সরকারি চাকরিরত কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দ সরকারি আবাসনগুলিতে জবরদখলের চিত্র দীর্ঘ দিন ধরেই স্পষ্ট। প্রায় চার দশকের বেশি সময় ধরে বিধাননগর (লবণহ্রদ বা সল্ট লেক) অঞ্চলে সরকারি কর্মীদের জন্য চাকরিকালীন পর্যায়ে থাকার ব্যবস্থাতেও এখন অবৈধ অবস্থানের আঁচড়। কর্মস্থল থেকে দূরে থাকা কর্মচারীদের কর্মস্থলের নিকটবর্তী অঞ্চলে রাখার জন্য তৈরি আবাসনগুলিতে চাকরিরত কর্মচারীরা থাকেন প্রাপ্য বাড়িভাড়া ভাতার বিনিময়ে। সেখানেই অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীদের নামমাত্র স্ট্যান্ডার্ড রেন্টে (গ্রুপ ডি ১২০০ টাকা, গ্রুপ সি ১৬০০ টাকা, গ্রুপ বি ২০০০ টাকা) আবাসন ভোগের সুযোগ দিতে সরকারের প্রতি বছর যে অর্থ ব্যয় হয়, তার পরিমাণ বিশাল।
নিয়মানুযায়ী, এক জন সরকারি কর্মী অবসরের পর তিন থেকে ছয় মাস বিজ্ঞপ্তিকালীন সময়ে এই আবাসনে থাকার সুযোগ পেলেও, তার পর আবাসন ছেড়ে দেওয়া বাধ্যতামূলক। তবু নিয়ম আছে নিয়মেই। অবাধে অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীরা বছরের পর বছর ‘শ্রাবণী’, ‘বৈশাখী’, ‘বিচিত্রা’, ‘ফাল্গুনী’, ‘বনশ্রী’র মতো আবাসন দখল করে আছেন। এঁদের অনেকের অন্যত্র বাসস্থান থাকা সত্ত্বেও আর্থিক ও অন্যান্য সহজলভ্যতার জন্য তাঁদের অন্যায্য অবস্থানের কারণে আবাসনে বসবাসের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বর্তমানে কর্মরত ন্যায্য দাবিদাররা।
তার সঙ্গে রয়েছে অবসরকারীদের সরকারি কোষাগারে ভাড়া জমা দেওয়ার অনীহা। নেই কোনও নজরদারি। উচ্ছেদের ব্যবস্থা কয়েকটি আবাসনে ঘটলেও তা অনিয়মিত। গত ২৫ অগস্ট ‘বনশ্রী’ আবাসনে প্রশাসনের উপস্থিতিতে দশটি পরিবারকে উচ্ছেদের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তিনটি পরিবারকে উচ্ছেদ করা হলেও শেষরক্ষা হয়নি। অদ্ভুত ভাবে বহাল তবিয়তে তাঁরা এখনও আবাসনে বাস করছেন। এই যন্ত্রণা আর কত দিন?
অভিরূপ পাল, কলকাতা-১৩২
উধাও টাকা
গত ৩ সেপ্টেম্বর উত্তর কলকাতার গিরিশ অ্যাভিনিউ পোস্ট অফিস থেকে ৪০০০ টাকার একটি মানি অর্ডার বুক করি সাউথ গড়িয়া পোস্ট অফিসের উদ্দেশে। আজ পর্যন্ত সেটি নির্ধারিত ঠিকানায় পৌঁছয়নি। বহু বার অভিযোগ জানিয়েছি, লিখিত এবং ইমেল-এর মাধ্যমে। পোস্টমাস্টার জেনারেল, পশ্চিমবঙ্গ-কেও জানানো হয়েছে, কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি। শুধু চিঠির মারফত জানানো হয়েছে যে, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। পোস্ট অফিসের সততার উপরে মানুষের আস্থা ছিল। এর পরেও কি তা থাকবে?
ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায় কলকাতা-৪
বিশ্বাসযোগ্য?
কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে mygov.in সাইটে আমার একটি প্রোফাইল রয়েছে। যেখানে বিভিন্ন ধরনের কুইজ়, স্লোগান প্রতিযোগিতা ইত্যাদি অনুষ্ঠিত হয়। পুরোটাই অনলাইনে। গত প্রায় তিন বছর ধরে আমি নিয়মিত কুইজ় এবং স্লোগান প্রতিযোগিতায় যোগদান করে এসেছি এবং এখনও করি। উক্ত প্রোফাইলে আমার নাম, ইমেল, ফোন নম্বর, ছবি ইত্যাদি সম্পূর্ণ তথ্য দেওয়া রয়েছে। গত বছর মে মাসে আমাকে আমার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য দিতে বলা হয়। সেই মোতাবেক আমি আমার সব তথ্য নির্দিষ্ট স্থানে প্রেরণ করি। কিন্তু আজ পর্যন্ত আমার অ্যাকাউন্টে কোনও টাকা ঢোকেনি। ইমেল করা সত্ত্বেও কোনও উত্তর পাইনি। তা হলে তো সাইটটির বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন থেকে যায়! পুরস্কার মূল্য আদৌ পাব কি?
পিনাকী চৌধুরী, কলকাতা-৬১
ঘুষের দাবি
স্বাস্থ্যব্যবস্থায় আমাদের রাজ্যে অবশ্যই বেশ উন্নতি হয়েছে, এ কথা অনস্বীকার্য। তবে কয়েক দিন আগে আমার এক আত্মীয়ের মৃত্যুর পর যে অপ্রীতিকর অভিজ্ঞতা হল, তা যে কোনও সাধারণ মানুষের কাছে অসহনীয়। আমার মাসিমা মাথায় আঘাত পেয়ে একটি সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। ডাক্তারদের অনেক চেষ্টার পরেও তাঁকে বাঁচানো গেল না। নিয়মমতো মৃতদেহ মর্গে পাঠানো হল। ট্রলি-ভাড়া বাবদ টাকা দাবি করলে ২০০ টাকা দেওয়া হয় ওখানকার ওয়র্ড বয়কে। পর দিন এন্টালি থানায় মৃতদেহ নেওয়ার কাগজ নিতে গেলে ওই কাজে নিযুক্ত দুই পুলিশকর্মী অনাবশ্যক দেরি করার পর চা-জলখাবারের পাশাপাশি টাকাও চান। ওই থানা থেকে যে পুলিশকর্মী শুধু ওই কাজের জন্যই হাসপাতালে প্রতি দিন আসেন বলে জানা যায়, তিনি আমাদের কাছে ওঁকে হাসপাতালে পৌঁছে দিতে বলেন গাড়ি ভাড়া করে। যদিও কোনও ভাবে ব্যাপারটা আমি এড়িয়ে যাই। এর পর তিনি আর এক অভাগার অর্থে গাড়ি চড়ে হাসপাতালে আসেন। বিকেলে মৃতদেহ ছাড়ার জন্য এক-এক করে ডাক পড়ে। আগে যাঁরা কাগজ নিয়ে বেরিয়ে আসেন, তাঁদের কাছে শুনলাম ওই পুলিশকর্মী এবং এক হাসপাতাল কর্মী ৫০০ বা ১০০০ টাকা করে যার কাছে যা পাচ্ছেন, তা নিচ্ছেন। আমার সময়েও আমাকে টেবিলের অপর প্রান্তে বসা এক জনকে দেখিয়ে ২০০ টাকা দিতে বলা হয়। হাসপাতালের নীচের তলায় মৃতদেহ সংগ্রহ করার সময়েও ৫০০০ টাকা দাবি করা হয়। হাসপাতাল কর্মীদের অন্যায্য দাবি মানতে অস্বীকার করলে তাঁরা মৃতদেহ ছাড়তে ইচ্ছাকৃত ভাবে দেরি করতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত ২০০০ টাকা দিয়ে মৃতদেহ নেওয়ার অনুমতি পাওয়া যায়।
শুনলাম দূরবর্তী জেলাগুলি থেকে আসা অনেক সরকারি বা পুলিশকর্মীদেরও ৪০০০-৫০০০ টাকা দিতে বাধ্য করা হয়। বেসরকারি শববাহী গাড়িও মর্গের আশেপাশে পাওয়া গেল বিস্তর দামাদামির পর। রাজ্য প্রশাসনকে এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার অনুরোধ করছি, যাতে আর কেউ এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন না হন।
অনির্বাণ ভট্টাচার্য, কলকাতা-৬১
ভাতা পাইনি
আমি অশীতিপর বৃদ্ধা। এক সময় চরম দারিদ্রের মধ্যে সন্তানদের বড় করেছি। আজ তারা সুপ্রতিষ্ঠিত। ওদের আপত্তি সত্ত্বেও আমি এ পর্যন্ত দশ বারের বেশি বিধবা ভাতা ও বার্ধক্য ভাতার জন্য আবেদন করেছি। কারণ, আমি মনে করি এই দু’টির মধ্যে যে কোনও একটি ভাতা আমার হকের পাওনা। গ্রাম প্রতিনিধি, গ্রাম প্রধান এবং গ্রামের নেতারা বার বার আশ্বস্ত করেছেন টাকাটা আমি পেয়ে যাব। কিন্তু এখনও আমার ভাগ্যে শিকে ছেঁড়েনি। আমার পরের আবেদনকারীরা সবাই টাকা পেলেও আমার অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকেনি। এ বারে দুয়ারে সরকার-এ আবেদন করতে গেলে আমাকে জানানো হল, আর আবেদন করতে হবে না, টাকা পেয়ে যাব। কিন্তু তা-ও টাকা পাইনি। রাজ্য প্রশাসনকে আমার এই ভাতা না পাওয়ার বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে সুষ্ঠু সমাধানের জন্য আবেদন করছি।
সন্ধ্যা পতি বড়রসুলপুর, পূর্ব মেদিনীপুর
ঊর্ধ্বমুখী বিল
‘চড়া বিদ্যুৎ বিলের অভিযোগে বহাল চাপানউতোর’ (১৪-৯) খবরে দেখলাম বিদ্যুৎমন্ত্রী বিদ্যুৎ বিলের হার সম্পর্কে জানিয়েছেন যে, রাজ্যে ২০১৬ সালে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ছিল ৭.১২ টাকা। আজ আট বছর পরেও তা-ই রয়েছে। মনে হয় তথ্যটি ঠিক নয়। কারণ এ বছর জুন, জুলাই, অগস্ট মাসের একত্রিত যে বিদ্যুৎ বিল আমি পেয়েছি, সেখানে বিলের হার ক্রমানুযায়ী ঊর্ধ্বমুখী। আমার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ হার ৯.২২ টাকা। প্রসঙ্গত, আমাদের বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থা ডব্লুবিএসইডিসিএল।
মনোজিৎ বন্দ্যেপাধ্যায় ডানকুনি, হুগলি