সম্প্রতি ‘গার্ডিয়ান’ পত্রিকার সৌজন্যে ব্রিটেনের ‘ডঙ্কি স্যাংচুয়ারি’ (The Donkey Sanctury)-র গবেষণা এবং আন্তর্জাতিক চ্যারিটি সংস্থার রিপোর্টে পাই, বর্তমানে পৃথিবীতে সাকুল্যে চার কোটি চল্লিশ লক্ষ গাধা আছে, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে অর্ধেক গাধাকে নির্বিচারে হত্যা করা হবে। চিনের সাবেক ঐতিহ্যবাহী ওষুধ ‘ইজিয়াও’ (Ejiao), গাধার চামড়া কেটে প্রক্রিয়াজাত করে বানানো হয়। শুধু চিন নয়, বিশ্ব তথা আন্তর্জাতিক বাজারে এর চাহিদা বিরাট। সেই জন্য গড়ে বছরে ৪৮ লক্ষ গাধাকে হত্যা করে চলেছে চিন। ব্যাপক হারে এমন গাধা নিধনের ফলে চিনে গাধার সংখ্যা ১৯৯২ সালের ১ কোটি ১০ লক্ষ থেকে কমে, এখন হয়েছে মাত্র ২৫ লাখ, শতাংশের হিসেবে কমেছে ৭৬।
২০১৬ সালের এক রিপোর্ট অনুযায়ী, বিপুল ব্যবসায়িক চাহিদা পূরণের জন্য চিনকে বছরে অন্তত ১৮ লক্ষ গাধা আমদানি করতে হয়। সংখ্যাটি ক্রমশ বাড়ছে। বেশির ভাগ গাধা আফ্রিকা, এশিয়া ও দক্ষিণ আমেরিকার কিছু দেশ থেকে আইনি কিংবা বেআইনি অর্থাৎ চোরাপথে চিনে ঢোকে। রুগ্ণ, অসুস্থ, শাবক ও গর্ভবতী গাধাও ট্রাকে/গাড়িতে গাদাগাদি করে বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে চোরা-পাচার হয়ে যায় চিনে। দীর্ঘ যাতায়াতে জলের ও খাদ্যের অভাবে ও অশেষ নির্যাতনে ২০% গাধার মৃত্যু হয় পথেই।
অথচ সারা পৃথিবীর গ্রামীণ ও রুক্ষ পাহাড়ি এলাকার অন্তত ৫০ কোটি সাধারণ মানুষের কাছে, এই পালিত প্রাণীটিই জীবনযাত্রার এক প্রধান অবলম্বন। গাধার দুধ এই মানুষদের কাছে বড় রসদ। নিত্যকার পণ্য পরিবহণের কাজে দুর্গম পথে গাধার ভূমিকা অসীম। চাষের কাজেও তারা লাগে। আফ্রিকার ইথিয়োপিয়ায় একটি গ্রাম্য প্রবাদ তাই এই রকম: ‘‘যে লোকের কাছে কোনও
গাধা নেই, সেই লোকটা নিজেই একটা গাধা।’’
ওয়র্ল্ড অর্গানাইজ়েশন ফর অ্যানিমেল হেলথ-এর ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল, ডাক্তার ম্যাথু স্টোন সম্প্রতি জানিয়েছেন, ‘‘চিনের এই উত্তেজক ওষুধের বৈশ্বিক চাহিদার আড়ালে যে বৈধ এবং অবৈধ কারবার ক্রমশ বেড়ে চলেছে, তাতে গ্রামীণ জীবনচক্র-সহ গাধার অস্তিত্ব এবং ভূপরিবেশের উপর বিরাট ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে।’’
আশার কথা, ১৮টি দেশ চিনে গাধা রফতানি বা চোরা-চালানের বিরুদ্ধে একমত হয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। তবে চিনের প্রবল বাণিজ্যিক চাপকে কত দিন ঠেকানো যাবে, বলা মুশকিল। কেনিয়ায় ২০১৬-২০১৯’এর মধ্যে একটা গাধার দাম ৭৮ পাউন্ড থেকে বেড়ে ১৫৬ পাউন্ডে পৌঁছে গিয়েছে। পাকিস্তান ২০১৫-য় চিনের সঙ্গে গাধা রফতানি সাময়িক ভাবে বন্ধ করলেও, সুসম্পর্ক বজায় রাখা ও বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের লক্ষ্যে ফের তাদের সঙ্গে বড় চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছে। সম্প্রতি পাকিস্তানের পাখতুনখোয়ায় গাধা পালন
খামারের জন্য ৩০০ কোটি ডলার লগ্নি করেছে চিন।
ভারতে গাধা রফতানির ব্যাপারটা না থাকলেও, বিষয়টি তেমন স্বস্তিদায়ক নয়। এ দেশে ‘বিপন্ন প্রজাতি’ হিসেবে ‘বন্যগাধা’কে ইতিমধ্যে চিহ্নিত করা হয়েছে। গুজরাতে কচ্ছের রনে এদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র আছে। তবে, দেশের ২০তম পশুখামার গণনা অনুযায়ী, গাধার সংখ্যা ২০১৮ সালে ২০১২ সালের তুলনায় ৬১% কমে হয়েছে মাত্র এক লক্ষ কুড়ি হাজার। অথচ, গাধার সংখ্যা ২০১২ সালে ছিল ৩২০০০০, আর ২০০৭-এ ৪৩৮০০০।
গাধার প্রজনন-চক্র দীর্ঘ সময়ের। ১২ থেকে ১৩ মাসের পর এরা একটি সন্তানের জন্ম দেয়। এদের রক্ষা ও পালনের জন্য বিশেষ সচেতনতা প্রয়োজন। এর সঙ্গে ভাবা প্রয়োজন, কী কারণে এ দেশে গাধার সংখ্যা ধাপে ধাপে এমন কমছে।
গাধাকে মূর্খ হিসেবে যত অবজ্ঞাই করা হোক, আসলে প্রাণীটি অত্যন্ত ধৈর্যশীল, আত্মরক্ষা করার প্রবল শক্তি রাখে, প্রচণ্ড সহিষ্ণু, দলবদ্ধ হয়ে থাকতে ভালবাসে, স্মৃতিশক্তিও খুব প্রখর। ওরা নির্দিষ্ট গন্তব্যস্থান ঠিক মনে রাখে। পাহাড়ি বা দুর্গম পথে মালপত্র বহন করে ঠিক ভাবে পৌঁছে দেয়। উপকারী এই প্রাণীটি কি পৃথিবী থেকে চিরতরে অবলুপ্ত হতে চলেছে?
পৃথ্বীশ মজুমদার
কোন্নগর, হুগলি,
ডাক অধিকর্তা
পশ্চিমবঙ্গ সার্কলের অধীনস্থ আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে বর্তমানে ১০২টি ডাকঘর আছে (দক্ষিণ আন্দামান জেলায় ৪৯টি, মধ্যোত্তর আন্দামান জেলায় ৩৪টি এবং নিকোবর জেলায় ১৯টি)। ডাকঘরগুলির স্থানীয় অধিকর্তা হলেন পোস্টমাস্টার জেনারেল, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ। মুশকিল হল, তাঁর হেডকোয়ার্টার্স নির্ধারিত করা হয়েছে— না, পোর্টব্লেয়ার নয়, কলকাতা। তার মানে, কোনও সাধারণ মানুষ যদি কোনও অভিযোগ নিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চান, তাঁকে গাঁটের কড়ি খরচ করে যেতে হবে কলকাতা!
অথচ ডাকঘরের স্থানীয় অধিকর্তা পদে যিনি থাকবেন, তাঁর জন্য এক সময় লক্ষ লক্ষ টাকা পাবলিক মানি ব্যয় করে বানানো হয়েছিল অট্টালিকোপম কোয়ার্টার্স, যাতে বিগত কয়েক বছর ধরে কেউ বসবাস করেন না। পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে বহুমূল্য সরকারি আবাসটি, মূল প্রবেশপথে গজিয়ে উঠেছে জঙ্গল।
অনাদিরঞ্জন বিশ্বাস
জংলিঘাট, দক্ষিণ আন্দামান
অন্য ঠোঁটে
‘বাঙালির মুখে মুখে ফিরত তাঁর গান’ (রবিবাসরীয়, ২৪-১১) নিবন্ধে বলা হয়েছে, ‘‘...‘শুকসারী’ ছবিতে উত্তমকুমারের লিপে মোহিনীর লেখা গান গাইলেন মান্না দে— ‘সখি চন্দ্রবদনী, সুন্দরি ধনি...’’’। ‘শুকসারী’ ছবিতে উত্তমকুমারের লিপে গান গেয়েছিলেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়। ‘ওগো চন্দ্রবদনী সুন্দরী ধনি’ গানটি মান্না দে গেয়েছিলেন অভিনেতা সুমন মুখোপাধ্যায়ের লিপে।
বিশ্বনাথ বিশ্বাস
কলকাতা-১০৫
সুরকার নন
‘সুরকার অরুন্ধতী’ (১৭-১১) চিঠিটির শিরোনাম হওয়া উচিত ছিল, ‘সঙ্গীত পরিচালক অরুন্ধতী’। কারণ, গানগুলির সুর ওঁর দেওয়া নয়। গানগুলি অন্য শিল্পীর তৈরি গান, কখনও বা প্রচলিত গান। বিভিন্ন দক্ষ শিল্পীকে দিয়ে এই সব গান উপযুক্ত ক্ষেত্রে প্রয়োগ করার নৈপুণ্যে তিনি এক প্রতিভাময়ী সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন। কিন্তু সুরকার নন।
দীপঙ্কর চট্টোপাধ্যায়
হাওড়া
অন্য সুরকার
‘সুরকার অরুন্ধতী’ চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‘ছুটি’ ছবির ‘আমার হাত ধরে তুমি’ ও ‘আমার জীবন নদীর ও পারে’ গান দু’টির সুরকার অরুন্ধতী দেবী। তা ঠিক নয়। এই গান দু’টির সুরকার ধীরেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় এবং গীতিকার বরদাপ্রসন্ন দাশগুপ্ত। ১৯৩৩ সালে আঙ্গুরবালা দেবী এই গান দু’টি প্রথম রেকর্ড করেন।
হীরালাল শীল
কলকাতা-১২
বকেয়া দিন
নতুন ইউজিসি বেতনক্রম ঘোষিত। প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির বিশ্লেষণ হচ্ছে। আন্দোলনও হচ্ছে, হওয়াই উচিত। কিন্তু ২০০৬ থেকে চালু হওয়া বেতনক্রম অনুযায়ী কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কিছু বকেয়া বেতন প্রাপ্য ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের এবং দু’টি সরকারি কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকা তাঁদের সম্পূর্ণ বকেয়া বেতন পেয়েছেন। বাকি রয়েছেন সমস্ত বেসরকারি কলেজ ও অন্য সরকারি কলেজের শিক্ষকশিক্ষিকা। নতুন বেতনক্রম চালু হওয়ার আগে সেই বকেয়া বেতন সুদ-সহ দিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।
শরদিন্দু ভট্টাচার্য
চুঁচুড়া, হুগলি