সদ্যপ্রয়াত সন্তু মুখোপাধ্যায় সম্পর্কে কয়েকটি তথ্য।
সন্তু অভিনয়ের পাশাপাশি ভাল গান গাইতেন ও নাচ জানতেন। গোপাল ভট্টাচার্যের কাছে নাচ শিখেছিলেন। বহু নৃত্যনাট্যে অংশ নিয়েছিলেন।
তপন সিংহ সন্তুকে ‘রাজা’ ছবিতে প্রথম অভিনয়ের সুযোগ দেন একটি পার্শ্বচরিত্রে। তখন ১৯৭৪-এর মার্চ। তপনবাবুই সন্তুকে তরুণ মজুমদারের কাছে পাঠান। তরুণবাবু সন্তুকে ‘সংসার সীমান্তে’ ছবিতে একটি ছোট কিন্তু রাফ অ্যান্ড টাফ চরিত্রে সুযোগ দেন। দু’টি ছবিই মুক্তি পায় ১৯৭৫ সালে। এর পর নিউ থিয়েটার্স থেকে ডাক আসে ‘শেষরক্ষা’ (১৯৭৭) ছবির জন্য।
এই সময় উত্তমকুমারের চোখে পড়ে যান সন্তু এবং তাঁরই বিশেষ সুপারিশে ‘কলঙ্কিনী কঙ্কাবতী’ (১৯৮১) ছবিতে অভিনয় করেন শর্মিলা ঠাকুরের প্রেমিকের চরিত্রে।
সন্তুর বাবা পতাকীনাথ মুখোপাধ্যায় ‘শৌভনিক’ নাট্য সংস্থার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। কিশোর বয়স থেকেই সন্তু থিয়েটারে অভিনয় শুরু করেন। বহু নাটকে অভিনয় করেছেন। ‘থিয়েট্রন’ গ্রুপে ১৯৮০-৮১ সাল নাগাদ গিরিশ কারনাড-এর ‘তুঘলক’ নাটকে নামভূমিকায় অভিনয় করেন ও প্রশংসিত হন।
শ্রীশঙ্কর ভট্টাচার্য
কলকাতা-৩৯
১০০ দিনের কাজ
‘উন্নয়নেই কি মাটি কাটার আগ্রহে ভাটা?’ (২৫-১) শীর্ষক প্রতিবেদনের সঙ্গে একমত নই। প্রতি বছর ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে কাজ চেয়ে আবেদনের সংখ্যা কমছে বলে পঞ্চায়েত দফতরের দাবি। গ্রামের মানুষ ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজ করতে চাইছেন না কেন? কেনই বা পঞ্চায়েতে কাজ চেয়ে আবেদনের সংখ্যা কমছে, পুরো বিষয়টির বিচার বিশ্লেষণের প্রয়োজন আছে।
পঞ্চায়েতে প্রায় ৩৫ বছর কর্মচারী হিসেবে কাজ করার সুবাদে ১০০ দিনের প্রকল্প সম্পর্কে কিছু প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা আমার আছে। সাধারণ ভাবে এখনও গ্রামের বিরাট অংশের মানুষ কাজ চেয়ে পঞ্চায়েতে আবেদন করার বিষয় সম্পর্কে জানেনই না। ১০০ দিনের কাজ যখন শুরু করা হয়, কাজের সঙ্গে যুক্ত সুপারভাইজ়র, জবওয়ার্কাররা তখনই মজুরদের ৪ক ফর্ম পূরণ করে পঞ্চায়েতে জমা দেন। ৪ক হল কাজ চেয়ে আবেদনের নির্দিষ্ট ফর্ম। বাম আমলেও বাম কর্মীরা গ্রামের মানুষকে কাজ চেয়ে আবেদন করার জন্য খুব একটা উৎসাহ দিতেন না। এখনও এই সরকারের আমলেও শাসক দলের কর্মীরা এই ধারা বজায় রেখেছেন।
আসলে, পঞ্চায়েত কাজ দিতে না পারলে আবেদনপত্র ব্লকে পাঠাতে হয়। ব্লক স্তরে কাজ দিতে না পারলে শ্রমিকদের বেকার ভাতা প্রদান করার বিধি আছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই বেকার ভাতার পুরো টাকাটাই রাজ্য সরকারকে বহন করতে হয়। এখন অবশ্য বিরোধী দলের কর্মীরা কোথাও কোথাও শ্রমিকদের কাজ চেয়ে আবেদন করার উদ্যোগ করছেন। তবে তা খুবই কম।
আসলে সামগ্রিক ভাবে গ্রাম এলাকায় কাজ করার পরিসর কমে আসছে। পুকুর সংস্কার করার প্রকল্প কেন্দ্রীয় আইনে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নতুন পুকুর খনন করার মতো জায়গা গ্রাম এলাকায় কম। বনসৃষ্টি করার উপযুক্ত জায়গার অভাব। শুধু ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পই এখন শ্রমদিবস সৃষ্টির মূল উৎস। কিন্তু একই জমি কত বার উন্নয়ন করা যায়? তাই এই সেক্টরেও কাজ করার সুযোগ সীমিত।
সবচেয়ে যেটা মারাত্মক হয়ে দাঁড়িয়েছে, তা হল কাটমানি নিয়ে গ্রামবাংলায় ব্যাপক হইচই হওয়ায়, শাসক দলের কর্মী সমর্থকেরা ভয়ে কাজ করার আগ্রহ হারিয়েছেন। তাই অধিকাংশ পঞ্চায়েতে ১০০ দিনের কাজ নেই বললেই চলে।
১০০ দিনের প্রকল্পে নতুন নতুন বিভিন্ন ধরনের স্কিম নিয়ে বার্ষিক পরিকল্পনা তৈরি করাও (সরকারি গাইডলাইন মেনে) বেশ শক্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে। বছরভর গরিব মানুষকে কাজ দিতে গেলে লেবার ওরিয়েন্টেড যে পরিকল্পনার প্রয়োজন, তা প্রণয়ন করার মতো উপযুক্ত নেতৃত্ব পঞ্চায়েতে পরিলক্ষিত হয় না। (গ্রাম সংসদ সভা থেকে আগে স্কিম উঠে আসত, এখন গ্রাম সংসদ সভা হয় না বললেই চলে)। তাই অনুমোদিত প্রকল্পের অভাবের জন্যেই গ্রামে ৪ক ফর্ম পূরণ করে কাজ দেওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে না। তাই মনে হচ্ছে, কাজ চেয়ে আবেদন করা কমেছে।
গত আট বছরে সামাজিক উন্নয়নে যে বিপুল টাকা খরচ হয়েছে, তার জন্য গ্রামের গরিব মানুষদের রোজগার বেড়েছে কি? কন্যাশ্রী-সবুজ সাথীর সাইকেল বিলি কোনও দিনই কর্মসংস্থানের বিকল্প হতে পারে না। এই সমস্ত প্রকল্পের সুযোগ গ্রামের মানুষ পেয়েছেন, তাঁদের অনেক উপকারও হয়েছে, কিন্তু গ্রামের মানুষদের আয়বৃদ্ধি হয়নি।
প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে, কর্মপ্রার্থীর সংখ্যা কমলেও, কাজ দেওয়ার খরচ এবং পরিবার পিছু কাজের দিনের সংখ্যা পাল্লা দিয়ে বেড়েছে। শ্রমদিবস বেড়েছে। হ্যাঁ, এটি ঠিক। কিন্তু এমনটা হয়েছে কেন?
সারা ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গেও প্রধানমন্ত্রী আবাস প্রকল্প যোজনায় (এ রাজ্যে যা বাংলা আবাস যোজনা নামে পরিচিত) লক্ষ লক্ষ মানুষ ঘর পেয়েছেন। যাঁরা ঘর পেয়েছেন, সেই সমস্ত পরিবারের জন্য ১০০ দিনের প্রকল্প থেকে ৯০ শ্রমদিবস বরাদ্দ আছে। তার জন্যই রাজ্যের শ্রমদিবস অনেক বেড়ে গিয়েছে। এ রাজ্যে প্রচুর সংখ্যক মানুষ ঘর নির্মাণ করেছেন। পরিবার পিছু শ্রমদিবস তাই ক্রমশ বাড়ছে।
১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে শ্রমদিবস বাড়াতে গেলে সেক্টরগুলিতে কাজ করার নিয়মের কিছু পরিবর্তন দরকার। বর্গাদার এবং প্রান্তিক চাষিদের চাষের জমিতে ধান পোঁতা এবং ধান কাটার শ্রমিকদের ব্যক্তিগত উপকারদায়ী প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা যায় কি না, দেখা দরকার। গ্রামাঞ্চলের মিড-ডে মিল, সমস্ত বিদ্যালয়, অফিস, রাস্তাঘাট, নিকাশি নালা স্বচ্ছতাকে প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। বনসৃষ্টি বাধ্যতামূলক হলেও প্রকৃতপক্ষে কাজ হয় না। এ দিকে বিশেষ ভাবে দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন।
গ্রামাঞ্চলে মানুষের মাটি কাটার আগ্রহে ভাটা পড়েনি। মাটি কাটার কাজ ক্রমশ কমছে। ১০০ দিনের প্রকল্প থাকলে কাজ চেয়ে আবেদনও বৃদ্ধি পাবে, এ বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়
কড়িধ্যা, বীরভূম
কাদের জন্য
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের টিচার্স কোয়ার্টার্সের ক্যাম্পাসেই মাস্টার্স ও গবেষক ছাত্রীদের হস্টেল। সেখানে হাজারের কাছাকাছি ছাত্রী থাকে, আর অনেক শিক্ষক বা কর্মচারীদেরও বসবাস। অথচ মেডিক্যাল মোড় থেকে টিচার্স কোয়ার্টার বা হস্টেল এরিয়া পর্যন্ত প্রায় আধ কিলোমিটার রাস্তায় কোনও স্ট্রিট লাইট নেই। কিছু দিন অন্তর একটি বা দু’টি কম ওয়াটের লাইট লাগিয়েই দায় সারে প্রশাসন। এই নিয়ে কাগজে লেখালিখি বা অভিযোগও কম হয়নি। কিন্তু কিছুতেই প্রশাসনের ভ্রুক্ষেপ হয়নি। অথচ ৯-১২-২০১৯ তারিখে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর ইউনিভার্সিটি আসার প্রাক্কালে ভয়ঙ্কর খারাপ রাস্তা মেরামত হয়ে গেল, সব আলো লাগানো হল। যদিও অজ্ঞাত কোনও কারণে আলোগুলো আবার উধাও হয়ে গিয়েছে।
বর্ধমান স্টেশনে প্রতি দিন প্রায় লক্ষাধিক যাত্রীর আসা-যাওয়া, কিন্তু টোটোদের দৌরাত্ম্য, হকারদের ও অজস্র ভিখারিদের জায়গা দখল, চূড়ান্ত অপরিষ্কার স্টেশন ইত্যাদির চোটে নিত্য ভোগান্তি। অথচ গত ৪-৩ তারিখে বর্ধমানে কিছু রেলের অফিসার আসবেন বলে, রেল চত্বরের অবাঞ্ছিত লোকেদের বসে থাকা, টোটোদের উৎপাত— কিছুই নজরে পড়ল না। বেশ কয়েক মাস পরে এ দিন পুরো রেল স্টেশনের মেঝে তকতকে করে ফেলা হল। রেললাইনে একটা কাগজ বা খাবারের প্যাকেট পড়ে থাকতে দেখা গেল না। ভারত তথা এই রাজ্যের সমস্ত সুযোগ-সুবিধা কি কেবল নেতা-মন্ত্রী আর সরকারি অফিসারদের জন্য?
পার্শাল কিস্কু
সহকারী অধ্যাপক, ত্রিবেণীদেবী ভালোটিয়া কলেজ, রানিগঞ্জ
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।