শাড়ি-কুর্তা নয়, এ বার সাজের বাহার মাস্কে
লাল নীল সবুজের মেলা বসেছে এ বারের সংসদে। না, শাড়ি, কুর্তা বা পাঞ্জাবির রংমিলন্তি এ বারে উহ্য। এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে চলা সংসদ অধিবেশনে যেটুকু যা রং ঢালছে, তা হল সাংসদদের মাস্ক-এর বাহার। এমনই সুন্দর বুটিদার (এক এক দিন এক এক রকম) মাস্ক পরে আসছেন ‘ধন্যি মেয়ে’ জয়া বচ্চন। কিন্তু রাজ্যসভায় বক্তব্য পেশের সময় তা নামিয়ে রাখছেন থুতনিতে! চোখে পড়তেই সতর্ক করলেন চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডু। জয়ার জবাব, বলার সময় মাস্ক পরে থাকলে কথা স্পষ্ট আসে না। সমস্যা হয়। তিনি পরে মাস্ক পরিষ্কার করে নেবেন। এর পরই তিনি বক্তব্য শুরু করার আগে দু’বার নিজের নাম বলায়, বেঙ্কাইয়া সরস মন্তব্য করলেন, ‘‘এত সুন্দর আপনার ব্যক্তিত্ব— নাম আর বলার কী আছে! গোটা দেশে আপনার নাম বিখ্যাত।’’
মুখাবরণ: কথা অস্পষ্ট হয়, তাই মাস্ক নামিয়ে বক্তব্য পেশ করছেন সাংসদ জয়া বচ্চন
সিন্ধিয়ার পরীক্ষা
এলেন, দেখলেন, মন্ত্রিসভায় জায়গা পেলেন! জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াকে নিয়ে বিজেপি নেতারা এমনটাই ভেবে রেখেছিলেন। বিজেপিতে যোগ দিয়েই জ্যোতিরাদিত্য রাজ্যসভায় জিতে এলেন। এ বার খুব শীঘ্র তাঁকে মন্ত্রী করে দেওয়া হবে, সে রকমই জল্পনা ছিল। কিন্তু দিল্লির ক্ষমতার করিডরে গুঞ্জন উঠেছে, এখনই শিকে ছিঁড়ছে না জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার ভাগ্যে। তাঁকে নাকি প্রথমে মধ্যপ্রদেশের ২২টি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে অনুগামীদের জিতিয়ে আনার অগ্নিপরীক্ষায় পাশ করতে হবে! রাজ্যসভায় সদস্য হওয়ার পরেই তাঁকে শিক্ষা মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য করা হয়েছে। মন্ত্রীরা সংসদীয় কমিটির সদস্য হন না। এ ভাবেই নাকি ঘুরিয়ে বার্তা দেওয়া হয়েছে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াকে! তবে সিন্ধিয়ার বন্ধু সৈয়দ জাফর ইসলামকে বিজেপি উত্তরপ্রদেশ থেকে রাজ্যসভায় জিতিয়ে আনার পর সিন্ধিয়ার মুখে হাসি ফুটেছে। এই জাফরের হাত ধরেই তিনি নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন কিনা!
প্রতিবাদী থালা
করোনা তাড়াতে প্রধানমন্ত্রী থালা বাজানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন। আঞ্চলিক বিরোধী দলগুলি থালাকে ফিরিয়ে আনল ভিন্ন আঙ্গিকে। সম্প্রতি সংসদ চত্বরে জিএসটি নিয়ে সরকারি নীতির প্রতিবাদে রাজ্যগুলির অসহায় অবস্থার প্রতীক হিসেবে আটটি আঞ্চলিক দল খালি থালা হাতে স্লোগান দিল। পরিকল্পনা তৃণমূলের। রূপায়ণের দায়িত্বও তাদেরই। ২,৫০০ টাকার বিনিময়ে (এই রাজনৈতিক বিনিয়োগও তৃণমূলেরই!) শেষ মুহূর্তের কেনাকাটিতে দিল্লির প্রাচীন বাজার, সংসদের নিকটবর্তী গোল মার্কেটে ৬৫ জন সাংসদের প্রত্যেকের জন্য থালা অবশ্য পাওয়া যায়নি। মিলেছে ৪০টি থালা। এসপি, এনসিপি, ডিএমকে, শিবসেনা-সহ দলগুলির সাংসদরা তাই নিয়েই আসরে। সামাজিক দূরত্বের কারণে মিডিয়ার উপস্থিতিও ছিল নগণ্য। ক্যামেরার দায়িত্বে ছিলেন তৃণমূলের দুই সাংসদ অর্পিতা ঘোষ এবং মৌসম বেনজির নূর।
‘সুপারমম নই!’
যিনি রাঁধেন, তিনি রাজনীতিও করেন। তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের কন্যা কে কবিতা সাদার্ন মিসিসিপি ইউনিভার্সিটি থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে এমএস ডিগ্রি করে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে চাকরি করতেন। দেশে ফেরেন ২০০৪-এ। তার পরে ব্যবসায়ী দেভানপল্লি অনিল কুমারের সঙ্গে বিয়ের পরে ফের আমেরিকা চলে গিয়েছিলেন। আবার বাবাকে রাজনীতিতে সাহায্য করতে হায়দরাবাদে ফিরে আসেন। রাজনীতিতে নেমেই সাংসদ হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু গত লোকসভায় হেরে যাওয়ার পরে একেবারে তৃণমূল স্তর থেকে রাজনীতি শুরু করেছেন। সঙ্গে আবার দুই ছেলে আদিত্য ও আর্যকেও সামলাচ্ছেন। তবে হাসিমুখে বলেন, ‘আমি সুপারমম নই’।
দম্পতি: স্বামীর সঙ্গে কে কবিতা
তথাগতের কন্যালাভ
ছেলের কথায় রাজনীতি ছেড়েছিলেন। আর রাজনীতি ছাড়ার পর, মেয়ের বাবা হলেন বিজু জনতা দলের তথাগত শতপথী। ঢেঙ্কানল থেকে টানা চার বারের সাংসদের মা ছিলেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী, নন্দিনী শতপথী। ২০১৯-এ ৬৪ বছরের তথাগতবাবু নির্বাচনী রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ান। দু’টি সংবাদপত্রের মালিক তথাগতের কথায়, ১৩ বছরের ছেলে আরিল চে চায়, তিনি বাড়িতে থাকুন। সাংবাদিকতায় মন দিন। তথাগত দিল্লির সাংসদ ও বন্ধুদের ‘আনন্দ সংবাদ’ পাঠিয়েছেন। তাঁর ঘরে কন্যাসন্তান এসেছে। তথাগতের জন্য শুভেচ্ছাবার্তায় কমতি নেই।