গাড়ি আটকে চাঁদা আদায়। বুধবার বহরমপুরে।— নিজস্ব চিত্র
উৎসবের মরশুম প্রায় উপান্তে। শ্যামা পূজা তথা দীপাবলিকে ঘিরে এ বছরের মতো শেষ দফার মাতনের অপেক্ষা। কিন্তু উৎসব যে চাপিয়ে দেওয়ার বস্তু নয়, তা যে আসলে স্বতঃস্ফূর্তির, সে কথা বোধ হয় ভুলে যাই আমরা। তাই দীপাবলির আগে চাপিয়ে দেওয়ার উৎসবেই মত্ত পথ-ঘাট, বাজার-হাট, গলি-মহল্লা। উৎসবকে জমকালো করতেই হবে, তাই চাঁদার রসিদেও জমকালো অঙ্ক, জোর-জুলুম।
পাড়ায় পাড়ায় চাঁদার জুলুমের খবর। দরজায় দরজায় মোটা অঙ্কের বিল। রাস্তাঘাটে জুলুমবাজির ছবিটা আরও মারাত্মক। অটোরিক্সা-গাড়ি-বাস-ট্রাক থামিয়ে চলছে আদায়। দাতার সামর্থের অনুকূলে নয়, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তার প্রতিকূলে গিয়ে চলছে এই আদায়। মনঃপূত না হলে জোর-জবরদস্তি, বলপ্রয়োগ।
হেলদোলহীন পুলিশ-প্রশাসনকে দেখলে অবশ্য মনে হয়, সবই গল্প-কথা। সর্বত্র অখণ্ড শান্তিতেই যেন চলছে উৎসবের আয়োজন! যেন উৎসবের চোখ ঝলসানো উদযাপনের স্বার্থে আপামর বাঙালি স্বতঃস্ফূর্ত আবেগে দু’হাত উজাড় করে ভরে দিচ্ছে চাঁদাওয়ালাদের ঝুলি!
দীপাবলি আসলে ঘরে ঘরে আলো জ্বালিয়ে দেওয়ার উৎসব। কারও ঘরে আঁধার নামিয়ে এনে মণ্ডপ আর মঞ্চ আলো করার উৎসব নয়। জুলুমের উদ্যোক্তাদের সে কথা বোঝা দরকার। স্ব-উদ্যোগে যদি এ সত্য তাঁরা না বোঝেন, তা হলে উদ্যোগটা পুলিশ-প্রশাসনকে নিতে হয়। কিন্তু উৎসবের প্রাক-সন্ধ্যা পর্যন্তও তেমন উদ্যোগ নেই। অতএব বেলাগাম চলল জুলুমবাজি।
আসলে, পুলিশ-প্রশাসনও উৎসবেই মত্ত— অপদার্থতা এবং অকর্মণ্যতার উৎসবে।