Teachers' Day

সম্পাদক সমীপেষু: জেনে রাখা ভাল

যে দুই খণ্ডের ‘ইন্ডিয়ান ফিলজফি’ গ্রন্থের জন্য রাধাকৃষ্ণণের প্রসিদ্ধি, অভিযোগ উঠেছিল যে, সেটি আদপেই তাঁর লেখা নয়। সেটি নাকি লিখেছিলেন যদুনাথ সিংহ (১৮৯২-১৯৭৮)

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০০:০০
Share:

সর্বপল্লি রাধাকৃষ্ণণের জন্মদিবসটি শিক্ষক দিবস হিসেবে সারা দেশে পালিত হয়। কিন্তু আমাদের একটি ঘটনার কথা জেনে রাখা উচিত। যে দুই খণ্ডের ‘ইন্ডিয়ান ফিলজফি’ গ্রন্থের জন্য রাধাকৃষ্ণণের প্রসিদ্ধি, অভিযোগ উঠেছিল যে, সেটি আদপেই তাঁর লেখা নয়। সেটি নাকি লিখেছিলেন যদুনাথ সিংহ (১৮৯২-১৯৭৮)।

Advertisement

যদুনাথ ১৯১৭ সালে এমএ পাশ করার পর, তাঁর গবেষণাপত্রের প্রথম খণ্ড ১৯২২ সালে এবং দ্বিতীয় খণ্ড ১৯২৩ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রেমচন্দ রায়চন্দ স্কলারশিপের আবেদনের সঙ্গে জমা দিয়েছিলেন। অভিযোগ: এই গবেষণাপত্রের দ্বিতীয় খণ্ড থেকেই অনেকটা নকল করে, রাধাকৃষ্ণণ গ্রন্থাকারে ১৯২৭ সালে লন্ডন থেকে স্বনামে প্রকাশ করেন। ওই সময়ে রাধাকৃষ্ণণ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চপদে কর্মরত ছিলেন। যদুনাথ তাঁর অসাধারণ মেধা ও পাণ্ডিত্যের জন্য ১৯২৩ সালে গ্রিফিথ পুরস্কার, ১৯২৪ সালে মোয়াট মেডেল ও তার আগে ১৯১৫-১৬ সালে ক্লিন্ট মেমোরিয়াল ও ফিলিপ স্মিথ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন।

রাধাকৃষ্ণণ গ্রন্থটি লন্ডন থেকে প্রকাশ করার বেশ কিছু দিন পর তা যদুনাথের নজরে আসে। তাঁর মতে, বইটির অনেকটা অংশ তাঁর গবেষণাপত্রের হুবহু নকল। তিনি ১৯২৯ সালের ২২ অগস্ট কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেন। যদুনাথকে নানা ভাবে সহযোগিতা করেন ‘প্রবাসী’ ও ‘মডার্ন রিভিউ’ পত্রিকার সম্পাদক রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়।

Advertisement

অনেক দিন মামলা চলার পর, একটা ‘আউট অব কোর্ট সেট্‌লমেন্ট’ করা হয়। অনেকে বলেন, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তদানীন্তন উপাচার্য শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় যদুনাথের উপর চাপ সৃষ্টি করেন, যাতে তিনি মামলা প্রত্যাহার করে নেন।

আমাদের মনীষীপূজার দেশে, এগুলো জেনে রাখলে মন্দ হয় না।

শ্যামল মৈত্র

ব্যারাকপুর

উদ্দালক

‘পিঠ পেতে ত্রাণে নয়া উদ্দালক’ (২১-৮) শীর্ষক সংবাদে কেরলের গ্রামে বন্যাদুর্গতদের উদ্ধারকার্যে কেপি জয়সল ও তাঁর ১৪ জন সঙ্গীর অসমসাহসিকতার বর্ণনা প্রসঙ্গে জয়সলকে পুরাণোক্ত ‘উদ্দালক’ নামক এক মুনিশিষ্যের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, ছান্দোগ্য উপনিষদ অনুযায়ী ধৌম্য ঋষির এক শিষ্যের নাম ছিল ‘আরুণি’— যিনি গুরুর আদেশ পালন করতে গিয়ে প্রবল বৃষ্টিতে খেতের আল থেকে বেরিয়ে যাওয়া জলের স্রোত আটকাতে বারে বারে ব্যর্থ হয়ে শেষে ওই জলনির্গমনপথে নিজেই শুয়ে পড়েছিলেন। উদ্দালক ছিলেন আরুণির পুত্র ও শ্বেতকেতুর পিতা।

সমর গঙ্গোপাধ্যায়

কলকাতা-৪৮

সম্পাদকের উত্তর: আরুণি ও উদ্দালক একই ব্যক্তি। ঋষি আয়োধধৌম্যের শিষ্য আরুণি গুরুর আদেশে খেতের আল বাঁধতে গিয়ে তা না পারায় জল নির্গমন আটকাতে নিজেই সেখানে শুয়ে পড়েন। পরে গুরু এসে তাঁর নাম ধরে ডাকতে আরুণি গুরুর কাছে এসে উপস্থিত হন। গুরু সব শুনে প্রীত হয়ে তাঁকে আশীর্বাদ করেন ও আল বিদারণ করে, কেদারখণ্ড ভেদ করে উঠেছিলেন বলে আরুণির নাম দেন ‘উদ্দালক’। আরুণি তথা উদ্দালকেরই পুত্র হলেন শ্বেতকেতু।

অনাহার

‘‘পুরুলিয়ায় ‘অনাহার’ ও একগুচ্ছ প্রশ্ন’’ (১৯-৮) সংবাদ প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদপত্র। সংবাদে লেখা হয়েছে, বিমলা পান্ডে নাম্নী পুরুলিয়া জেলার ঝালদা ২নং ব্লকের বামনিয়া-বেলাডি পঞ্চায়েতের অন্তর্গত লাগাম গ্রামের বাসিন্দা এক প্রৌঢ়া গত ৯ অগস্ট ২০১৮ তারিখে অনাহারে মারা গিয়েছেন। সংবাদটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। রাজ্য সরকার এই ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ করছে।

এ প্রসঙ্গে পুরুলিয়ার জেলাশাসক জানিয়েছেন যে, মহকুমা খাদ্য নিয়ামক, ঝালদা ২নং ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক ও ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক বৃদ্ধার বাড়ি পরিদর্শন করেছেন। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের মত অনুযায়ী, ওই বৃদ্ধা বার্ধক্যজনিত কারণে ও ডায়রিয়ায় মারা গিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে আরও জানাই যে, বৃদ্ধার পুত্র শ্রী অভির পান্ডে তাঁর ১৫ অগস্ট ২০১৮ তারিখে পুরুলিয়ার জেলাশাসককে লেখা চিঠিতে এই তথ্য সমর্থন করেছেন এবং তিনি আরও জানিয়েছেন যে, বিভিন্ন গণমাধ্যম তাঁর মায়ের মৃত্যু নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্য করছে।

এমন একটি সংবেদনশীল বিষয়ে এ জাতীয় বিভ্রান্তিকর সংবাদ পরিবেশন সাধারণ মানুষের মধ্যে অযথা উদ্বেগ সৃষ্টি করতে পারে।

মিত্র চট্টোপাধ্যায়

তথ্য অধিকর্তা

তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ

পশ্চিমবঙ্গ সরকার

প্রতিবেদকের উত্তর: খবরে স্বাস্থ্য দফতর এবং অভির পান্ডের বক্তব্য ছাপা হয়েছে। অভির প্রতিবেদকের কাছে দাবি করেছিলেন, তিনি ভিক্ষায় বেরোতে না পারায় খাবার জোগাড় করতে পারেননি। তাই অনাহারে তাঁর মা বিমলা পান্ডে মারা গিয়েছেন। পরিবারটি যে ওই মৃত্যু পর্যন্ত সরকারি সাহায্য পায়নি, তা-ও অভির এবং স্থানীয় প্রশাসনের কাছ থেকে জানা গিয়েছে। তা নিয়ে প্রশ্ন তোলাই উদ্দেশ্য ছিল প্রতিবেদকের।

জীবন বিমা

সদ্য প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় সম্পর্কে ‘জীবন বিমা করিয়ে পেনশন প্রণবের’ (৩০-৮) শীর্ষক সংবাদের কিছু তথ্যের সংশোধন প্রয়োজন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ভারতীয় জীবন বিমা নিগমের তরফে আমি সিনিয়র অফিসার হিসেবে এই পুরো পরিকল্পনা এবং তার রূপদানের পুরোধা ছিলাম। দেবাশিস দত্ত সহকারী হিসেবে ছিলেন।

প্রথমত মনে রাখতে হবে, এলআইসি সবার জন্য সমান সুবিধে দিয়ে থাকে। তাই প্রণববাবুর বয়সের অন্য কেউ ‘জীবন অক্ষয়’ নামের যোজনাতে একই অর্থ জমা দিলে, ওঁর মতোই ত্রৈমাসিক একই পরিমাণ পেনশন সঙ্গে সঙ্গে পেতে থাকবেন আজীবন এবং ওঁর পরে পুরো টাকাটা অপশন ‘এফ’-এ নমিনিকে ফেরত দেওয়া হবে। ইচ্ছে করলে এই প্ল্যানে কেউ মাসিক, অর্ধবার্ষিক বা বার্ষিক পেনশন এবং স্ত্রী বা স্বামীর জন্যও অপশন ‘জে’-তে পেনশন নিতে পারবেন। ৩০ বছর থেকে ১০০ বছর বয়সের যে কোনও ভারতীয় নাগরিক এলআইসি থেকে ‘জীবন অক্ষয়’ প্ল্যানটি নিতে পারবেন।

স্বাধীন ভারতের প্রথম এবং মাঝামাঝি সময়েও মানুষের গড় আয়ু কম থাকায়, পেনশন পরিকল্পনার প্রয়োজন ততটা ছিল না। কিন্তু বর্তমানে ভারতের গড় আয়ু সত্তর বছরের ওপর চলে যাওয়া সত্ত্বেও পেনশন সুবিধার আওতার বাইরে নব্বই শতাংশেরও বেশি জনগণ আছেন। এই ব্যাপারে সচেতনতা বাড়াবার জন্যই এক জন প্রবীণ অর্থনীতিবিদ হিসেবে প্রণববাবু এই পেনশন যোজনাটি নিয়েছেন বলে মনে হয়।

ভবিষ্যতের আত্মনির্ভর, সম্মানজনক জীবন সবার জন্য হতে পারে, যদি কেউ ঠিক সময় পেনশন পরিকল্পনা করেন।

কৌশিক ঘোষ

সিনিয়র বিজ়নেস অ্যাসোসিয়েট

লাইফ ইনশিয়োরেন্স কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া

প্রতিবেদকের উত্তর: পেনশন স্কিমটি নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর জন্যই যে প্রণব মুখোপাধ্যায় যোজনাভুক্ত হয়েছেন, তা প্রতিবেদনে বিশেষ ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। পত্রলেখক যাঁকে এই গোটা পরিকল্পনাটি রূপদানের ক্ষেত্রে নিজের সহায়ক হিসাবে উল্লেখ করেছেন, সেই দেবাশিস দত্তের মাধ্যমেই আমরা প্রথম সংবাদটি পাই। দেবাশিসবাবুর জবানি এবং বক্তব্য অনুযায়ীই এই স্কিম-এর বিষয়ে লেখা হয়েছে।

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।

ইমেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement