মঞ্জুল আনসারি, মাত্র ১২ বছরের বালক ইমতেয়াজ খান, আসগর আনসারি, তবরেজ আনসারি... তালিকার অন্ত নেই! গত পাঁচ বছরে একের পর এক নিরীহ অসহায় মানুষ ঝাড়খণ্ডের বুকে রক্ত মেখে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন। স্বনিযুক্ত ‘গোরক্ষক’ ও সাম্প্রদায়িক গুন্ডাদের শিকারেরা প্রায় সকলেই ধর্মীয় সংখ্যালঘু, দলিত বা হতদরিদ্র। আর তারই সঙ্গে স্মরণে রাখতে হবে ‘ভাল দিন’-এর দ্বিতীয় ইনিংসের সূচনাতেই জামশেদপুরের নাট্যকর্মী জিতরাই হাঁসদা-র (ছবিতে) আকস্মিক গ্রেফতার, দু’বছর আগের এক ফেসবুক পোস্টের জন্য, যেখানে তিনি আদিবাসীদের গোমাংস-ভক্ষণের অধিকারের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন! আমরা কে কী খাদ্য গ্রহণ করব, কে কোন মতামত পোষণ করব— সব কিছু ‘ওঁরা’ নির্ধারণ করে দেবেন! নচেৎ ...
আর যারা এই নিরন্তর গা-জোয়ারি ও ধর্মীয় উন্মত্ততার প্রচ্ছন্ন সমর্থনকারী, বা যাদের ‘রাজত্ব’-এর দরুন এই মস্তান-বাহিনীর চূড়ান্ত বাড়বাড়ন্ত হয়েছিল ঝাড়খণ্ডে; রাঁচীর মসনদ থেকে সেই অপশক্তির গণতান্ত্রিক বহিষ্কারের ফলে, নিশ্চয়ই সে রাজ্যে আবার সুস্থ সামাজিক পরিবেশ ফিরে আসবে।
কাজল চট্টোপাধ্যায়
ইমেল মারফত
ও-পারের মিষ্টি
‘মিষ্টিপাত’ (২৩-১২) ক্রোড়পত্রে শিশির রায় ‘আমি তোমায় ভালবাসি’ লেখায় ও-পার বাংলার মিষ্টি নিয়ে আলোকপাত করেছেন। লেখায় অনেক বিখ্যাত মিষ্টির উল্লেখ থাকলেও, ঢাকার বিখ্যাত মরণচাঁদের মিষ্টি দইয়ের উল্লেখ নেই। মরণচাঁদের মিষ্টির দোকানে মিষ্টি দই বাংলাদেশে খুবই প্রসিদ্ধ। দই এতটাই জমাট বাঁধা যে, হাঁড়ি উল্টে দিলেও দই পড়ে যায় না। ছোটবেলায় (১৯৭৭-৭৮ সালে) মরণচাঁদের দই অনেক খেয়েছি এবং তার অতুলনীয় স্বাদ এখনও ভুলিনি।
তা ছাড়া দুই বাংলার মিষ্টির নামেও কিছু তফাত আছে। যাকে আমরা এ-পার বাংলায় বলি লেডিকেনি বা পান্তুয়া, তা ও-পার বাংলায় লালমোহন নামে পরিচিত। আবার যাকে আমরা দানাদার বলি, ও-পার বাংলায় তা রসমঞ্জরী নামে পরিচিত। বড় সাইজের রসগোল্লাকে ও-পার বাংলায় বলে ক্ষীরমোহন, যেটা এখানে রাজভোগ নামে পরিচিত। যার ভিতরে ক্ষীরের ছোট্ট পুঁটলি থাকত। বাদশাভোগ বলে একটা মিষ্টি বেশ প্রচলিত ছিল। যা রসগোল্লার উপাদানেই তৈরি। তবে রসগোল্লার মতো গোল নয়। বেশ বড় সাইজের চ্যাপ্টা আকৃতির। মিষ্টির সাইজ এতোটাই বড় যে সেই সময় এক টাকা মূল্যের একটা কি দুটো বাদশা ভোগ খেলেই পেট ভরে যেত।
অতীশচন্দ্র ভাওয়াল
কোন্নগর, হুগলি
রাজশাহির
আপনারা জানিয়েছেন, রসকদম্ব মালদহের মিষ্টি, কিন্তু আমি যত দূর জানি, ওটি রাজশাহির মিষ্টি। জোড়া মন্ডা আর দেবেন সুরের টিল-এর খাজাও রাজশাহির। এবং কাঁচাগোল্লাও।
পরিমল দাশগুপ্ত
ইমেল মারফত
নিখুঁতি? গুজিয়া?
আচ্ছা, আপনারা জিলিপিকে মিষ্টি বলে গণ্যই করেন না, তাই না? কিন্তু জানেন, কচুরির সঙ্গে এই জিলিপি ছাড়া আর কোনও মিষ্টিই মানায় না! বোঁদেকেও ধর্তব্যের মধ্যে আনেননি! আগে বিয়েবাড়িতে শেষপাতে মিষ্টি দই-এর সঙ্গে গরম বোঁদে পরিবেশন করা হত। অমৃত!
তবে ‘বাংলার মিষ্টি মানচিত্র’-এ শক্তিগড়ের ল্যাংচার নাম না থাকাটা অপরাধ! শান্তিনিকেতন যেতে জিটি রোডের ধারে ল্যাংচা ভবন, ল্যাংচা ঘর, ল্যাংচা কুটীর ইত্যাদি ঢাউস সাইজের মিষ্টির দোকানগুলির কোনও একটার সামনে গাড়ি দাঁড় করিয়ে রসনা এবং মনকে তৃপ্ত করেননি, এমন বেরসিক বাঙালি খুঁজে পাওয়া মুশকিল। যদিও লেখার শেষে ‘পুনশ্চ’তে শক্তিগড়ের ল্যাংচার উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু পুরুলিয়ার ‘নিখুঁতি’? তার উল্লেখ কই?
এ বার বাঙালি জীবনে ক্ষুদ্রতম একক মিষ্টির নামটি বলি, যাকে আপনারা কেমনে ছিলেন ভুলে! সে হল আমার মতো মধ্যবিত্ত বাঙালির ছোটবেলার অকপট সঙ্গী— গুজিয়া। বারোয়ারি পুজোই হোক বা বাড়ির পুজো, প্রসাদ হিসেবে গুজিয়ার উপর ছোটদেরই ছিল একচ্ছত্র অধিকার। ছোটবেলায় দেখেছি পাঁচ পয়সায় একটি। এখন কত দাম জানি না।
সোমনাথ রায়
কলকাতা-১৫
রসিকতা
ডায়াবিটিসে আক্রান্ত মানুষদের সঙ্গে কী রসিকতা করলেন আপনারা! ‘মিষ্টিপাত’-এ লেখা আর ছবিগুলো দেখে দীর্ঘশ্বাস ফেলা আর হিংসে করা ছাড়া কী-ই বা উপায় এই মানুষগুলোর? অবশ্য ভরসা এই, এমন মানুষও অাছেন, যাঁরা স্লগ ওভারে চালিয়ে ব্যাটিংয়ের মতো, অনুষ্ঠান বাড়িতে মিষ্টি খেয়ে বলবেন, ‘‘আরে ভাই, ওষুধও খাব, মিষ্টিও।’’
অরূপরতন আইচ
কোন্নগর, হুগলি
আজগুবি নয়
আমার এক সহকর্মীর সম্প্রতি এক অদ্ভুত অভিজ্ঞতা হয়েছে। তাঁর এক নিকটাত্মীয়, নব্বই শতাংশ হার্টব্লক সমস্যায় পীড়িত ছিলেন। সহকর্মীটি প্রথমে এ রাজ্যের একটি বিখ্যাত নার্সিং হোমে যান। তারা দু’ধরনের প্যাকেজের কথা জানায়। বাইপাসে তিন লক্ষ, ওপন-হার্ট সার্জারিতে দু’লক্ষ।
খরচে না পোষানোয়, রোগী সমেত উনি বেঙ্গালুরুর একটি নার্সিং হোমে যোগাযোগ করেন। তাদের প্যাকেজ, বাইপাসে মাত্র পঁচাশি হাজার টাকা। যথাসময়ে সফল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। ম্যানেজমেন্ট বলে, কেবল পঁয়ষট্টি হাজার টাকা দিলেই চলবে। কারণ, ‘‘যতটা ভেবে প্যাকেজ বলা হয়েছিল, বাস্তবে তা খরচ হয়নি। তাই...’’
বাংলায়, এই সততা স্বপ্নেও ভাবা যায় না!
পার্থ পাল
মৌবেশিয়া, হুগলি
শব্দার্থ
সেপ্টেম্বরে এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে দু’টি ফিক্সড ডিপোজ়িট করি। ফর্মে বিভিন্ন কলম পূরণের সঙ্গে, নমিনির নামও পূরণ করি। ব্যাঙ্ক কর্তৃক প্রদত্ত সার্টিফিকেটেও তার উল্লেখ যথাযথ। কিন্তু ১৮ ডিসেম্বর ফোনে দুটো মেসেজ আসে ‘‘প্লিজ় রেজিস্টার ইয়োর নমিনেশন ইন ইয়োর অ্যাকাউন্ট’’, সঙ্গে অ্যাকাউন্ট নম্বর। তড়িঘড়ি ব্যাঙ্কে গেলাম। আমার মতো অনেকেই তখন জড়ো হয়েছেন। অনেকেই বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, দাঁড়াতে কষ্ট হচ্ছে, চোখেমুখেও একরাশ উৎকণ্ঠা। ব্যাঙ্ক আধিকারিক আমাদের সবাইকে উত্তর দিলেন, ‘‘ওটা হোলসেল মেসেজ, সকলের জন্য নয়’’!
দীননাথ চক্রবর্তী
দুইলা, হাওড়া
অশ্বিন
এই গোটা দশকে ক্রিকেটের সব ফর্ম্যাট মিলিয়ে সবচেয়ে বেশি উইকেট নিয়েছেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন (৫৬৪)। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় টুইট করেছেন অভিনন্দন জানিয়ে, অশ্বিন সম্পর্কে লিখেছেন, ‘...গোজ় আননোটিসড অ্যাট টাইমস’। সত্যিই। এত বড় এক জন বোলার এখন ভারতের পঞ্চাশ ওভারের আর কুড়ি ওভারের খেলায় দলেই থাকেন না, ‘কুল-চা’ জুটিকে নিয়েই সবাই উচ্ছ্বসিত।
অবশ্য যে দল বিশ্বকাপ ফাইনালে (২০০৩) কুম্বলেকে বাদ দিয়ে নামতে পারে (অধিনায়ক ছিলেন সৌরভ!), সে দলের পক্ষে সব রকম নিরীক্ষাই সম্ভব। মনে রাখতে হবে, অশ্বিনই ভারতীয় বোলারদের মধ্যে দ্রুততম ৫০, ১০০, ১৫০, ২০০, ২৫০, ৩০০ উইকেট নিয়েছেন! এ বার নতুন পরিসংখ্যানের দৌলতে হয়তো তাঁর প্রতি মনোযোগ বাড়বে।
সুমঙ্গল বসু
কলকাতা-৬৮