সেই যদুবংশ এবং সেই মুষল পর্ব।
অভূতপূর্ব সঙ্কটে সমাজবাদী পার্টির শীর্ষ নেতৃত্ব। নিজের হাতে দল গড়েছিলেন মুলায়ম সিংহ যাদব। দলকে পৌঁছে দিয়েছিলেন এক অসামান্য রাজনৈতিক উচ্চতায়। সেই শিখরে দাঁড়িয়েই পরিবারের আত্মঘাতী কলহটা দেখছেন এখন। আত্মীয়দের মধ্যে, অত্যন্ত কাছের মানুষগুলোর মধ্যে, রাজনৈতিক সহকর্মীদের মধ্যে তুঙ্গে পৌঁছে যাওয়া কলহটায় রাশ টানতে পারছেন না আপ্রাণ চেষ্টাতেও।
অদ্ভুত সমাপতন হল, মহাভারতের মতো এই মুষল পর্বের কেন্দ্রেও এক যদুবংশই। মুলায়মের পরিবারে আজ যেন মহাভারতের উত্তরাধিকার।
দিনের শেষে আজ কি ঈষৎ বিষণ্ণ মুলায়ম সিংহ যাদব? অস্তগামী সূর্য সাক্ষী, বিষণ্ণ হওয়ার কারণও ছিল। দেশের বিস্তীর্ণ অংশে অশ্বমেধের ঘোড়া ছুটিয়ে আসার পর লাগামে টান পড়ল পারিবারিক আঙিনাতেই। টান পড়ল বড় বেয়াব্রু ভঙ্গিতে।
অন্দরমহলের কেচ্ছা রাজপথে এসে পড়াটা কাম্য নয় কখনোই। কিন্তু মুলায়মের অন্দরমহলটা মারাত্মক রকম বেআব্রু হয়ে পড়ল আজ। আশঙ্কা যতটা ছিল, তাকে ছাপিয়ে গেল। প্রকাশ্য মঞ্চে মুলায়মের ভ্রাতা মুলায়মের পুত্রকে মিথ্যাবাদী আখ্যা দিচ্ছেন, সর্বসমক্ষে মুলায়মের ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহকর্মীকে ষড়যন্ত্রী বলে আক্রমণ করছেন পুত্র, দলের কোনও তৃতীয় বা চতুর্থ সারির নেতা সরাসরি অভিযোগের তির হানছেন দলপতির স্ত্রীয়ের দিকে, লখনউয়ের রাজপথে পরস্পরের মধ্যে সংঘর্ষে জড়াচ্ছেন দলেরই কর্মীরা। উত্তরপ্রদেশ থেকে দিল্লি পর্যন্ত প্রবল প্রতাপে বিরাজ করতেন যে যদুকুলপতি, পারিবারিক তথা দলীয় মুষল পর্বের মাঝে তিনি যেন খানিকটা অসহায় আজ। রাশটা ধীরে ধীরে হাতছাড়া হতে দেখছেন যেন।
মহাভারতে মুষল পর্ব যদুবংশের সংহারক হয়ে দেখা দিয়েছিল। উত্তরপ্রদেশের মহাভারতেও তেমনই ঘটতে চলেছে, সে কথা বলার সময় আসেনি এখনও। তবে গোটা ভারতের নজরই আপাতত যদুবংশের দিকেই থাকছে।