—প্রতীকী ছবি।
চাঁদে কলঙ্ক রয়েছে। হয়তো সূর্যেও। কিন্তু শুক্লপক্ষে বা পূর্ণিমা রাতে জোৎস্নালোকের অবারিত পুলক কখনও ম্লান হয় না সে কালিমায়। সুর্যের অপার তেজকে ছাপিয়ে উঠে কখনও দৃষ্টিগোচর হতে পারে না তার বুকে জেগে থাকা কোনও কৃষ্ণাভ বিন্দু।
দীপাবলি নিশিতে কিন্তু উৎসবের আভাকে কোথাও কোথাও ছাপিয়ে গেল জমাট অন্ধকার।
গোটা রাজ্য, গোটা দেশ, এমনকী বহির্বিশ্বও আলোকমালায় উদ্ভাসিত রইল গত কয়েক রাত। কিন্তু বিচ্ছিন্ন, বিক্ষিপ্ত কিছু কালির ছিটে প্রগাঢ় কলঙ্কের রূপ ধরে ছাপিয়ে গেল উৎসবের আভাকে।
ঘরে চৌকাঠ পেরলেই যাঁদের মুখ দেখা যায় রোজ, তেমনই দুই প্রতিবেশী যুবকের উপর ভরসা করা ভুল হয়ে গেল উত্তরবঙ্গের দুই কিশোরীর। সবাই মিলে আলোর উৎসবে সামিল হওয়ার বাসনা ছিল। কিন্তু ঘিরে ধরল অন্ধকারের বিকৃত উল্লাস।
মহানগরের বুকেও একই ছবি। কোথাও শব্দবাজি বা চড়া মাইকে আপত্তি জানাতেই উন্মত্ত প্রহার। কোথাও মত্ত দুষ্কৃতীর অভব্যতার প্রতিবাদ করায় বাড়ি তছনছ, প্রাণনাশের শাসানি। কোনও ঘটনায় আক্রান্ত সাধারণ নাগরিক, কোনও ঘটনায় খোদ পুলিশ।
আলোর উৎসবকে ঘিরে অন্ধকারের এমন উল্লাস কেন দেখতে হবে? দীপাবলি উদযাপনের সামগ্রিক ছবিটাই কালিমালিপ্ত, এমন নিশ্চয়ই নয়। জীবনের আলোয় আরও একটু উদ্ভাসিতই হতে চেয়েছি আমরা অধিকাংশে। কিন্তু জীবনের আলোয় এত দিনেও বিন্দুমাত্র আলোকিত হতে পারেনি যারা, তারাই ইতিউতি ছিনিয়ে নিল অন্য কারও উৎসবের আলো। উৎসব মানচিত্রে নেহাতই বিক্ষিপ্ত কিছু বিন্দু ওরা। কিন্তু এতই গাঢ় সে কালিমা যে উৎসবের অপার আলোকেও ঢেকে রাখা গেল না কলঙ্ক।
উৎসবের শেষ প্রহরে ভারাক্রান্ত হল মন। উপসংহারে আক্ষেপ রয়ে গেল কিছুটা।