রাজনীতিতে কিছু ‘ডিফাইনিং মোমেন্ট’ থাকে। একটা মুহূর্ত, একটা ছবি, একটা শব্দই অনেক সময় খেলা ঘুরিয়ে দেয়। দু’বছর আগে মহারাষ্ট্রে বিধানসভা নির্বাচনে সাতারায় জনসভায় এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পওয়ারের বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে বক্তৃতা ছিল তেমনই একটা মুহূর্ত। আশি বছরেও পওয়ার বুড়ো হাড়ে ভেলকি দেখিয়েছিলেন। তাঁর আগ্রাসী প্রচারে এনসিপি-র আসন বাড়ল। তার পর শিবসেনা-কংগ্রেসকে এক মেরুতে এনে পওয়ার সরকার গঠন করে ফেললেন। আগামী দিনে জাতীয় রাজনীতিতে তাঁকে একই ভূমিকায় দেখা যাবে কি না, চলছে জল্পনা। তারই মধ্যে শরদ-কন্যা সুপ্রিয়া সুলের মোবাইলের আচ্ছাদনে দেখা গেল, সাতারায় বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে বাবার বক্তৃতার ছবি।
প্রতিকৃতি: সুপ্রিয়া সুলের মোবাইল কভারে বাবা শরদ পওয়ারের ছবি।
মাস্ক কোথায়?
সংসদের বর্ষাকালীন অধিবেশন চলার সময় কোভিড নিয়ে ছিল লাল সতর্কতা, শীতের সংসদ তুলনায় অনেকটাই ঢিলেঢালা মেজাজের। মাঝেমধ্যে মাস্ক পরতেও মনে থাকছে না অনেকের। লখিমপুর খেরির ঘটনায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে বুধবার দফায় দফায় ওয়েলে নেমেছিলেন বিরোধী সাংসদরা। চিৎকার করে স্লোগান দেওয়ার সময় অনেকেই মাস্কহীন! তাঁদের নাকের ডগায় লোকসভার টেবিলে বসে সাংবাদিক এবং অন্য কর্মীরা। সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী মৃদু ধমক দিলেন সাংসদদের। বললেন, “এখনও কোভিড চলে যায়নি। আপনারা মাস্ক ছাড়া অফিসারদের এত কাছে দাঁড়িয়ে ওঁদের বিপদে ফেলছেন। জনতার প্রতিনিধি হিসাবে এটা কি ঠিক?” ঘটনা হল, জোশী নিজেই ছিলেন মাস্কহীন! এই লোপ্পা ফুলটস না ছেড়ে সঙ্গে সঙ্গেই বিরোধীরা কথাটা স্মরণ করালেন জোশীকে। শুধু তিনিই নন, রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব তখন হট্টগোলের মধ্যে একটি প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন মাস্ক না পরেই। বিরোধীরা সে কথাও তুললেন।
কৃষকদের মন জিততে
কৃষি আইন নিয়ে এক বছর নাজেহাল হয়েছে কেন্দ্র। এ বার কৃষকদের জন্য মোদী সরকার যা যা করেছে, তার খতিয়ানও যদি চাষিদের কাছে না পৌঁছয়, তবে তো সাড়ে সব্বোনাশ! এমনটাই প্রধানমন্ত্রীকে বোঝালেন কেরলের প্রাক্তন রাজ্যপাল পি সথাশিবম। সম্প্রতি দু’জনের বৈঠকে সথাশিবম মোদীকে বলেন যে, দক্ষিণ ভারতের কৃষিক্ষেত্রে সরকার কী কী করছে, তা তিনি বুঝতে চান। মোদী তাঁকে হিন্দি এবং ইংরেজিতে লেখা দু’টি পুস্তিকা দেন। সেখানে দেশের কৃষিক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় উদ্যোগ এবং যোজনার বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে। সথাশিবম প্রাক্তন প্রধান বিচারপতিও বটে। পুস্তিকা দেখেই তিনি পরামর্শ দেন, আঞ্চলিক ভাষাতেও এর অনুবাদ করতে। নয়তো দক্ষিণের কৃষকরা এর মাথামুন্ডু বুঝতে পারবেন না। সূত্রের খবর, সথাশিবমের পরামর্শ মেনে নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
ঔরঙ্গজেবের বদলি
বারাণসীতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, যত বার ঔরঙ্গজেব হানা দেন, তত বার শিবাজির উদয় হয়। রাজধানী দিল্লিতে কি আবার ঔরঙ্গজেবের উপরে কোপ পড়বে? রাস্তা থেকে নাম মুছে গিয়েছে। এ বার গলি। ২০১৫-য় এ পি জে আবদুল কালাম প্রয়াত হওয়ার পরে ঔরঙ্গজেব রোডের নাম বদলে কালামের নামে রাখা হয়েছিল। তবে পৃথ্বীরাজ রোডের কাছে ঔরঙ্গজেব লেন নামের একটি সরু রাস্তা এখনও রয়ে গিয়েছে। এ বার চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়তের মৃত্যুর পরে বিজেপির অন্দরে দাবি উঠেছে, ঔরঙ্গজেব লেনের নামও বদলানো হোক। নামকরণ হোক বিপিন রাওয়তের নামে। দাবি কি মানা হবে?
বিদায়: জেনারেল বিপিন রাওয়ত।
ভুটানে রাওয়ত স্মরণ
ভুটান ছিল বিপিন রাওয়তের প্রিয় দেশ। নিজের ছাত্রাবস্থায় সত্তরের গোড়ায় প্রথম ভুটানযাত্রা তাঁর। মাঝে বহু বার গিয়েছেন কাজে বা পর্যটনে। শেষ বার, সেনাপ্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার চার মাস পর, ২০১৭-র এপ্রিলে তিন দিনের জন্য ভুটান যান তিনি। তাঁর আকস্মিক মৃত্যুর পর শোকাহত তাঁর প্রিয় ভুটান। ভুটানের রাজা জিগমে ওয়াংচুকের নির্দেশে থিম্পুর বৌদ্ধ মঠে সপ্তাহভর চলল প্রার্থনা। জ্বালানো রইল এক হাজার তৈলপ্রদীপ।
লালুর পরামর্শ
রাজ্যসভা থেকে ১২ জন বিরোধী দলের সাংসদকে সাসপেন্ড করা নিয়ে গাঁধীমূর্তির সামনে রোজ ধর্না চলছে। তারই মধ্যে এই ১২ জনকে দিল্লিতে তাঁর বাসভবনে আমন্ত্রণ করলেন আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদ যাদব। জানালেন, যে হেতু স্বাস্থ্যের কারণে তিনি নিজে সংসদে গিয়ে দেখা করতে পারছেন না, তাই সন্ধ্যাবেলা তাঁরাই আসুন। সূত্রের খবর, লালু তাঁদের বলেছেন, বিরোধীদের আরও আক্রমণাত্মক হতে হবে। কংগ্রেস কেন সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপাচ্ছে না, তা নিয়েও কিছুটা বিস্ময় প্রকাশ করতে দেখা যায় লালুকে।