দাড়ি ও স্মৃতির অনন্য রং লকডাউনে
একের পর এক সরকার বদলাল রাজধানীতে। কিন্তু লোক জনশক্তি দলের পোড় খাওয়া নেতা তথা কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ানের দাড়ির রং কেন ফিকে হল না, তা নিয়ে নানা মুনির নানা মত। কুচকুচে কালো দাড়িতে রামবিলাসকে এখনও নওজওয়ান দেখায় বলেই মত দিল্লির নেতাদের। কিন্তু লকডাউনের ফলে সব পরিচর্যা এখন বাড়িতেই করতে হচ্ছে। যে হেতু অত্যন্ত শখের দাড়ি, তাই আর কেউ নয়, খোদ পুত্র চিরাগ পাসোয়ানের উপরেই ভার পড়ল বাপের দাড়ি কাটার! কাজটি নিপুণ ভাবে কাটতে পেরে যে পুত্র উৎফুল্ল, তা চিরাগের সাম্প্রতিক টুইটেই প্রমাণ। বাবার দাড়ি কাটার ছবি পোস্ট করে তিনি লিখেছেন, ‘‘সময়টা কঠিন। কিন্তু সব কিছুরই একটা উজ্জ্বল দিক থাকে। আমার যে এই দক্ষতা আছে , সেটাই তো জানতাম না! কোভিড-১৯ অনেক স্মৃতিও গড়ে দিচ্ছে।’’
একলা জয়া
স্বামী রয়েছেন তাঁর মুম্বইয়ের জুহুর বাংলোয়। লকডাউনের জেরে সমাজবাদী পার্টির সাংসদ স্ত্রী আটকে পড়েছেন লোদী রোডে তাঁর বাড়িতে। সম্প্রতি জয়ার জন্মদিনও কাটল একলাই। অমিতাভ-জয়ার যোগাযোগের ভরসা এখন স্মার্টফোনই। ফোনেই জয়াকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছে তাঁর পরিবার। প্রতি দিন করোনা মোকাবিলা নিয়ে নিজের দলীয় নেতা কর্মীদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি, দু’ঘন্টা করে হাঁটছেন জয়া বচ্চন নিজের বাড়ির লনে।
সনিয়ার পরামর্শ
প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো সনিয়া গাঁধীর সাম্প্রতিক চিঠি নিয়ে এখন জোর জল্পনা রাজধানীতে। কারণ সনিয়া নরেন্দ্র মোদীর কাছে সুপারিশ করেছেন, আগামী দু’বছর সংবাদমাধ্যমে সমস্ত সরকারি বিজ্ঞাপন বন্ধ রাখা হোক। সেই অর্থ খরচ হোক করোনা-মোকাবিলায়। কংগ্রেস নেতাদের আশঙ্কা, এতে তো সংবাদপত্র, বৈদ্যুতিন মাধ্যমের আয় কমে যাবে। রাজ্যে রাজ্যে কংগ্রেস সরকারগুলিও এ কাজ করবে কি না, সে জবাবও মিলছে না। কেউই এখন আর কংগ্রেস সভানেত্রীকে এ বিষয়ে পরামর্শ দেওয়ার কৃতিত্ব নিতে রাজি নন।
পুণ্যসলিলার কৃতিত্ব
টিভি-র পর্দায় তিনি এখন পরিচিত মুখ। প্রতি দিন বিকেলে করোনা-পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের সাংবাদিক সম্মেলনে হাজির হচ্ছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্মসচিব লব আগরওয়াল ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের যুগ্মসচিব পুণ্যসলিলা শ্রীবাস্তব। লব যেমন আইআইটি-র প্রাক্তনী, পুণ্যসলিলার পড়াশোনা ফিজ়িক্স নিয়ে। দিল্লির সেন্ট স্টিফেন্স কলেজের প্রাক্তনী পুণ্যসলিলা অমিত শাহর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে মহিলা নিরাপত্তা বিষয়ে দেখভালের দায়িত্বে। কিন্তু অনেকেই জানেন না, দু’বছর আগে পর্যন্তও তিনি দিল্লির অরবিন্দ কেজরীবাল সরকারের শিক্ষা দফতরের সচিব ছিলেন। দিল্লির সরকারি স্কুলের ভোল পাল্টাতে উপ-মুখ্যমন্ত্রী মনীশ সিসৌদিয়া, উপদেষ্টা অতিশি মারলেনার সঙ্গেই অনেকখানি কৃতিত্ব পুণ্যসলিলার প্রাপ্য।
ঠিক যেন
লকডাউনের প্রভাব আর কত সুদূরপ্রসারী হবে? এই সময়টায় রাহুল গাঁধী কি পুরোপুরি তাঁর বাবার মতো দেখতে হয়ে যাচ্ছেন!
কেউ পরিহাসের ছলে, কেউ অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে এই মত প্রকাশ করতে ব্যস্ত। লকডাউন অবস্থাতেই রাহুল গাঁধী সম্প্রতি ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন। তাঁকে দেখা কংগ্রেস নেতারা মনে করছেন, রাহুল নিয়মিত শরীরচর্চা করছেন, সেটা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। ঘরবন্দি থাকার ফলে তাঁর চুলও লম্বা
হয়েছে। কিন্তু ও দিকে আবার, গালে যে আলসে দাড়িটা থাত, সেটা আর নেই। সব মিলিয়ে সাদা শার্টে রাহুলকে অনেকটাই প্রয়াত রাজীব গাঁধীর মতো দেখতে লাগছে বলে দলের নেতাদের মত।
বড় উপহার?
জম্মু-কাশ্মীর পুনর্গঠন আইন তৈরির গুরুদায়িত্ব অনেকটাই সামলেছিলেন তিনি। সেই আইনের হাত ধরেই কাশ্মীরের ৩৭০ রদ। তার পরে রামমন্দির নির্মাণের জন্য ট্রাস্ট তৈরির দায়িত্বও পড়েছিল তাঁর কাঁধে। সম্প্রতি মোদী সরকার দু’ডজন আইএএস অফিসারকে সচিব হিসেবে তালিকাভুক্ত করলেও, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের আমলা জ্ঞানেশ কুমারের ভাগ্যে শিকে ছেঁড়েনি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাশ্মীর ডিভিশনের এই অতিরিক্ত সচিবের জন্য আরও বড় উপহার অপেক্ষা করছে কি না, তা নিয়ে ঘর-বন্দি অফিসারদের মধ্যেই ফোনে ফোনে জল্পনা চলছে।