Editorial news

জানার অধিকার রয়েছে গোটা ভারতের

জম্মু-কাশ্মীরের বিষয়ে ভারত সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং যে পদক্ষেপ করেছে, তাকে অনেকেই সমর্থন করছেন।

Advertisement

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৯ ০০:৫৪
Share:

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

জম্মু-কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ, ভারত সরকার বরাবর বলে এসেছে এ কথা। ভারতের প্রত্যেক নাগরিক অথবা ভারতের অধিকাংশ নাগরিক এ কথা বিশ্বাসও করেন। সুতরাং জম্মু-কাশ্মীরের নাগরিকরাও কিন্তু ভারতীয় জনগোষ্ঠীর অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। সেখানে বসবাসকারী প্রত্যেক ব্যক্তিই অবশিষ্ট ভারতের পরম আপন, আমরা পরস্পরের সহ-নাগরিক। এক বিরল সন্ধিক্ষণে যখন দাঁড়িয়ে রয়েছে জম্মু-কাশ্মীর, তখন সেখানকার বাসিন্দাদের কুশল-অকুশল সম্পর্কে জানার জন্য অবশিষ্ট ভারতকে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা নিয়ে অপেক্ষা করতে হবে কেন?

Advertisement

জম্মু-কাশ্মীরের বিষয়ে ভারত সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং যে পদক্ষেপ করেছে, তাকে অনেকেই সমর্থন করছেন। অনেকে এর বিরোধীতাও করছেন। অনেকে আবার পদক্ষেপকে সমর্থন করেও পদক্ষেপ করার প্রক্রিয়াটার সমালোচনা করছেন। এ বিতর্ক সহজে থামার নয়। যে পদক্ষেপ সরকার করল, তাতে ভাল হবে, নাকি মন্দ, তার জবাব আপাতত ভবিষ্যতের গর্ভে। কিন্তু জম্মু-কাশ্মীরের মানুষ এখন কী অবস্থায় রয়েছেন, আমাদের সহ-নাগরিকরা সেখানে কী পরিস্থিতিতে দিনযাপন করছেন, সে জবাবটাও আমরা ভবিষ্যতে কোনও একদিন জানতে পারব— এই রকম ভেবে নিয়ে নিশ্চিন্তে বসে থাকা সম্ভব নয়।

নাগরিক জীবন যে জম্মু-কাশ্মীরে এখন মোটেই স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে নেই, তা বলাই বাহুল্য। ৩৭০ ধারা জম্মু-কাশ্মীর থেকে প্রত্যাহারের কথা ঘোষিত হওয়ার পরে বা জম্মু-কাশ্মীর পুনর্গঠনের দিন সংসদে পাশ হওয়ার পরে বড় অশান্তি বা হিংসার খবর সেখান থেকে আসেনি ঠিকই কিন্তু পরিস্থিতি যে অপ্রীতীকর হয়ে ওঠেনি, সে বিষয়ে নিশ্চিত হতেও তো পারছি না। জম্মু-কাশ্মীর থেকে কোনও খবরই তো আসলে আসছে না। এই পরিস্থিতি মেনে নেওয়া সম্ভব নয়, এই পরিস্থিতি চলতে দেওয়া যায় না।

Advertisement

ম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

আরও পড়ুন: লাদাখের নাম না করে ভারতকে সতর্কবার্তা, কাশ্মীর নিয়ে ‘সাবধানী’ মন্তব্য চিনের

জম্মু-কাশ্মীরে টেলিফোন পরিষেবা বন্ধ, মোবাইল নেটওয়ার্ক অকেজো, ইন্টারনেট অচল, কেব‌্ল টিভির সম্প্রচার রুদ্ধ। সরকারি নির্দেশেই এ সব হয়েছে। বিপুলায়তন নিরাপত্তাবাহিনীর ঘেরাটোপে ভূস্বর্গকে মুড়ে ফেলা হয়েছে। এলাকার পরিস্থিতি ঠিক কী রকম, সে সম্পর্কে বিচ্ছিন্ন বা বিক্ষিপ্ত ভাবে দু’একটা ছবি উঠে আসছে অসীম প্রতিবন্ধকতার মধ্যে কাজ করতে থাকা সংবাদমাধ্যমের সৌজন্যে। কিন্তু সে ছবি একেবারেই যথেষ্ট নয় সামগ্রিক পরিস্থিতি বোঝার জন্য। কার্ফু বলবৎ থাকায় রাস্তাঘাটে সে ভাবে দেখাই যাচ্ছে না জম্মু-কাশ্মীরের সাধারণ নাগরিকদের। সুতরাং তাঁদের দিনগুলো এই মুহূর্তে ঠিক কী ভাবে কাটছে, বোঝার কোনও উপায় থাকছে না। দেশের সরকারকে মাথায় রাখতে হবে যে, গোটা ভারত আশা-আশঙ্কার দোলাচল নিয়ে তাকিয়ে রয়েছে ভূস্বর্গের দিকে, অপেক্ষা করছে সেখানকার বাসিন্দাদের কুশল জানার জন্য। এই খবরাখবর পাওয়ার অধিকার দেশবাসীর রয়েছে। অতএব অবিলম্বে পরিস্থিতিতে স্বাভাবিকতা ফেরাতেই হবে। অবিলম্বে মানে কিন্তু অবিলম্বেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement