উৎসবের রসিদ। নিজস্ব চিত্র
বসন্ত উৎসব আয়োজনের জন্য হোটেল মালিকদের কাছ থেকে রসিদ ছেপে হাজার হাজার টাকা আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে তাজপুরে।
অভিযোগের তির স্থানীয় একটি মহিলা সমিতির দিকে। যার পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন রামনগর-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শম্পা মহাপাত্র। দোলের আগে তাজপুরে এ নিয়ে হোটেল মালিকদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিলেও এ নিয়ে কোথাও লিখিত অভিযোগ হয়নি। এ ব্যাপারে শম্পার দাবি, ‘‘রসিদ ছেপে উৎসবের জন্য অর্থ সংগ্রহের ঘটনা আমার জানা ছিল না। এখনই সদস্যদের সতর্ক করে দিচ্ছি।’’
হোটেল ব্যবসায়ীদের একাংশ জানাচ্ছেন, তালগাছাড়ী-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত সাহেবপুর গ্রামের একটি মহিলা সমিতি এ বছর বসন্ত উৎসবের আয়োজন করেছে। আগামিকাল, সোমবার ওই উৎসবের উদ্বোধক হিসাবে এলাকার বিধায়ক অখিল গিরি-সহ ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের নির্বাচিত জন প্রতিনিধিরা আমন্ত্রিত। অতিথিদের নাম দেওয়া আমন্ত্রণপত্র ছাপা হয়েছে। বসন্ত উৎসবের পাশাপাশি ফুটবল প্রতিযোগিতা এবং সন্ধ্যায় যাত্রার আয়োজন রয়েছে।
ওই উৎসব ঘিরেই বিতর্কের সূত্রপাত। তাজপুর এলাকার একাধিক হোটেল ব্যবসায়ীর অভিযোগ, উৎসবের নামে রীতিমত রসিদ ছেপে ইচ্ছা মতো টাকা নেওয়া হচ্ছে তাঁদের কাছ থেকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তাজপুরের এক হোটেল মালিক বলেন, ‘‘কত টাকা দিতে হবে, রসিদে কিছু উল্লেখ থাকছে না। তবে মৌখিকভাবে কম করে পাঁচ হাজার টাকা করে দিতে আমাদের বাধ্য করা হচ্ছে।’’ আরও এক হোটেল মালিকের দাবি, ‘‘এমনিতেই এ বছর ব্যবসা মন্দা গিয়েছে। তারপর এভাবে জোর করে হাজার হাজার টাকা চাঁদা দিতে খুব সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।’’
কিন্তু জোর করে যদি চাঁদা নেওয়া হচ্ছে, তা হলে প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হচ্ছে না কেন? ব্যাবসায়ীরা জানাচ্ছেন, যে সমিতির এই অনুষ্ঠান, তার সম্পাদক স্থানীয় তৃণমূল নেত্রী শম্পা মহাপাত্র। তাই শাসকদলের ‘কোপে পড়ার ভয়েই’ নাকি হোটেল ব্যবসায়ীরা অভিযোগ না করে টাকা দিয়ে দিচ্ছেন।
হোটেল ব্যবসায়ীদের ওই অভিযোগ অবশ্য জানা নেই বলে জানাচ্ছেন সেখানের হোটেল মালিক সংগঠনের সম্পাদক তথা কাঁথি-৩ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শ্যামল দাস। তিনি বলেন, ‘‘ওই উৎসব কমিটি কোনও ব্যবসায়ীর কাছ থেকে জোর করে টাকা নিচ্ছে বলে জানা নেই। এ ব্যাপারে কেউ কোনও লিখিত অভিযোগও জানাননি।’’ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক অখিল গিরিও জানিয়েছেন, বিষয়টি তাঁর অজানা। খোঁজ নিয়ে দেখছেন।