এনআরসি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে শাসক এবং কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন দল পরস্পরের বিরুদ্ধে তাল ঠুকছে। বলার অপেক্ষা রাখে না, দেশের স্বার্থের থেকে রাজনৈতিক স্বার্থের সংঘাত তাল ঠোকাঠুকির অন্যতম কারণ। পশ্চিমবঙ্গে মূলত বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ ঘটছে। অনুপ্রবেশ ঠেকাবার জন্য কাঁটাতারের বেড়া, কেন্দ্রীয় সরকারের সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনী এবং রাজ্য পুলিশের চৌকি ছাড়াও দু’তরফের গোয়েন্দা বাহিনীর নজরদারি চলে। এর পাশাপাশি আছে সীমান্ত সংলগ্ন গ্ৰাম পঞ্চায়েত। কোন এলাকায় বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ ঘটছে, কারও অজানা নয়। জলের সমোচ্চশীলতা ধর্ম মেনে, দামের হেরফের অনুযায়ী নুন কাঁচালঙ্কার মতো পণ্যও তাদের নাকের ডগায় সীমান্ত পারাপার করে। মানুষ তো কোন ছাড়! অনুপ্রবেশের কারণে রাজ্যের অর্থনীতিতে যেমন চাপ পড়েছে, তেমনই এনআরসি নিয়ে দু’পক্ষের তরজায় বার্থ সার্টিফিকেট বিহীন বৈধ নাগরিকরা সংশয় এবং শঙ্কায় ভুগছেন।
ধীরেন্দ্র মোহন সাহা
কলকাতা-১০৭
রোগীর হয়রানি
বিশ্ব রোগী সুরক্ষা দিবস (১৭ সেপ্টেম্বর)-এর প্রাক্কালে পেটের অসুখের এক রোগীকে নিয়ে বাইপাস সংলগ্ন বহুলবিজ্ঞাপিত এক কর্পোরেট হাসপাতালে গিয়ে অদ্ভুত অভিজ্ঞতা হল। প্রায় সত্তর বছর বয়স্ক রোগীকে সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে একতলায় আউটডোরের রোগীদের কাউন্টারে টাকা জমা দিয়ে, দোতলায় রোগীর ওজন, উচ্চতা, রক্তচাপ, রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা ও নাড়ির গতি পরীক্ষা করে চারতলায় প্রায় আড়াই ঘণ্টা বসিয়ে রাখার পর জানানো হল, ডাক্তারবাবু বিকেল পাঁচটার পর আউটডোরে অপেক্ষারত রোগীদের দেখবেন। দূরদূরান্ত থেকে আগত রোগীদের বাড়ি ফেরার সুরক্ষা তা হলে রইল কোথায়? রাজ্য সরকার রোগীদের হয়রানি কমাতে ও সময় বাঁচাতে একটি ‘স্বাস্থ্য কমিটি’ গঠন করেছে। এই ধরনের কমিটি বেসরকারি হাসপাতালেও পর্যবেক্ষণ চালাতে পারে। স্বাস্থ্য দফতর হাসপাতালের লাইসেন্স প্রদান করার বা তা রদ করার ক্ষমতা রাখে। সরকারি তদারকির অভাবেই এরা খেয়ালখুশি মতো অন্যায় করেই চলেছে। এর অবসান দরকার।
রুমিত দাশ
ইমেল মারফত
অশুভ আঁতাঁত?
সম্প্রতি পানিহাটি খেয়াঘাট থেকে অটো রিকশা করে সোদপুর রেল স্টেশন এলাম। সামনের দিকের চালকের সিট পিছনের সিটের চেয়ে লম্বা। চালক সামনে তিন জনকে ওঠাল। অটোতে মোট সাত জন পূর্ণবয়স্ক লোক। সামনে চার জন ও পিছনে তিন জন। চালক কোনও মতে বেঁকে অটো চালাচ্ছে। আমার বক্তব্য: প্রশাসন চুপ কেন? দুর্ঘটনার পরে দু’লাখ টাকা মৃত ব্যক্তির পরিবারকে দেওয়াটাই কী প্রশাসনের কাজ? না কি কোনও অশুভ আঁতাঁত?
অজয় কুমার গোস্বামী
কলকাতা-৯৫
ফ্লাইওভার সারান
বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের ওপরে দু’দুটো ফ্লাইওভার আছে। একটি বিরাটির কাছে শরৎ কলোনি থেকে উঠে দক্ষিণেশ্বরমুখী রাস্তায় খলিসাকোটার কাছে নেমেছে। অপরটি কলকাতামুখী রাস্তায় এয়ারপোর্ট সিটির সামনে থেকে উঠে বিমানবন্দরের কাছে আড়াই নম্বর গেটে নেমেছে। এই দুটো ফ্লাইওভার তৈরি হয়েছিল ২০০৫-০৬ সালে। চালু হওয়ার কয়েক বছর পর্যন্ত প্রচুর ট্রাক এবং অন্যান্য যানবাহন এই পথে চলাচল করত, ফলত কোনও জ্যামযন্ত্রণা ছিল না। ২০১৩ সালে দক্ষিণেশ্বরমুখী ফ্লাইওভারে একটি ফাটল দেখা দেয় এবং এই পথে সমস্ত যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রায় বছর তিনেক বন্ধ থাকার পরে শুধু ছোট গাড়ির জন্য এই ফ্লাইওভারটি খুলে দেওয়া হয়। বড় গাড়ির চলাচল এখনও বন্ধ আছে। সম্প্রতি কলকাতামুখী ফ্লাইওভারেও কিছু ফাটল ধরা পড়ে এবং বড় গাড়ির চলাচল এখানেও বন্ধ করে দেওয়া হয়। এখন সমস্ত বড় গাড়ি অনেকটা ঘুরে যাচ্ছে, এর ফলে প্রচুর জ্যামযন্ত্রণাও ভোগ করতে হচ্ছে।
এখন প্রশ্ন: ১) একটি ফ্লাইওভার তৈরির মাত্র ৬-৭ বছরের মধ্যে খারাপ হলে যারা ফ্লাইওভারটি বানিয়েছে তারা এর দায়িত্ব নেবে না কেন? ২) শুধু সাইনবোর্ড লাগালে বা হাইট বার বসালেই কি হবে? সারানোর দায়িত্বটা কে নেবে? ৩) শোনা যাচ্ছে যে এই রাস্তাটি সম্প্রতি পিডব্লিউডি-কে হস্তান্তর করেছে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। যদি তা-ই হয় তবে এই ফ্লাইওভার সারাবার দায়িত্ব পিডব্লিউডি-কে নিতে হবে। দায়িত্ব নিয়ে যে অচলাবস্থা চলছে তার সমাধান অবিলম্বে করতে হবে। মাননীয় পূর্তমন্ত্রীকে অনুরোধ: অবিলম্বে এই গুরুত্বপূর্ণ ফ্লাইওভার দু’টি সারিয়ে সমস্ত রকম যান চলাচলের উপযুক্ত করে দিন।
সমীর বরণ সাহা
কলকাতা-৮১
ফুটব্রিজ জরুরি
‘কোন্নগরে প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে এগিয়ে থামল ট্রেন’ (১৪-৯) সংবাদের সূত্র ধরে এই বিষয়ে বলতে চাই যে, শেওড়াফুলি স্টেশনে চলন্ত ট্রেন ব্রেকফেল করলে কী হতে পারে। পূর্ব রেলের হাওড়া-বর্ধমান মেন লাইনে বর্ধমান ও ব্যান্ডেলের পরই শেওড়াফুলি স্টেশনটির গুরুত্ব অপরিসীম। প্রথমত, এই স্টেশনটি থেকে তারকেশ্বর বা আরামবাগ বা গোঘাটে ট্রেন যাওয়ার জন্য জংশন স্টেশন। দ্বিতীয়ত, এই স্টেশনটির অবস্থান শেওড়াফুলির এমন জায়গায় যে, এর খুবই সন্নিকটে রয়েছে এক দিকে রাজপথ— জিটি রোড, এবং অন্য দিকে স্টেশন সংলগ্ন রাজ্যের মধ্যে অন্যতম পাইকারি সব্জি বাজার, ও তার থেকে অনতিদূরেই রয়েছে গঙ্গা নদী ও তার ও-পারেই উত্তর চব্বিশ পরগনার ব্যারাকপুরের মণিরামপুর, যার সঙ্গে শেওড়াফুলির রয়েছে লঞ্চের দ্বারা যোগাযোগ। এক দিকে জিটি রোড দিয়ে গাড়ির সারি, অন্য দিকে লোকে লোকারণ্য গমগম করা বাজার, তার পাশাপাশি মণিরামপুর থেকে শেওড়াফুলির দু’পয়সার ঘাট হয়ে বাজারের মধ্যে দিয়ে শেওড়াফুলি স্টেশনের দিকে সমগ্র দিন-রাতের অনেকটা সময়ে হাজার হাজার জনসাধারণ ও স্টেশনমুখী যাত্রীরা যাতায়াত করছেন, বস্তুত করতে বাধ্য হচ্ছেন। শেওড়াফুলি স্টেশনের ব্যান্ডেলের দিকে যেতে একদম সামনের মেন লাইন অতিক্রম করে বাজারের দিকে যাওয়ার রাস্তা ধরতে হয়। ফলে সকলেই একপ্রকার বাধ্য হয়ে মেন লাইন পেরিয়ে পদব্রজে চলাফেরা করেন, যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
শুধু তা-ই নয়, এই বাজারমুখী রেলের উপর দিয়ে যাওয়া রাস্তাটি ধরেই যায় অনেক পণ্যবাহী ছোট-বড় গাড়ি ও ট্রাক। এমতাবস্থায় সাধারণ মানুষ ও যাত্রীদের এই পথটি দিয়ে যাতায়াত করা যে কী দুঃসাধ্য ও কষ্টকর, তা স্থানীয় বাসিন্দারা ভাল ভাবেই অবগত।
এর পর গোদের উপর বিষফোড়ার ন্যায় শ্রাবণ মাস এলে যখন তারকেশ্বরগামী অজস্র পুণ্যার্থীরা এখানকার গঙ্গায় স্নান করে বাজার পেরিয়ে লাইনের উপর দিয়ে এই একটিমাত্র পথ ব্যবহার করেন, তখন অবর্ণনীয় শোচনীয় অবস্থা হয় ও প্রবল ভিড়ের চাপে লাইনের উপর রাস্তাটি প্রায় অবরুদ্ধ হয়ে যায়। স্থানীয় ফাঁড়ির পুলিশ ভিড় সামাল দিলেও যে কোনও সময় এখানে বড়সড় মাপের রেল দুর্ঘটনা ঘটে যেতেই পারে।
তাই সাধারণ লোক ও স্টেশনমুখী যাত্রীদের এই লাইনের উপর দিয়ে অত্যন্ত বিপজ্জনক চলাচল বন্ধ করতে ও সকলের নিরাপদে যাতায়াতের ব্যবস্থা করতে একমাত্র পন্থা হতে পারে লাইনের উপর দিয়ে চলাচলের জন্য একটি ফুটব্রিজ, যা গঙ্গার পাশের রাস্তা থেকে বাজার, মেন ও তারকেশ্বরের লাইনের উপর দিয়ে যাবে। একমাত্র এ রকম একটি ফুটব্রিজই পারবে এখানকার যাতায়াতের এই সমস্যাগুলি সমাধান করতে। এ ব্যাপারে পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
তাপস সাহা
শেওড়াফুলি, হুগলি
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।