রায়, প্রাক্তন অধ্যাপক, ইমিউনোলজি ও মাইক্রোবায়োলজি ল্যাবোরেটরি, বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়
ময়লার স্তূপ
সরশুনা কলেজ সংলগ্ন চিলড্রেনস পার্কের মূল প্রবেশদ্বারের সামনে ময়লার স্তূপ অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর। যেখানে শিশু আর বৃদ্ধরা (এবং অন্যরাও) বিশুদ্ধ বায়ুর জন্য পার্কে যায়, সেখানে এ রকম ময়লার স্তূপ পড়ে থাকবে? সামনে কলকাতা কর্পোরেশনের ভ্যাট, তা সত্ত্বেও দিনের পর দিন আমরা এর সম্মুখীন হচ্ছি। কবে প্রতিকার হবে?
বিশ্বনাথ চৌধুরী, কলকাতা-৬১
পদ্য প্রকৌশল
অংশুমান করের ‘এখন কি কবিতা লেখা উচিত’ প্রসঙ্গে ‘চেষ্টাকৃত কাব্য’ শীর্ষক পত্রের (২৮-৫) পরিপ্রেক্ষিতে কিছু কথা।
কবিতা কেন ,কখন, কী ভাবে লেখা উচিত, তা নিয়ে বিতর্ক চলেছে আবহমান কাল। কাব্যিক সুষমার মধ্যে দিয়েই প্লেটো কবিদের নির্বাসন দিলেন। সুকান্ত কবিতাকে ছুটি দিলেন অপরূপ উপমার সাহায্যে। আবার কবি কিটস তো বলেছিলেন কবিতা গজালে গাছের পাতার মতো স্বাভাবিক ভাবেই গজাক, না হলে গজানোরই দরকার নেই। কিন্তু (রাজ)কবিকে তো রাজকীয় মার্জারের মৃত্যুর জন্যও শোকগাথা রচনা করতে হয়। আসলে, ফরমায়েশি হোক বা অনুপ্রাণিত বিষয়ই হোক, কবি যখন কিছু লিখতে বসেন, তখন তিনি নিমগ্ন থাকেন ভাব-ভাষা-ছন্দের এক 'Poetic engineering'-এ (উইলিয়াম রাদিচে-র শব্দবন্ধ)। শব্দকে নিত্যতার শেকল থেকে মুক্ত করে অবাক নতুনে প্রেরণের প্রচেষ্টা করেন। বর্তমানের বা ফরমায়েশের লঞ্চিং প্যাড থেকে উৎক্ষেপিত হতে পারে স্থান-কাল-পাত্রের গণ্ডি ডিঙিয়ে যাওয়ার মতো কাব্যযান। সংবাদও হয়ে উঠতে পারে মূলত কাব্য। উড্ডয়ন ব্যর্থ হতে পারে, যদি কারিগরির খামতি থাকে।
চন্দন আশিস লাহা, দার্জিলিং
উচ্চ মাধ্যমিক
উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীন লকডাউন শুরু হওয়ায় পরীক্ষা মাঝখান থেকেই স্থগিত রাখতে হয়। কিছু দিন আগে বাকি থাকা পরীক্ষার সময়সূচি ঘোষণা করা হয়। কিন্তু আমপান-পরবর্তী সময়ে তা নিয়ে একটু বিবেচনা করা দরকার। আমপানের ফলে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলির প্রভূত ক্ষতি হয়েছে। অনেক পরীক্ষার্থীর পড়ার বই নষ্ট হয়ে গিয়ে থাকতে পারে, অনেকের হয়তো মাথা গোঁজারই জায়গা নেই। বহু জায়গায় রাস্তা নষ্ট হয়ে গিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থাও ক্ষতিগ্রস্ত। অনেক স্কুলের এমন ক্ষতি হয়েছে যে সেখানে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব নয়। আমপানের ফলে অনলাইন পড়াশোনাতেও ছেদ পড়েছে। তার পর ভিনরাজ্য থেকে ফেরা অনেক শ্রমিকই স্কুলবাড়িগুলিতেই কোয়রান্টিনে আছেন। সেই সব স্কুলেও পরীক্ষার ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়। বর্তমান করোনা পরিস্থিতি অনেকটাই উদ্বেগজনক, কোনও পরীক্ষার্থী আক্রান্ত হলে তাকে ১৪ দিনের জন্য কোয়রান্টিনে থাকতে হবে। সে পরের পরীক্ষা কী ভাবে দেবে? কোনও পরীক্ষার্থী অজান্তেই আক্রান্ত হলে তা থেকে অনেকের আক্রান্ত হওয়ারও সম্ভাবনা। তাই পরীক্ষার সময়সূচি নিয়ে আর এক বার বিবেচনা করা যায় কি?
সৌভিক সামন্ত, শ্রীরামপুর, পূর্ব মেদিনীপুর
ধর্মস্থান
১ জুন থেকে ধর্মস্থানগুলি খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত কি যুক্তিসঙ্গত? নিজগৃহে ধর্মাচরণ করলে ‘ঈশ্বর’ কি সন্তুষ্ট হন না? করোনা আতঙ্কে নতুন করে কেন এ হঠকারিতা?
সরকারি নির্দেশে বলা হয়েছে, ধর্মস্থানগুলিতে ১০ জনের বেশি ভিড় হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু কে নেবেন ব্যবস্থা? পুলিশ প্রশাসনে পর্যাপ্ত কর্মী কোথায়?
মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “রেলে যদি হাজার হাজার লোক যাতায়াত করতে পারেন, তা হলে মন্দির, মসজিদ, গির্জা, গুরুদ্বার খুলতে পারে।” একটা ভুলের সাফাই দিয়ে আর একটা ভুল! কী দারুণ সমীকরণ!
শক্তিশঙ্কর সামন্ত, ধাড়সা, হাওড়া