বহুত্ববাদ রক্ষায় শুরু হোক পরমতসহিষ্ণুতার চর্চা

এক শক্তিশালী গণতন্ত্রের ৬৮তম প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রাক্কালে রাষ্ট্রপতিকে যখন মনে করিয়ে দিতে হয়, দেশের মূল শক্তি নিহিত আছে তার বহুত্ববাদের চর্চায়, তখন উদ্বেগের এক মুহূর্তের জন্ম হয় অবশ্যই।

Advertisement

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০১৭ ০২:২২
Share:

প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রাক্কালে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের ভাষণ। ছবি: পিটিআই।

এক শক্তিশালী গণতন্ত্রের ৬৮তম প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রাক্কালে রাষ্ট্রপতিকে যখন মনে করিয়ে দিতে হয়, দেশের মূল শক্তি নিহিত আছে তার বহুত্ববাদের চর্চায়, তখন উদ্বেগের এক মুহূর্তের জন্ম হয় অবশ্যই।

Advertisement

এক আশ্চর্য স্ববিরোধী যাত্রার পথিক আমরা এখন। শৌচালয়হীন বিস্তীর্ণ ভারত এখন হাঁটছে ক্যাশলেস দুনিয়ার দিকে, মাতৃরূপে নারীর পূজা এবং ধর্ষণ-শ্লীলতাহানি-অসম্মান হয়ে চলেছে সমানতালে, গণতন্ত্রর বড়াই ও অসহিষ্ণুতার চর্চা দুইই হয় এখানে সমান গর্বের সঙ্গে। বিবিধের মাঝে মহান মিলনের তত্ত্ব এখন বইয়ের পৃষ্ঠায় যতটা, বাস্তবের পটভূমিতে তার অস্তিত্ব সঙ্কুচিত হয়ে আসছে বোধহয় ততটাই। জাতি-ধর্ম-ভাষা ভেদে ধীরে ধীরে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পথে কি শুরু হয়েছে যাত্রা? যেখানে সহিষ্ণুতাকে দূর পিছনে ফেলে অন্য মতকে কোণঠাসা করার ক্রমাগত চেষ্টাই প্রতি দিন আরও প্রকট হয়ে উঠছে?

অথচ অনেক মতের সহাবস্থান ব্যতিরেকে গণতন্ত্রের অস্তিত্ব যে বিপন্ন, এই তত্ত্বটিকে কেউ অস্বীকার করতে পারছেন না। পারছেন না, অথচ ভিন্ন স্বরকে দেশদ্রোহী আখ্যা দিয়ে দিচ্ছেন— এর মধ্যে একটা স্ববিরোধ আছে, আছে চূড়ান্ত অসহিষ্ণুতা, রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় বুধবার জাতির উদ্দেশে ভাষণে এই কথাটিই মনে করিয়ে দিতে চেয়েছেন।

Advertisement

এত পরিণত এই গণতন্ত্র, সেখানে এখনও প্রাসঙ্গিক থাকবে অসহিষ্ণুতার চর্চা? রাজনৈতিক-ধর্মীয়-সামাজিক নানা শক্তির দিকে আঙুল তোলাই যায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় সতত স্বচ্ছন্দ আমরা কি একবার নিজেরাও আয়নার সামনে দাঁড়াতে পারি?

এই প্রজাতন্ত্র দিবসে সঙ্কল্প নিতে পারি, আমি চর্চা করব পরমতসহিষ্ণুতার? আমিই তো এই দেশের মূল ইউনিট, প্রধান শক্তি। আমার দেশকে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে এই সঙ্কল্প নেওয়া কঠিন হবে?

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement