Coronavirus

সম্পাদক সমীপেষু: মানুষের সঙ্গে কথা?

শেষে কি তা হলে, বাড়ির লোকের সঙ্গে, মানে স্ত্রী, সন্তান, বৃদ্ধ মা-বাবা, এদের সঙ্গে গল্পগুজব করে দিন কাটাতে হবে?

Advertisement
শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২০ ০০:০১
Share:

করোনাভাইরাসের মোকাবিলা করতে গিয়ে এখন সব্বাই গৃহবন্দি হয়ে যাচ্ছে। এবং ক্রমশই প্রকাশ পাচ্ছে, নিজের বাড়িতে মানুষের কিছুই করার নেই! সিনেমা হল বন্ধ, শপিং মল বন্ধ। টিভি খুললে খেলা নেই। সিরিয়াল নির্ঘাত রিপিট শুরু হবে, কারণ শুটিং-ও তো বন্ধ! তা হলে লোকে করে কী? সবাই তো আর নেটফ্লিক্স, অ্যামাজ়ন প্রাইম, এগুলোয় সড়গড় হতে পারেনি। টিভিতে যে খবর দেখব, তারও উপায় নেই, কারণ তাতে সারা ক্ষণ এই অসুখ নিয়ে এত আলোচনা চলছে, কিছু ক্ষণ পরেই মাথা ঝিমঝিম করে মনে হতে বাধ্য, আমার মধ্যে সব ক’টা লক্ষণ দেখা যাচ্ছে করোনাভাইরাস আক্রমণের। হোয়াটসঅ্যাপে আর ফেসবুকেও শুধু এই এক ভাইরাস নিয়ে আলোচনা। বাকি রইল বই পড়া। কিন্তু সে অভ্যাস বহু দিনই চলে গিয়েছে। একটা বড়সড় উপন্যাস খুলে বসলেই মাথা ঝিমঝিম করে। শেষে কি তা হলে, বাড়ির লোকের সঙ্গে, মানে স্ত্রী, সন্তান, বৃদ্ধ মা-বাবা, এদের সঙ্গে গল্পগুজব করে দিন কাটাতে হবে? এদের সঙ্গে চারটে কেজো আলোচনা চলতে পারে, একে বকুনি, তাকে বদমেজাজ দেখানো, এই সব করে গটগটিয়ে অফিস চলে যাওয়া যায়। এরা কথা বলতে এলেই ‘কাজ আছে’ বলে খেঁকিয়ে ওঠা যায়। কিন্তু সত্যি সত্যি বসে গল্প, আড্ডা, মজা করা? পুরনো দিনের স্মৃতি রোমন্থন, নতুন দিনের পরিকল্পনা? অসুখের ঠেলায় নতুন করে জীবন শিখতে হচ্ছে!

Advertisement

মলয় সাহা

কলকাতা-৬৮

Advertisement

রেল দুর্দশা

আমার বয়স সত্তরের বেশি, গত ২২-২ তারিখে আমি পুরুলিয়া-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস ট্রেনের এক সংরক্ষিত কামরার যাত্রী ছিলাম। আমার আসন ছিল জানালার ধারে। জানালার শাটারগুলি খুলে লক করা ছিল, তন্দ্রাজনিত অসাবধানতায় আমার বাঁ হাতের কিছুটা জানালায় রাখা ছিল। হঠাৎ সশব্দে ভারী লোহার শাটারটি বন্ধ হয়ে যায় এবং আমার বাঁ হাতের মাঝের আঙুলের ডগা থেঁতলে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় আমাকে দেখে সহযাত্রীরা কর্তব্যরত টিকিট পরীক্ষকের সাহায্য চাইলে তিনি অক্ষমতা প্রকাশ করেন। প্রায় দু’ঘণ্টা তীব্র যন্ত্রণা ভোগ করে হাওড়া জংশনে পৌঁছবার পর আমাকে সহযাত্রীরা অনেকে ফাস্ট এড সেন্টারে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরতা দুই মহিলা জানান, এই ক্ষতের চিকিৎসা করার ব্যবস্থা তাঁদের জানা নেই। তাঁরা একটি ক্লাবের স্বেচ্ছাসেবক মাত্র। তার পর রেল দফতরের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গেলে সেখানেও কোনও চিকিৎসার সুযোগ না পেয়ে, স্থানীয় দু’জন সুহৃদ যুবকের সাহায্যে হাওড়া জেলা হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগে চিকিৎসা শুরু হয়। এই দীর্ঘ সময় আমার হাত থেকে ক্রমাগত রক্তক্ষরণ হয় এবং তীব্র যন্ত্রণা ভোগ করি।

হাওড়ার মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ জংশন, যেখানে প্রতি দিন লক্ষ লক্ষ মানুষ যাতায়াত করেন, সেখানে সামান্য ক্ষত নিরাময় পরিষেবার ব্যবস্থা নেই দেখে আমি হতবাক হই।

এই ঘটনা থেকে আমার উপলব্ধি, এ বার থেকে ট্রেনে ভ্রমণ করতে হলে সব রকম অঘটনের মোকাবিলা করার ব্যবস্থা সঙ্গে রাখবেন। কারণ ভারতীয় রেল কোনও দায়িত্ব নেবে না।

মনোরঞ্জন বসু

স্কুলডাঙা, বাঁকুড়া

সরকারি খামার

‘বঙ্গে পোস্ত চাষে সায় দিতে শাহকে অনুরোধ মমতার’ (২৯-২) শীর্ষক সংবাদ প্রসঙ্গে এই চিঠি। এ ভাবে পোস্তর দাম অবশ্যই কমতে পারে। এই প্রসঙ্গে জানাই, রাজ্য সরকারের কৃষি দফতরের অধীনে ২১২টি সরকারি কৃষি খামার আছে বিভিন্ন জেলায়। খামারগুলির অধিকাংশেই বর্তমানে তেমন চাষবাস হয় না। অথচ প্রায় প্রতিটি খামারেই ১০০ থেকে ৪০০ বিঘে জমি রয়েছে। এ ছাড়াও রয়েছে পর্যাপ্ত কৃষি শ্রমিক, ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার, সেচের জন্য শ্যালো মেশিন এবং কৃষি বিশেষজ্ঞ অফিসার কর্মী। এত কিছু থাকা সত্ত্বেও সব সরকারি কৃষি খামারই বছরের পর বছর লোকসানে চলেছে। এই খামারগুলিতে পোস্ত চাষ করার পরিকল্পনা করলে, এক দিকে যেমন খামারগুলি লাভজনক হতে পারে, অন্য দিকে এই রাজ্যের মানুষেরা কিছুটা সস্তায় পোস্ত কিনতে পারেন।

তুষার ভট্টাচার্য

কাশিমবাজার, মুর্শিদাবাদ

আউটডোর

করোনাভাইরাসের বিপদ কমাতে জমায়েত থেকে দূরে থাকতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। সরকারি হাসপাতালে আউটডোর টিকিটের জন্য কাউন্টারের সামনে লাইনের জমায়েত বন্ধ করতে না পারলে, দ্রুত রোগ ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে এক একটি মেডিক্যাল কলেজের হাসপাতালে আউটডোর টিকিটের জন্য সকাল আটটা থেকে ন’টা দশটা পর্যন্ত একসঙ্গে প্রায় এক হাজার লোক ঠেসাঠেসি করে দাঁড়িয়ে থাকেন। এক একটি লাইনে দু’টি মানুষের মধ্যে কোনও দূরত্ব প্রায় থাকেই না। অনলাইন টিকিটের ব্যবস্থা চালু হলেও, গ্রামেগঞ্জে ও মফস্সলে তা জনপ্রিয় হয়নি। সাইবার কাফেও টিকিট পিছু দশ টাকা, কুড়ি টাকা নিয়ে নেয়, যেখানে হাসপাতালের টিকিটের মূল্য মাত্র দু’টাকা। সমাধানের উপায় কী? এই আপৎকালীন সময়ে চুক্তির ভিত্তিতে লোক নিয়োগ করে প্রতিটি হাসপাতালের টিকিট কাউন্টার সকাল ৬টায় খুলে টিকিট দেওয়ার ব্যবস্থা হোক। এতে দীর্ঘ লাইন হবে না। যাঁদের কাছেই বাড়ি, তাঁরা টিকিট কেটে অন্য কাজকর্ম সেরে, পরে এসেও ডাক্তার দেখাতে পারবেন। জরুরি ভিত্তিতে টিকিট কাউন্টারের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হলেও ভাল।

শিপ্রা ভৌমিক

চন্দননগর, হুগলি

গোমূত্র পান

‘পবিত্র গোমূত্র প্রসাদম’ পানে করোনাভাইরাস কাছে ঘেঁষতে পারবে না বলে উদ্যোক্তারা দাবি করলেন এবং গোমূত্র-পার্টি হল। আজকাল এ সব শুনে আর আশ্চর্য হই না। বিজেপি ক্ষমতায় আসা ইস্তক প্রতিনিয়ত অবৈজ্ঞানিক ধ্যান-ধারণার প্রচার ও প্রসার ঘটে চলেছে। বিজ্ঞান কংগ্রেসের মঞ্চে দেশি-বিদেশি বিজ্ঞানীদের সামনে বৈদিক উড়ান তত্ত্ব ও মহাভারতের সময় টেস্ট-টিউব বেবির কথা সাড়ম্বরে ঘোষিত হয়েছে। মুম্বইয়ে চিকিৎসকদের সম্মেলনে ‘গণেশের হস্তিমুখ প্লাস্টিক সার্জারির নিদর্শন’ বলে মন্তব্য করেছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। ১০৬তম বিজ্ঞান কংগ্রেসের মঞ্চে দাঁড়িয়ে বিষ্ণুর দশাবতারে বলা বিবর্তন-তত্ত্ব ডারউইন তত্ত্বের চেয়ে উন্নত মানের বলে দাবি করেছেন অন্ধ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য জি নাগেশ্বর রাও। কাউন্সিল অব হিস্টরিক্যাল রিসার্চের মাথায় নিজেদের লোক বসিয়ে মহাকাব্য, পুরাণকে ইতিহাস বলে চালানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। ‘ময়ূরের চোখের জলে গর্ভসঞ্চার’, ‘তিথি নক্ষত্র মেনে মিলনে পুত্র সন্তান লাভ’, ‘গরুর দুধে স্বর্ণরেণু’ জাতীয় বালখিল্য মন্তব্য করার লোকের অভাব হয় না। যুক্তিবুদ্ধি বন্ধক রেখে ‘সব ব্যাদে আছে’ জাতীয় অবৈজ্ঞানিক চিন্তাধারা দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ছে। এই আবহে, গোমূত্র পান করে ব্যাধি রোখার চেষ্টা এতটুকু বেখাপ্পা নয়, আর সেটাই সবচেয়ে শঙ্কার।

সরিৎশেখর দাস

চন্দনপুকুর, ব্যারাকপুর

রাস্তা বিশ্রী

সুরুল গ্রামের জনসংখ্যা ১৩ হাজারেরও বেশি। রাস্তা বলতে সুরুল মোড় থেকে জমিদারদের বড়বাড়ি আধ কিলোমিটারের কম পিচ রাস্তা। দক্ষিণ পাড়ার রাস্তা আরও ভয়াবহ, রাস্তার বদলে ড্রেন বলাই ভাল। সারা বছর ধরে শান্তিনিকেতনের বর্জ্য ও বৃষ্টির জল এই পথ দিয়ে বয়ে যেত। ২০০৫ সালে সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় সাংসদ কোটা থেকে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা ব্যয় করে সারা গ্রামে বড় ড্রেন, সিমেন্টের পথ তৈরি করে দিয়েছিলেন। ১৫ বছর কেটে গিয়েছে, রাস্তার আর সংস্কার হয়নি। কিছু দিন আগে পঞ্চায়েত থেকে যতটুকু অর্থ অনুমোদিত ছিল, তা দিয়ে ৪০ ভাগ রাস্তা এলোমেলো ভাবে সংস্কার হল।

চারুচন্দ্র রায়

সুরুল

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ইমেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement