গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
জন্ম সূত্রে উত্তর কলকাতার বাসিন্দা আমি।আমার স্বামী কর্মসূত্রে মার্কিন মুলুকের মিনেসোটা রাজ্যে থাকেন। তাই এখানেই বাস করছি আমি আট বছর ধরে।হাড় কাঁপানো শীতের দেশ এই মিনেসোটা। বছরে আট মাসই বরফে ঢাকা!এত ঠান্ডা যে ঘর থেকে বেরোনো দায়। তাই এখানকার সকলে এই চার মাস গরম কালের আশায় বসে থাকে।
এই একমাস আগেও সবাই কত পরিকল্পনা করেছিল কেমন করে এই বসন্ত কাটাব আমরা? কিন্তু আজ সবাই ঘরবন্দি। করোনাভাইরাসকে আটকাতে গভর্নর ১০ এপ্রিল অবধি লকডাউন ঘোষণা করেছেন। হয়ত বাড়বে এই সময় সীমা। কে জানে?
আজ একমাস হয়ে গেল, আমরা বাড়িতে থেকেই অফিসের কাজ সামলাচ্ছি। ৬০০-র বেশি মানুষ এই মারণ ভাইরাসের সংক্রমণের কবলে। মৃতের সংখ্যা ১৭। প্রশাসন সকলকে ঘরে থাকতে বলেছে, বলেছে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য। রেস্টুরেন্ট আর পাব বন্ধ। টেক এয়োয়ে খোলা।স্বস্তির কথা এ রাজ্যে জনসংখ্যা কম, আর মানুষ অনেক বেশি সচেতন। আজ খবরে শুনলাম লকডাউন এর ঘোষণার পর রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা ৭৯ শতাংশ কমেছে।
ডাউন টাউন মিনিয়াপোলিস জন মানব শূন্য।থমথমে! মনে করিয়ে দিচ্ছে বিখ্যাত উইল স্মিথের ছবি ‘‘আই এম লেজেন্ড’’-এর কথা।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী মিনেসোটায় আই সি ইউ বেড এর সংখ্যা ১৫০০, তাই আগামী তিন দিনে এই বেড বাড়িয়ে ২০০০ হচ্ছে ।
এখন এখানে হাল্কা গরম। অন্যান্য বছর হলে এখন সংগঠনের লোকেরা গাছ লাগিয়ে, নতুন ঘাস বিছিয়ে যেত। এ বছর তাদের দেখা পাওয়া দায়!
দেশ থেকে বহুদূরে আমরা। মা বাবা একা কলকাতায়। চিন্তা আর আতঙ্কে আছি। এখন তো প্রয়োজনেও দেশে ফেরা যাবে না। সবাই সাবধানে থাকুন, ঘরে থাকুন। এই মারণ ভাইরাসের একটাই মন্ত্র, ঘরে থাকা। আশা করি খুব তাড়াতাড়ি এই দুর্দিন সরে গিয়ে আশার আলো দেখা দেবে।
সুকন্যা মল্লিক, মিনিয়াপোলিস, মিনেসোটা, আমেরিকা
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)