‘মা উড়ালপুল থেকে নীচে পড়ে মৃত বাইকআরোহী’ (৫-৯) শীর্ষক খবরটি বেদনাদায়ক। প্রসঙ্গত, এই ঘটনার মাত্র দু’দিন আগে ওই উড়ালপুলে দু’টি গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়, আহত হন দু’জন। বেশ কয়েক বছর ধরেই লক্ষ করা যাচ্ছে যে, এই ধরনের উড়ালপুলগুলির উপরেই বেশির ভাগ দুর্ঘটনা ঘটছে। ‘দুর্ঘটনা-চিত্র’ (৬-৯) শীর্ষক সম্পাদকীয় থেকে আমরা জানতে পারি যে, ২০২২ সালে জাতীয় সড়কে পথ-দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল ৬১,০৩৮ জনের। ৭৫ শতাংশ মৃত্যুর জন্যই দায়ী তীব্র গতি। আবার এক গবেষণার ফলে এই তথ্যও উঠে এসেছে যে, ওই বছরেই দ্বিচক্রযান দুর্ঘটনার কারণে প্রায় ৫০,০০০ হেলমেটহীন ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। যদিও হেলমেট পরিহিত অবস্থাতেও যে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হতে পারে, মা উড়ালপুলের ঘটনাটি তারই অন্যতম উদাহরণ। তবে এই সব দুর্ঘটনার সঙ্গে যুক্ত করা যায় সাইলেন্সার পাইপ নিষ্ক্রিয় করে বা ইচ্ছাকৃত ভাবে উচ্চনাদে এক শ্রেণির যুবকের বাইক নিয়ে মাতামাতি, যা বিশেষত সন্ধ্যার সময় বা অধিক রাত্রে বেশি দেখা যায়। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে বেশ কিছু অঞ্চলে দিন দিন বাড়ছে এমন দৌরাত্ম্যের মাত্রা। তবে এখানেই শেষ নয়। বেশ কয়েক বছর হল খাবার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস সরবরাহকারী কোম্পানিগুলির ব্যবসা বেড়েছে। এখানে কর্মরত ডেলিভারি এগজ়িকিউটিভরা তাঁদের কাজের দৌলতে প্রায়শই বাধ্য হন মাত্রাতিরিক্ত গতিবেগে বাইক চালাতে। ফলে বর্তমানে রাস্তাঘাটে শুধুমাত্র গাড়ি চালানোই নয়, পথচারী ও প্রবীণ নাগরিকদের পক্ষে পথে চলাফেরা করা দুষ্কর হয়ে উঠেছে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা তথা পশ্চিমবঙ্গের ট্র্যাফিক পুলিশের কাছে অনুরোধ, অতি সত্বর একটি উপায় বার করা হোক যাতে এই ধরনের আত্মঘাতী এবং বিপজ্জনক আচরণ বা কার্যকলাপ বন্ধ করা যায়। সন্ধ্যার পর অঞ্চল নির্বিশেষে সতর্ক থাকুক ট্র্যাফিক পুলিশ। উচ্চ গতি এবং তীব্র শব্দ নিঃসরণকারী বাইক চালকদের পাকড়াও করে যথোপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। যুক্তি বলে, আইন এবং নাগরিকের দায়িত্বজ্ঞান— উভয়কেই একে অপরের পরিপূরক হিসাবে কাজ করতে হয়। যদিও গত কয়েক বছর ধরেই দ্বিতীয়টির অভাব ক্রমাগত পরিলক্ষিত হচ্ছে। সর্বত্র যেন ব্যাপক অসহিষ্ণুতা আমাদের নাগরিক জীবনকে গ্রাস করছে। আমরা নিজেরাই নিজেদের ক্ষতি করছি। প্রায় প্রতি দিনই কোনও না কোনও দুর্ঘটনার কথা শুনেও আমাদের জ্ঞানচক্ষু উন্মীলিত হয় না। এমতাবস্থায় নাগরিক সদিচ্ছার উপর নির্ভর না করে কঠোর আইনের প্রয়োগ অত্যন্ত জরুরি।
অমিত কুমার চৌধুরী, কলকাতা-৭৫
কালোবাজারি
সম্প্রতি ওটিটি প্ল্যাটফর্মে একটি ওয়েব সিরিজ় মুক্তি পেয়েছে। সামান্য পেটের ব্যথা থেকে মারণ ক্যানসার— সব কিছুর ওষুধ বাজারে পাওয়া যায়। তবে সেগুলো কতটা কার্যকর, তা নিয়ে অনেক সময়েই প্রশ্ন ওঠে। সেই নিয়েই নির্মিত এই ওয়েব সিরিজ়টি, যা বর্তমান পরিস্থিতির নিরিখে ভীষণ প্রাসঙ্গিক এবং ভাবিয়ে তোলার মতো। তথ্যানুযায়ী, সিংহভাগ ওষুধ কোম্পানিগুলি প্রয়োগ প্রক্রিয়ায় ৪০ শতাংশ সাফল্য পেয়ে অনেক নথি লুকিয়ে নানা ভাবে জাল করে তাদের ব্যবসা চালাচ্ছে। অর্থাৎ, যে সব মানুষ এই ওষুধে কিছুটা ভাল হয়েছেন, তাঁদের নথি নানা ভাবে ব্যবহার করে সেই সাফল্যের মাপকাঠিকে বাড়িয়ে বাজারে ব্যবসা করছে। এ ক্ষেত্রে ভারতের বাজারে যত ওষুধ আছে, তার গুণগত মান পর্যালোচনা করে তার পরে সেটা বাজারে ছাড়তে অনুমোদন দেয় মেডিক্যাল অথরিটি অব ইন্ডিয়া (এমএআই)। প্রশ্ন হল, এমন বিধিবদ্ধ সংস্থা থাকার পরেও কারচুপি হয় কী করে? এখন একটা নতুন তথ্যের প্রচলন হয়েছে, যেখানে বলা হয়— শুধু ওষুধ খেলে চলবে না, সঙ্গে যোগব্যায়াম করতে হবে। তবেই ওষুধ কার্যকর হবে। ওষুধ যদি যোগব্যায়াম করলেই কাজ করে, তবে সেটার জন্য এত টাকা খরচ, ডাক্তার দেখানোর অর্থ কী? অতএব এক অদ্ভুত গোলকধাঁধায় আটকে পড়েছি আমরা।
এ ছাড়াও কিছু ভ্রান্ত ধারণা কিছু দিন আগে সমাজমাধ্যমে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। যেমন, মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ বেশ কিছু মাস কাজ করে, তাই সেটা নেওয়া নিরাপদ। দেশে দুর্নীতির মাত্রা যে ভাবে বেড়েছে, তাতে মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধের তারিখ বদলে তা বিভিন্ন সরকারি ও স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানে বিলি করার ঘটনা সামনে এলে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। এ দেশে স্বাস্থ্য পরিষেবা ঠিকমতো চালনা করতে সরকার গঠিত সংস্থা রয়েছে বটে, কিন্তু কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষের কারণে সেগুলিই আজ দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে আফ্রিকার গাম্বিয়ায় ভারতে তৈরি কাশির সিরাপ খেয়ে অন্তত সত্তরটি শিশুর মৃত্যুর ঘটনা ভারতকে এক অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মুখে ঠেলে দেয়। আজ নিজেদের ব্যবসায়িক স্বার্থে ওষুধ সংস্থাগুলি হরেক প্রলোভনের মাধ্যমে চিকিৎসকদের বাধ্য করেন তাঁদের ওষুধ রোগীদের দিতে। ফলে আজ সত্যিই আমরা জানি না, প্রয়োজনে যে ওষুধগুলি আমরা খাই, তা আমাদের রোগ নিরাময়ে কোনও সাহায্য আদৌ করে কি না। অথচ, কিছু অর্থপিপাসু মানুষের সাহায্যে ওষুধ সংস্থাগুলি বছরের পর বছর কোটি কোটি টাকার ব্যবসা করে চলে। তবে ওই ওয়েব সিরিজ়ে বেশ কয়েক জন সৎ অফিসারকে দেখানো হয়েছে, যাঁরা সরকারের দেওয়া বেতন নিয়ে এবং সীমিত স্বাচ্ছন্দ্যময় জীবনকে ভালবেসেই দেশের মানুষের জন্য কাজ করে চলেছেন। সিরিজ়ে এমন মানুষের উপস্থিতি থাকলেও বাস্তবে তাঁরা হাতেগোনাই বলা চলে। ভারতে দিন দিন যে ভাবে দুর্নীতি এবং ওষুধের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে সাধারণ মানুষের নিজেদের ভাগ্যের হাতে ছেড়ে দেওয়া ছাড়া আর উপায় আছে কি?
শুভজিৎ বসাক, কলকাতা-৫০
বর্জ্য হ্রাস
বাংলার খুব কম গ্রামেই যথাযথ বর্জ্য-ব্যবস্থাপনা আছে। এই পরিস্থিতিতে প্রতি গ্রামের জনবহুল জায়গাগুলিতে অন্তত একটি করে ডাস্টবিন বসানো হোক, বিশেষ করে অপচনশীল বর্জ্য পদার্থ ফেলার জন্য। গ্রামগুলিতে এখনও কিছু খানা, ডোবা বা পতিত জলাভূমি অবশিষ্ট থাকার ফলে পচনশীল বর্জ্যের সুরাহা হয়। কিন্তু পলিথিন বা প্লাস্টিক জাতীয় পরিবেশ-দূষণকারী বর্জ্যের মাত্রা দিন দিন বাড়ার ফলে এক দিকে গ্রামগুলিতে দূষণের মাত্রা যেমন বাড়ছে, তেমনই জনস্বাস্থ্যও নানা ভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। তাই কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন, এই বিষয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ করুক তারা।
প্রদীপ রঞ্জন রীত, আমতা, হাওড়া
বাস চাই
রেল পরিষেবা না থাকায় বরাবরই বাসের উপরে ভরসা করতে হয় নিত্যযাত্রীদের, যাঁরা ঘটকপুকুর থেকে কলকাতায় আসেন। কিন্তু পর্যাপ্ত সরকারি বাস না থাকায়, ওই গুটিকয়েক বাসেই বহু অসুবিধা সহ্য করে যাতায়াত করতে হয় মানুষজনকে। এ দিকে বাসন্তী হাইওয়ে সম্প্রসারিত না হওয়ায় গন্তব্যে পৌঁছতে সময় লাগছে অনেক বেশি। তা ছাড়া, বেলা গড়ালেই বাসগুলোর সময়ের ঠিক থাকে না। রাজ্য পরিবহণ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন, সকালে অফিসের সময়ে ও বিকালে ছুটির সময় বাসের সংখ্যা বৃদ্ধি করার ব্যবস্থা করুক তারা।
রামিজ আহমেদ, ভাঙড় , দক্ষিণ ২৪ পরগনা
আবর্জনাময়
বিজন সেতু দিয়ে বালিগঞ্জ স্টেশনে যাওয়ার একমাত্র রাস্তাটির মুখে জঞ্জালের ভ্যাট ফেলে রাখার ফলে ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে খুবই অসুবিধা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে নজর দেওয়ার অনুরোধ রইল।
তাপস বসু, নৈহাটি, উত্তর ২৪ পরগনা