—ফাইল চিত্র।
লোহিত কয়ালের প্রবন্ধ ‘প্রথম আলো’ (এষণা, ৩০-৯) থেকে বেশ কিছু তথ্য জানা গেল। কিন্তু আর্নো পেনজ়িয়াস এবং রবার্ট উইলসন-কৃত যে পরীক্ষার কথা বলা হয়েছে, সেটি নিউ জার্সির বেল টেলিফোন ল্যাবরেটরিতে তাঁরা খুব উন্নত মাইক্রোওয়েভ ডিটেক্টর দিয়ে করছিলেন। এবং বছরের সব সময়, সব দিক থেকে এই তরঙ্গের আগমন বুঝেই তাঁরা অনুমান করেন যে, এটি আমাদের সৌরজগৎ, এমনকি আমাদের গ্যালাক্সিরও বাইরে থেকে আসছে। এই অবিস্মরণীয় কাজের জন্য ১৯৭৮ সালে তাঁরা যৌথ ভাবে নোবেল পুরস্কার পান। একই সময়ে প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ে এই বিকিরণকে ধরার জন্য পর্যবেক্ষণে ব্যস্ত ছিলেন আরও দুই বিজ্ঞানী— বব ডিক এবং জিম পেবলস। বিজ্ঞানী জর্জ গ্যামো ১৯৪৮ সালে আরও দুই সহ-গবেষকের সঙ্গে রচিত বইতে লেখেন যে, আদিম বিশ্ব ছিল ভীষণ উষ্ণ, এবং সেখান থেকে বিচ্ছুরিত বিকিরণ আমরা এখনও পেতে পারি, যদিও তা হবে খুবই ক্ষীণ এবং কম তাপমাত্রার। এই তত্ত্বের উপর নির্ভর করেই ডিক এবং পেবলস পরীক্ষা চালাচ্ছিলেন। কিন্তু তাঁদের আগেই পেনজ়িয়াস এবং উইলসন, খানিকটা হঠাৎ করেই, সাফল্য পেয়ে যান।
এই গ্যামো যাঁর ছাত্র ছিলেন, সেই আলেকজ়ান্ডার ফ্রিডম্যান এক জন রুশ পদার্থবিদ। আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্বের ব্যাখ্যা করেন। তিনি ১৯২২ সালে, মানে এডউইন হাবলের আগেই প্রসারণশীল মহাবিশ্বের ধারণা দেন। আইনস্টাইন কিন্তু প্রসারণশীল বিশ্বের ধারণার পক্ষপাতী ছিলেন না। তিনি বরং স্থিতিশীল বিশ্বের ধারণায় এতটাই বিশ্বাসী ছিলেন যে, মহাজাগতিক ধ্রুবক বলে একটি নতুন জিনিস তাঁর তত্ত্বে জুড়ে দিয়েছিলেন। ফ্রিডম্যানের এই তত্ত্ব পরে হাবল পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে প্রমাণ করেন। যদিও এই তত্ত্ব পাশ্চাত্যে জানা ছিল। ১৯৩৫ সালে যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইংল্যান্ডের দু’জন বিজ্ঞানী হাবলের পর্যবেক্ষণলব্ধ তথ্যের ব্যাখ্যা করেন, তখন তাঁরা ফ্রিডম্যানের তত্ত্বের খোঁজ পান।
ফ্রিডম্যানের মতানুযায়ী, মহাবিশ্বের প্রতিটি গ্যালাক্সি তার নিকটতম গ্যালাক্সি থেকে দূরে সরে যাচ্ছে, এবং দূরে সরার হার তাদের পারস্পরিক দূরত্বের সমানুপতিক। মানে দূরত্ব যত বেশি, দূরে সরে যাওয়ার হারও তত বেশি। ১৯২৪ সালের আগের ধারণার সঙ্গে যা মেলে না। তার আগের ধারণা ছিল যে, গ্যালাক্সিগুলি মহাবিশ্বে ইতস্তত ভ্রমণ করে। কিন্তু হাবলের পর্যবেক্ষণ এই ধারণাকে ভুল প্রমাণ করে।
রাকেশ বন্দ্যোপাধ্যায়, চুঁচুড়া, হুগলি
কেবলই ডিউটি
টিভি সিরিয়ালে প্রথম বাঙালি মহিলা ডাক্তার কাদম্বিনীকে দেখছিলাম। আমার মেয়েরা ডাক্তার, ভেবে বুকটা গর্বে ভরে উঠছিল। ছোট মেয়ে ডিউটি থেকে ফিরে অবসন্ন মুখে ঘরে ঢুকল। পিপিই পরে মেয়েটার মুখে লাল গুটি বেরিয়ে গিয়েছে। ধপ করে মেঝেতেই বসে পড়ল মেয়ে। ‘‘জানো মা, আমার শনিবার থেকে ৪৮ ঘণ্টার একনাগাড়ে ডিউটি পড়েছে।’’ মা অবাক। ‘‘গত সপ্তাহে কোভিড ওয়ার্ড ডিউটি আর ২৪ ঘণ্টার ডিপার্টমেন্ট ডিউটি একই দিনে পড়েছিল। কী করে দুটো ডিউটি দুটো ওয়ার্ডে একসঙ্গে করব? অনেক কষ্টে এক জনকে ২৪ ঘণ্টা ডিউটির জন্য রাজি করিয়েছিলাম নিজেদের মধ্যে ডিউটি বদলা-বদলি করে। আজ হঠাৎ আবার এই ডিউটি।’’
আউটডোর, ওয়ার্ড, কোভিড ডিউটি। রবিবার নেই, ছুটি নেই, গাড়ি নেই, শুধু দায়িত্ব আছে। কেননা ওরা ডাক্তার। কোভিড আক্রান্ত হলে যে কারও পরিবারকে কম করে ১৪ দিনের কোয়রান্টিনে রাখা বাধ্যতামূলক। আর এই ছোট ডাক্তারগুলোকে একঘর কোভিড রোগীর সঙ্গে ৮ ঘণ্টা ডিউটি দেওয়ার পর দিনই আবার ডিউটি। সাধারণ ওয়ার্ডে রোগী ভর্তি হচ্ছে কোভিড পরীক্ষা ছাড়াই, চার-পাঁচ দিন চিকিৎসার পর জানা যাচ্ছে, রোগী কোভিড পজ়িটিভ। প্রতিটি মুহূর্ত একটা শঙ্কার মধ্য দিয়ে ওদেরকে, ওদের পরিবারকে যেতে হচ্ছে।
ওদের কাজের জন্য কি একটা সময়োপযোগী নিয়ম হতে পারে না, যা দিয়ে এই দায়িত্বশীল কাজের পাশে ওদের একটু স্বস্তি দেওয়া যায়? সামনে পুজো, আমোদের সব দরজাই খুলে যাচ্ছে। প্যান্ডেলে সবাই যখন মেতে উঠবে ঢাকের বাজনায়, তখন পিপিই পরে করোনা-আক্রান্তের পাশে থাকবে এই নবীন ডাক্তাররা। এদের জীবনের দায় কার?
নারায়ণ রায়, কলকাতা-৬১
এই লড়াই
যতই আমরা রোগীর সঙ্গে লড়াই না করে রোগের সঙ্গে লড়াইয়ের কথা বলি, বাস্তবে তার প্রতিফলন খুব সামান্য। সম্প্রতি আমার স্বামীর কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার রিপোর্ট আসায় চিকিৎসকের পরামর্শমতো সেই রাতেই তাঁকে এক বেসরকারি হাসপাতালে আমি এবং আমার কন্যা মিলে ভর্তি করে আসি। আমাদের করোনা টেস্ট রিপোর্ট নেগেটিভ আসা সত্ত্বেও ১৪ দিন গৃহবন্দি হয়ে কাটাই। স্বামী সুস্থ হয়ে ফেরার পর কোনও আবাসিক দরজার বাইরে থেকেও খোঁজ নেওয়ার তাগিদ অনুভব করেননি। শুধুমাত্র স্থানীয় প্রশাসন ও এক জন শুভানুধ্যায়ীর সাহায্যে আমরা দৈনন্দিন জিনিসপত্র জোগাড় করেছি। অবর্ণনীয় মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে দিনগুলো কাটাই। কারও প্রতি কোনও বিদ্বেষ না রেখে বলতে চাই যে, মানুষ মানুষের জন্যই। এই অভিজ্ঞতা অধিকাংশ করোনা-আক্রান্ত এবং তাঁর পরিজনদের। এই লড়াই মানুষের মনোভাবের সঙ্গেও।
কেকা রায়, উত্তরপাড়া, হুগলি
ভর্তির সঙ্কট
আমার ছেলে এ বার আইএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে ৮৪% নম্বর পেয়ে পাশ করেছে। এ, বি, বি+ গ্রেডের ছ’টি প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার সায়েন্স, পদার্থবিদ্যা অনার্স-এর জন্য ফর্ম পূরণ করা হয়েছে। কিন্তু এখনও কোনও কলেজে ভর্তি হতে পারেনি। জানি না পারবে কি না। এরা পরীক্ষা দিয়ে নম্বর পেয়েছে। রাজ্য সরকারের উচিত এদের জন্য এমন কিছু করা, যাতে কলেজে ভর্তি হতে পারে। না হলে এদের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাবে।
মধুছন্দা বসু,কলকাতা-১২
জুলুম
সম্প্রতি আমার প্রতিবেশীর মেয়ে পুত্রসন্তান জন্ম দিয়েছে। সন্তান-সহ মা হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার পর দিন হাজির কতিপয় তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ। গৃহকর্তার কাছে ত্রিশ হাজার টাকা দাবি। গৃহকর্তা পাঁচ হাজার টাকার বেশি দিতে অপারগ। তর্কাতর্কি শুরু। গৃহকর্তা অনুনয়ের সুরে জানালেন, তিনি হাসপাতালের অস্থায়ী কর্মী, জামাই গাড়ির চালক। তাই এর বেশি দেওয়ার ক্ষমতা তাঁর নেই। হিজড়ারা অভিযোগ করল, কাজ নেই তবু জন্ম দেওয়ার এত শখ কেন? সন্তান হলে বকশিশ দিতে হয়, তা কি গৃহকর্তা জানেন না? মনে প্রশ্ন জাগছিল, ‘বকশিশ’ কি ৩০ হাজার টাকা হয়? এর অভিযোগ করতে কোথায় যাব?
অরূপ মুখোপাধ্যায়, শ্রীরামপুর, হুগলি
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।