আবাসিকদের হাতের কাজে সেজে উঠেছে বন্ডেল রোড এলাকায় ‘প্রত্যয়’-এর বাড়ি। ছবি: সংগৃহীত।
সম্প্রতি কলকাতায় সুস্থ মনোরোগীদের সামাজিক পুনর্বাসনের জন্য রাজ্য সরকারের উদ্যোগে নির্মিত প্রথম জীবনসহায়তা কেন্দ্র ‘প্রত্যয়’-এর প্রথম বর্ষপূর্তি উদ্যাপিত হলো। এই উপলক্ষেসেখানকার আবাসিকদের উদ্যোগে ও পরিকল্পনায়, পেশাদার শিল্পীদের নেতৃত্বেএকটি আর্ট ইনস্টলেশনের আয়োজন করা হয়েছিল। বর্ষপূর্তি উদযাপনের দিন থেকে এক সপ্তাহ এই ইনস্টলেশনকে ঘিরে একটি প্রদর্শনীরও আয়োজন করা হয়েছিল।
পশ্চিমবঙ্গের প্রথম জীবনসহায়তা কেন্দ্র, ‘কলকাতা প্রত্যয়’-এর পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে ‘অঞ্জলি মানসিক স্বাস্থ্য অধিকার রক্ষা সংগঠন’। ফলে এই বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান এবং প্রদর্শনীর আয়োজন এবং তার হয়ে ওঠাটা খুব কাছ থেকে দেখার অভিজ্ঞতা হয়েছে।
জীবনসহায়তা কেন্দ্রটি যে বাড়িতে, সেটি ভারতবর্ষে মনোবিদ্যা চর্চার জনক গিরীন্দ্রশেখর বসুর বাড়ি। সেটা যদি কারও জানা থাকে ভাল।জানা না-থাকলেও খুব কিছু এসে যায় না। জানা না-থাকার সম্ভাবনাই বেশি।কারণ, গিরীন্দ্রশেখরকে নিয়ে গত ১০০ বছরে মনোবিদ্যা চর্চায় খুব বেশি শব্দ খরচ করা হয়নি। লুম্বিনি পার্ক মানসিক হাসপাতালের এখনকার নতুন বাড়িটির আগেএই বাড়িটিই ছিল হাসপাতাল। বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে রাজ্য সরকারের প্রাক্তন মুখ্যসচিব মলয় দে তাঁর স্মৃতিচারণায় বলেছেন, বাড়িটি প্রথম যখন দেখতে আসেন, তখন সেটাকে একটা জেলখানা বলে মনে হচ্ছিল। এখনকার কলকাতা প্রত্যয়ে কিছু আবাসিক এমন আছেন, যাঁরানতুন হাসপাতাল বাড়ির আগে এই বাড়িতেও রুগী হিসেবে থেকেছেন। ফলে দমবন্ধ অযত্ন, অপরিচ্ছন্নতার একটা স্মৃতি আছে। এটাও জানা থাকলে ভাল।নাহলেও খুব অসুবিধে নেই।
প্রদর্শনীতে ঢোকার সময়মূল ফটকটিতে দু’টি দেশের মধ্যেকার সীমান্ততোরণের মতন একটা তোরণের আদল মনে হতে পারে।যেখানে প্রদর্শনীর শিরোনামটি লেখা আছে— ‘এলেম নতুন দেশে’। নামটা দেখার সময় একটু ওপর দিকে তাকাতে হবে। তখনই আপনার নজরে পড়বে, দোতলার এক মানুষ লম্বা জানালাগুলোতে প্রায় লাইফ সাইজ মুখগুলো আটকে আছে। যেন গরাদের ভিতর থেকে বাইরেটা দেখছে।
‘প্রত্যয়’-এর আবাসিকদের তৈরি ইনস্টলেশন। তাঁদের সঙ্গে মনোসমাজকর্মী রত্নাবলী রায় এবং শিল্পী শ্রীকান্ত পাল। ছবি: সংগৃহীত।
ভিতরে ঢুকতেই সামনে একটা বাক্স।বায়োস্কোপ।তার গায়ে কাচের টুকরো দিয়ে তৈরি মানুষের মুখের আদল।তবে তার চোখ একটাই।‘সাইক্লপ্স’ ঠিক নয়, সম্ভবত তৃতীয় নয়নটাই একমাত্র। সেই চোখের জায়গাটায় চোখ রাখলেভিতরে দেখা যাবে, প্রত্যয়ের দৈনন্দিন জীবনের টুকরো টুকরো ছবি, আবাসিকদের যাপনের খণ্ড মুহূর্তগুলো। ডানদিকে কয়েক পা এগোলে সিলিং থেকে প্রায় মেঝে পর্যন্ত নেমে আসা ল্যাম্পশেডের গায়ে আবাসিকদের হাতে আঁকা আবাসিকদেরই পোর্ট্রেট। হেডফোনে শোনা যাবে প্রত্যয়ের দৈনন্দিনতার সাউন্ডস্কেপ। সে ঘর থেকে বাঁ’দিকে কোণাচে করে এগোলে আবার বাইরের কমন স্পেসে, প্রায় সিলিং-ছোঁয়া একটা পাল।নৌকা বাইছে প্রত্যয়ের আবাসিকদের হাতে তৈরি পুতুল। সক্ষম সমাজের প্রতিকূলতার বিরুদ্ধ স্রোতে নৌকা ভাসিয়ে রাখার লড়াই। কয়েক পা এগিয়ে ডান দিকে একটা বাতিল ফ্রিজ। আরও সমস্ত বাতিল জিনিসের সমাহার।আর তার মধ্যে কাচের বাক্সে রংবেরংয়ের হরেকরকমের মাছ। প্রত্যয়ের ঘেরাটোপের নিরাপত্তার মধ্যে সকলের মিলেমিশে থাকা। তেরছা করে ডানদিকে কয়েক পা এগোলে সিলিং থেকে নেমে আসা টানটান সুতোয় ঝুলছে প্রত্যয়ের আবাসিকদের বাতিল চপ্পলগুলো।আর তাদের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হরেক রকমের জিনিস। নকল ফুল বা পেরেক, গাছের ডাল, পুতুল, পাখি এমন আরও অনেক কিছু। অনেকটা পথ হেঁটে পেরোবার ধকল, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তিগুলো গল্প বুনেছে।আর প্রত্যেকটা গল্পকে একে অপরের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে রাংতার চকচকে মোড়কে।
এবার প্রত্যয় থেকে বেরোনোর পথে,সেই যে ঢোকার মুখে যে বাক্সটা ছিল— বায়োস্কোপ, তার পিছনদিকের আয়নাটা নজরে পড়বে। আয়নায় নিজের সম্পূর্ণ প্রতিফলন দেখা যাবে। বেরোনোর সময় যদি আর একবার উপরদিকে তাকানো যায়, তাহলে মুখগুলোকে আর ততটা গরাদের আড়ালে মনে না-ও হতে পারে। মনে হতে পারে খোলা জানলা পেরিয়ে আগামীর সম্ভাবনার দিকে তাকিয়ে থাকা মুখ। অনেক বেশি প্রত্যয়ী।
আবাসিকদের হাতে তৈরি ইনস্টলেশন। ছবি: সংগৃহীত।
মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কর্মসূচি নিয়ে যাঁরা আগ্রহী, তাঁরা তো বটেই, তার বাইরেও বেশ কিছু মানুষ প্রদর্শনীটির কথা শুনেছেন।দেখতে এসেছেন। কয়েকদিন বিষয়টা নিয়ে বেশ আলোচনা হয়েছে।প্রত্যয়ের ভিতরে তো বটেই। বাইরেও।
শুরু থেকেই একটা প্রশ্ন বারবার উঠে এসেছে। বাইরে থেকে তো বটেই, অঞ্জলির মধ্যেও। তা হল আবাসিকদের ছবির ব্যবহার। মজার ব্যাপার হল, আপত্তিটা ঠিক কোথায়, সেটা যে খুব স্পষ্ট করে কেউ বলেছেন এমন নয়। ঠারেঠোরে যতটুকু বোঝা গিয়েছে, প্রশ্নটা আবাসিকদের ব্যক্তিগত জীবন এবং সে সম্পর্কে গোপনীয়তার প্রসঙ্গে। এই প্রসঙ্গে বৃহত্তর পরিসরে খোলামেলা আলোচনা হওয়া দরকার। এই আলোচনাটা শুধু মানসিক স্বাস্থ্য নয়, ব্যক্তিগত পরিসরের সীমানা, গোপনীয়তা, সুরক্ষা এই সমস্ত প্রসঙ্গেও জরুরি। বিশেষ করে এই অন্তর্জাল তথ্য বিস্ফোরণের সময়েব্যক্তিগত গোপনীয় তথ্যের সুরক্ষার প্রশ্নটি বারবার সামনে চলে আসে। এই সমস্ত বিষয়ের খুঁটিনাটিগুলোর মধ্যে আমার অনধিকার প্রবেশের কোনওঅর্থ নেই, আইন বিশেষজ্ঞরা এগুলো ভাল বলবেন। কিন্তু সামাজিক ও নৈতিক বিষয়গুলি নিয়ে আমাদের সাধারণ বোঝাপড়া সম্পর্কে কিছু কথা বলা দরকার।
প্রত্যয়ের আবাসিকদের ছবিগুলো যাঁরা দেখলেন, তাঁরা জানলেন যে, এই মানুষদের মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কোনও একটি অসুবিধা হয়েছিলো। কিন্তু তাঁরা তো শুধু ছবি দেখছেন না।ছবির মানুষগুলোকেওজীবন্ত দেখতে পাচ্ছেন চোখের সামনে, তাঁদের সঙ্গে কথা বলছেন। প্রত্যয়ের আবাসিকরা যখন সকলের সামনে গান গাইছেন, নৃত্য পরিবেশন করছেন, অভিনয় করছেন, বক্তব্য বলছেন তখন কোনও অসুবিধা হচ্ছে কি? সেগুলোয় যদি অসুবিধা না হয়, তাহলে তাঁর ছবি নতুন কোন অসুবিধা তৈরি করছে?
প্রত্যয়ের আবাসিক পরিচয় যতক্ষণ তাঁকে বহন করতে হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত তাঁর মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত অতীত কোনও অসুবিধার কথাটা খুব স্পষ্টভাবেই জানা আছে। তার মধ্যে কোনো গোপনীয়তার অবকাশ নেই। তাহলে কি আমরা ‘প্রত্যয়ের আবাসিক’— এই পরিচিতিটাই গোপন করতে চাইছি? কী করে সেটা সম্ভব? প্রত্যয়ের কোনও আবাসিক যখন চাকরিপ্রার্থী হিসেবে বিভিন্ন সরকারি বা বেসরকারি সংগঠনে যাচ্ছেন, তখন কি তাঁকে তাঁর মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যার অতীতটা লুকোনোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে? সেটা এমনিতে অসম্ভব।কিন্তু সেই পরামর্শ দেওয়ার মধ্যেও একধরনের অসততা আছে। ছবি নিয়ে যদি অস্বস্তি বা আপত্তি থাকে, তাহলে কি তাঁকে জনসমক্ষে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে? হচ্ছে না।কারণ, তাহলে প্রত্যয়ের যা উদ্দেশ্য, সুস্থ মনোরোগীদের সামাজিক পুনর্বাসন— সেটাকেই বাতিল করতে হয়! তাহলে কি গোপনীয়তার প্রশ্নটা অবান্তর? একদমই নয়। তাঁর অসুস্থতা ও চিকিৎসা সংক্রান্ত যে কোনও তথ্য, তাঁর চিকিৎসার প্রয়োজন, তাঁর বা তাঁর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কারও নিরাপত্তার প্রয়োজন ছাড়া সেটি গোপনীয়। ছবির সূত্রে কি কার কোন ধরনের অসুস্থতা ছিল, তাঁর ঠিক কী চিকিৎসা হচ্ছে, সেগুলো প্রকাশিত হয়ে পড়ছে? না, হচ্ছে না।
গত কয়েকদিনের অভিজ্ঞতায় দেখেছি, এই ধরনের আলোচনায় কথোপকথনটা এমন একটা জায়গায় পৌঁছনোর পরে, যাঁরা প্রশ্ন করছেন, তাঁরা মেনে নিতে বাধ্য হচ্ছেন। মানতে না পারলেই সুবিধে হত, এমন একটা মুখ করেই মেনে নিচ্ছেন।
‘প্রত্যয়’-এর আবাসিকদের হাতের তৈরি কাজ। ছবি: সংগৃহীত।
এই যে খটকাটুকু বাকি থেকে যাচ্ছে, সেটা নিয়ে একটু আলাপ করা যাক। অসুবিধার কারণগুলো বিবিধ। প্রথম কারণ হল, বিশ্বাস।‘কনভিকশন’-এর আভিধানিক অর্থও ‘প্রত্যয়’। একজন মানুষকে সুস্থ বলে ঘোষণা করার দুটো ব্যাখ্যা হতে পারে। এক, তাঁর কোনো অসুস্থতা নেই এটা পরীক্ষিত সত্য। দুই, তাঁর কোনও অসুস্থতা থাকলেও সেটা এখনও ধরা পড়েনি এবং সেটা সাধারণভাবে দৃশ্যমান নয়। ফলে ধরে নেওয়া হচ্ছে তিনি সুস্থ। মানসিক অসুস্থতা নিরূপণের বিষয়টা আরও গোলমেলে, প্রায়শই বাইরে থেকে বিশেষ সময় ছাড়া বোধগম্য বা দৃশ্যমান নয়। ফলে সুস্থতার কোনও পরীক্ষা না হওয়াটাই এখানে সুস্থতা ঘোষণার যথেষ্ট শর্ত। প্রত্যয়ের আবাসিকদের মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কোনও সমস্যা ছিল—এই তথ্যটা এখানে সমস্যা তৈরি করছে। কারণ, শারীরিক সমস্যা আর মানসিক সমস্যাকে আমাদের বেশিরভাগই আলাদা মাপকাঠিতে দেখতে অভ্যস্ত। সোজা কথায়, মনোরোগ সংক্রান্ত কলঙ্কের বোধ আমাকে গোপনীয়তায় আড়াল নিতে বলছে। প্রত্যয়ের আবাসিকদের ছবি প্রসঙ্গে যাঁরা গোপনীয়তার প্রশ্নে অস্বস্তিতে ভুগছেন, তাঁদের সমস্যাটা হচ্ছেতাঁরা নিজেরা এই কলঙ্কের বোধটা নিয়ে আবাসিকদের হিতাকাঙ্খা করছেন। হিতাকাঙ্খা নিয়ে এক্ষেত্রে প্রশ্ন নেই।প্রশ্নটা মনোরোগের কলঙ্কের বোধ নিয়ে।
মনোরোগ নিয়ে বৃহত্তর সমাজের বোঝাপড়ায় এই সমস্যাটার মোকাবিলা আমাদের মতো মনোসমাজকর্মীদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে করতে হয়। ধরা যাক, কোনও ব্যক্তি যাঁর কোনও মনোরোগ হয়েছিল কিন্তু এখন সুস্থ বলা হচ্ছে, তখন আমরা হামেশাই যে প্রশ্নটার সম্মুখীন হই, ‘এখনও তো ওঁকে নিয়মিত ওষুধ খেতে হচ্ছে।তাহলে কি ওঁকে সুস্থ বলা চলে?’ প্রেশার, সুগার-সহ আরও বিভিন্ন সমস্যার জন্য দিনে পাঁচটা করে ওষুধ-খাওয়া মানুষ যদি ‘সুস্থ’ বলে গণ্য হন, তাহলে কেউ তাঁর মনোরোগের জন্য ওষুধ খেয়ে কর্মক্ষম থাকলে তাঁকে ‘সুস্থ’ বলা যাবে না কেন! এই প্রশ্নটার উত্তর কখনওই পাওয়া যায় না। আবারনির্দ্দিষ্ট কিছু মানসিক সমস্যা, যেগুলো পরবর্তীকালে মাথাচাড়া দেওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং রোজকার জীবনে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারে এবং করে, সেই মনোরোগের কারণে যখন প্রতিবন্ধী পরিচয়পত্র তৈরি করার প্রয়োজন হয়, তখন প্রশ্নটা উল্টে যায়। দৃশ্যমান কোনও শারীরিক সমস্যা নেই যখন, তখন প্রতিবন্ধী পরিচয়পত্র সেখানে অন্যায্য বলে মনে করা হয়!
এমনই এক অমোঘ দ্বিচারিতার কারণের প্রত্যয়ের আবাসিকদের প্রকৃত হিতাকাঙ্খীরাও অনেক সময় যে যুক্তির অবতারণা করেন, তার সঙ্গে খুব কাছাকাছি মেলেকোনও বিশেষ উপলক্ষে আগত বিদেশি অভ্যাগতদের জন্য শহর সাজিয়ে তুলে, যা কিছু দৃষ্টিনন্দন নয়, ময়লা বা মানুষ, তার সামনে আড়াল তৈরি করার রেওয়াজ। আমাদের মাথার মধ্যে গেড়ে-বসা কলঙ্কের ভ্রান্ত বোধএবং তা মোচনের দায় আমরা চাপিয়ে দিইসেই মানুষগুলোর উপরেই। তিনি কেন যথেষ্ট আড়ালে থাকছেন না, যথেষ্ট লুকিয়ে থাকছেন না, বাকি সমাজের কাছে অদৃশ্য হয়ে যেতে পারছেন না!
এবং এই কারণেইযে প্রশ্নটা খুব সহজ এবংস্বাভাবিক হতে পারত, সেই প্রশ্নটা, যাঁরা এই প্রসঙ্গে আপত্তি বা আপত্তির মতো কিছু একটা ব্যক্ত করেছিলেন, তাঁরা কেউই করেননি। যাঁদের ছবি দেওয়া হয়েছে, তাঁদের সম্মতি নেওয়া হয়েছিল কি? এককথায়এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সম্ভব—হ্যাঁ, নেওয়া হয়েছিল। এখানে বলে রাখা যাক, প্রত্যয়ে কেউ আসবেন কিনা, এই প্রশ্নটার উত্তরও নির্ভর করে তাঁর সম্মতির উপরেই। এই সম্মতির প্রশ্নটা যে আমাদের ভাবনার আশেপাশেও আসে না, তার কারণ, মনোরোগীর মতামতের অধিকারকেই আমরা স্বীকার করতে পারি না। ফলে আপাতত সুস্থ বা চিকিৎসাধীন মনোরোগী কী বলছেন, কী চাইছেন, সেটা আমাদের সক্ষম সমাজের কাছে অবান্তর হয়ে যায়। সেই জন্যই প্রথম ও প্রধান প্রশ্নটাই আমরা করে উঠতে পারি না! ব্যক্তিগত গোপনীয়তার আড়াল খুঁজি।
(লেখক বিশিষ্ট মনোসমাজকর্মী। মতামত নিজস্ব)