lockdown

সদ্য দাবানল পেরনো অস্ট্রেলিয়া কিন্তু দ্বিতীয় বার ভুল করেনি

এই লকডাউন পরিস্থিতিতে পাঠকদের থেকে তাঁদের অবস্থার কথা, তাঁদের চারপাশের অবস্থার কথা জানতে চাইছি আমরা। সেই সূত্রেই নানান ধরনের সমস্যা পাঠকরা লিখে জানাচ্ছেন। পাঠাচ্ছেন অন্যান্য খবরাখবরও। সমস্যায় পড়া মানুষদের কথা সরকার, প্রশাসন, এবং অবশ্যই আমাদের সব পাঠকের সামনে তুলে ধরতে আমরা মনোনীত লেখাগুলি প্রকাশ করছি।চায়না টাউনের অনুষ্ঠানে গিয়ে দেখলাম বেশ অনেকেই মুখে মাস্ক ঢাকা দিয়ে ঘুরছেন, তাঁদের বেশির ভাগই চিনা ।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২০ ১৭:৩২
Share:

গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।

তারিখটা ঠিক মনে করতে পারছি না। বোধহয় জানুয়ারির ২৫ হবে। লুনার নিউ ইয়ারের অনুষ্ঠান দেখতে আমরা(আমি, আমার স্বামী শুভ ও আমাদের ছেলে)হাজির হয়েছিলাম সিডনির বিখ্যাত সিবিডির চায়না টাউনে। এর কিছু দিন আগে থেকেই শুভ ও অন্য বন্ধুবান্ধবদের মুখে চিনের উহান প্রদেশে করোনাভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া এবং তার থেকে মানুষের সংক্রমণের কথা কানে আসছিল । শুভ প্রায় রোজই অফিস থেকে ফিরে করোনা সংক্রান্ত নানা খবরাখবর দিত। আমি তখন বলতাম ‘‘আমাদের আনন্দবাজারে (আনন্দবাজার পত্রিকা) তো সে রকম কোন খবর পাচ্ছি না।’’ অর্থাৎ বিষয়টিকে তখনও আমি অতটা প্রাধাণ্য দিতে রাজি ছিলাম না।

Advertisement

তবে চায়না টাউনের অনুষ্ঠানে গিয়ে দেখলাম বেশ অনেকেই মুখে মাস্ক ঢাকা দিয়ে ঘুরছেন, তাঁদের বেশির ভাগই চিনা । সে দিন আমরা ওই ভিড়ে বেশি ক্ষণ না থেকে ফিরে আসার সিদ্ধান্তই নিয়েছিলাম। এর পর ধীরে ধীরে ছবিটা বদলাতে শুরু করল। ক্রমে দেখলাম, ‘আনন্দবাজার পত্রিকা’-র হেডলাইনে স্থান করে নিল করোনা। চিনের পর একে একে ইতালি, স্পেন,আমেরিকা ইংল্যান্ডের ভয়াবহ পরিণতি ভিড় করে আসতে লাগল চোখের সামনে। নিউ সাউথ ওয়েলসের (যেখানে আমরা থাকি) গণমাধ্যমেও করোনা সংক্রান্ত খবর প্রাধান্য পেতে শুরু করল এবং মানুষও সচেতন হতে লাগল।মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে শুভদের শুরু হল ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’। ছেলেকেও পাবলিক বাসে স্কুলে যাওয়া-আসা বন্ধ করলাম। রাস্তাঘাটে লোকজনের সংখ্যাও কমতে লাগল দ্রুত। বেশির ভাগ মানুষের মুখেই মাস্ক। একে একে সমস্ত সামাজিক অনুষ্ঠানগুলো বন্ধ হতে লাগল। অস্ট্রেলিয়া সরকার ধীরে ধীরে নানা রকম সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিতে শুরু করল।

সদ্য দাবানল-বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠা অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় বার ভুল করেনি।তাই হয়তো সিডনি তথা সমগ্র অস্ট্রেলিয়ায় কোভিড-১৯ সে ভাবে থাবা বসাতে পারেনি। এর মধ্যেও কিছু নিয়ম-শৃঙ্খলা ভাঙা মানুষজন ও ভিন দেশ থেকে আসা পর্যটকদের জন্য সরকার আরও কঠোর নীতি গ্রহণ করেছে। বর্তমানে রাস্তায় দু’জনের বেশি একসঙ্গে যাওয়া নিষেধ, নতুবা মোটা টাকা জরিমানার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া সরকারের প্রথম থেকেই বুদ্ধিদীপ্ত পদক্ষেপ প্রশংসার দাবি রাখে। এখানে এখনও লকডাউন চলছে। সকলেই এ নিয়ে খুব সচেতন। আশা করা যায় এর পরিণতি ইতালি, ইংল্যান্ড কিংবা আমেরিকার মতো হবে না।

Advertisement

মিতালি রায়

সিডনি, অস্ট্রেলিয়া

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement