বিজেপিতে বাজছে সুর ‘লগে রহো তোমরভাই’
মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বাবুলাল গৌড় তো তাঁর নামই দিয়েছিলেন ‘মুন্নাভাই’। নরেন্দ্র সিংহ তোমর যখন মধ্যপ্রদেশে বিজেপির রাজ্য সভাপতি হলেন, তখন বাবুলাল মজা করে তাঁকে বলেছিলেন, ‘লগে রহো মুন্নাভাই’। কারণ, এর পরে দিল্লি থেকে ডাক আসবে। মোদী জমানায় ইস্পাত, খনি, শ্রম, সংসদীয় বিষয়ক, জলনিকাশি, গ্রামোন্নয়ন, পঞ্চায়েতি রাজ— এক এক সময়ে এক এক মন্ত্রক সামলাতে হয়েছে তোমরকে। কিন্তু অধুনা কৃষি আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে যেমন প্রচার পাচ্ছেন, গ্বালিয়রের নেতা তোমর তেমন প্রচার কিন্তু আগে কখনওই পাননি। গ্বালিয়রের মহারাজা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াকে সাদরে বিজেপিতে নিয়ে আসায় তোমরের গোসা হবে কি না, তা নিয়ে বিজেপিতে কিছু জল্পনা ছিল। এখন অবশ্য সেই তোমরকেই কৃষক নেতাদের সঙ্গে রফার দায়িত্ব সামলাতে হচ্ছে। বিজেপির অন্দরেও তাই ফের সুর বাজছে, ‘মুন্নাভাই, লগে রহো’।
ফুটপাতে ধর্না
দিল্লির সীমানায় আন্দোলনকারী কৃষকরা জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁদের মঞ্চে কোনও রাজনীতিকদের জায়গা হবে না। পঞ্জাবের কংগ্রেস সাংসদরা তাই যন্তরমন্তরের ফুটপাতে ধর্নায় বসেছেন। মণীশ তিওয়ারি, রবনীত সিংহ বিট্টু, গুরজিৎ সিংহ অউজলা-র মতো পঞ্জাবের কংগ্রেস সাংসদরা শীতের মধ্যেই ফুটপাতে বসে থাকছেন। তাঁদের জন্য এক দিন আবার বাড়ির রান্না করা খাবার নিয়ে অধীর চৌধুরীর স্ত্রী অতসী চৌধুরী যন্তরমন্তরে হাজির হলেন। লোকসভার কংগ্রেস দলনেতার স্ত্রী-কে তাঁদের কথা মনে করে নিজে থেকে খাবার নিয়ে আসতে দেখে অভিভূত হয়ে পড়েছেন রবনীতরা।
রহিমের সমাধি
সম্রাট আকবরের অভিভাবক বৈরাম খানের একমাত্র পুত্র আবদুর রহিম খান-ই-খানান। তিনি শুধুই মোগল দরবারের অন্যতম নক্ষত্র ছিলেন না। খ্যাতনামা কবি, অনুবাদকও ছিলেন। তাঁর রচনাগুলি কবীর, সুরদাসের দোঁহার মতোই জনপ্রিয় ছিল। সুফি সন্ত হজরত নিজামুদ্দিন আউলিয়ার দরগার কাছেই রহিম তাঁর স্ত্রী মাহ বানু বেগমের সমাধি সৌধ তৈরি করেছিলেন। রহিমের মৃত্যুর পর তাঁকেও সেখানেই সমাধি দেওয়া হয়। কিন্তু পরবর্তী কালে সেই অপূর্ব সমাধি থেকেই দামি পাথর খুলে সফদরজঙের সমাধির মতো অন্যত্র ব্যবহার হয়েছে। গত ছয় বছর ধরে আর্কিয়োলজিকাল সার্ভে ও আগা খান ট্রাস্ট ফর কালচারের চেষ্টায় ভগ্নপ্রায় খান-ই-খানানের সমাধির হৃতগৌরব কিছুটা হলেও ফিরিয়ে দেওয়া হল। রহিমের ৪৬৪তম জন্মবার্ষিকীতে তাঁর সমাধিও ফের খুলে দেওয়া হল।
মধ্যস্থতাকারী: কৃষকদের সঙ্গে কথা বলছেন কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমর
দুষ্যন্তের কপাল মন্দ
ছয় ফুট চার ইঞ্চি উচ্চতার দুষ্যন্ত চৌটালাকে দেখে সকলেই বলে, তাঁর এই উচ্চতাটা না কি প্রপিতামহ, প্রাক্তন উপ-প্রধানমন্ত্রী চৌধুরী দেবী লালের থেকে পাওয়া। পঞ্জাব-হরিয়ানার কৃষকদের আন্দোলন শুরু হওয়ায় হরিয়ানার উপ-মুখ্যমন্ত্রী দুষ্যন্ত চৌটালা এখন প্রবল চাপে পড়েছেন। চাষিদের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁকে অবিলম্বে উপ-মুখ্যমন্ত্রীর গদি ছাড়তে চাপ দিয়ে চলেছেন বিরোধীরা। দুষ্যন্ত দিল্লিতে এসে মোদী সরকারের মন্ত্রীদের সঙ্গে বার বার দরবার করছেন। কিন্তু এরই ফাঁকে স্ত্রী-কে নিয়ে খান মার্কেটে বিকেলে ঘুরতেও যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। মাত্র ২৬ বছর বয়সে লোকসভার সাংসদ হয়ে রেকর্ড করার আগে দুষ্যন্ত দিল্লিতে আইন পড়তেন। সে সময় তিনি প্রায়ই খান মার্কেটে যেতেন। বলিউডে দুষ্যন্তের প্রিয় নায়ক কিন্তু এখনও ধর্মেন্দ্র। ভাই দিগ্বিজয় দুষ্যন্তকে তাই মজা করে ‘বুঢঢা’ বলে ডাকেন। কিন্তু মুশকিলের কথা হল, এত প্রিয় ধর্মেন্দ্রও এখন কৃষকদের পাশেই দাঁড়িয়েছেন। তাই দুষ্যন্ত পড়ে গিয়েছেন মহা ফাঁপরে। এ বার গদি গেলে যদি তা আর তাঁর কাছে ফিরে না আসে!
উদ্বিগ্ন: মহা ফাঁপরে দুষ্যন্ত চৌটালা
কানের কাছে মোদী-নাম
পঞ্জাবের কৃষক বিদ্রোহে সসেমিরা দশা নরেন্দ্র মোদীর। আন্দোলনকারীদের খলিস্তানপন্থী বলে দাগিয়ে দেওয়া, লাঠি চালানোয় হিতে বিপরীত হয়েছে। আন্দোলন গতি পেয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তিনি কতটা শিখদের বন্ধু, তা প্রমাণে মাঠে নামানো হয়েছিল রেলের সংস্থা আইআরসিটিসি-কে। যাত্রী-তথ্যভান্ডার থেকে বেছে ৫ দিনে ২ কোটি শিখ পরিবারকে মোদীর গুণকীর্তন করে ইমেল পাঠিয়েছে সংস্থা। জানানো হয়েছে, কী ভাবে শিখদের উন্নতিতে সক্রিয় রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। লাভ হয়েছে কি না বলা শক্ত, কিন্তু আন্দোলন যত গড়াচ্ছে, তত চাপ বাড়ছে সরকারের উপর।