—প্রতীকী ছবি
করোনা প্রতিষেধক দেওয়া শুরু হয়েছে ঠিকই। কিন্তু পশ্চিম বর্ধমান জেলায় এখনও এই প্রতিষেধক নিতে স্বাস্থ্য কর্মীরাই অনীহা দেখাচ্ছেন। পরিসংখ্যানে ইঙ্গিত তেমনই। প্রতিষেধক প্রয়োগের তৃতীয় দিন, মঙ্গলবারও লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে পারেনি জেলা স্বাস্থ্য দফতর। দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন জেলার ছ’টি কেন্দ্র থেকে মোট ৩৭৩ জন স্বাস্থ্যকর্মী প্রতিষেধক নিয়েছেন। প্রতিষেধক নেওয়ার প্রতি স্বাস্থ্যকর্মীদের আগ্রহ বাড়াতে এ বার সরাসরি সচেতনতা প্রচারে নেমেছে ‘ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)’-এর আসানসোল শাখা।
এ দিকে, প্রাথমিক ভাবে খোঁজখবর করার পরে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, এই প্রতিষেধক নিয়ে এখনও দ্বিধাগ্রস্থ রয়েছেন স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশ। তাঁরা এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বিষয়ে এখনও পুরোপরি আশ্বস্ত হতে পারছেন না। আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে চাইছেনন তাঁরা। প্রসঙ্গত, প্রথম দিনই প্রতিষেধক নিতে বেঁকে বসেছিলেন সালানপুরের তালিকাভুক্ত আশাকর্মীরা। তাঁরা দাবি করেন, আগে এক জন চিকিৎসককে নিতে হবে। সব দেখে পরে তাঁরা নেবেন। শেষ পর্যন্ত তাই-ই হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান বলছে, এর পরেও পরের দু’দিন বহু স্বাস্থ্যকর্মীই প্রতিষেধক নিতে কেন্দ্রমুখো হননি। তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও মঙ্গলবার আসানসোলের দিলদারনগরে পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রতিষেধক নেননি এক স্বাস্থ্যকর্মী। তাঁর স্পষ্ট জবাব, ‘‘আরও কিছুদিন দেখতে চাই। পরের বার নেব।’’
এ প্রসঙ্গে সিএমওএইচ অশ্বিনীকুমার মাজির দাবি, ‘‘এখনও পর্যন্ত যাঁরা প্রতিষেধক নিয়েছেন তাঁদের শারীরিক সমস্যা হয়নি।’’ তিনি বলেন, ‘‘তাঁদের দেখে বাকিদের অনুপ্রাণিত হওয়া উচিত।’’ তবে আইএমএ-র রাজ্য সদস্য প্রভাস মাজি বলেন, ‘‘করোনা একটি নতুন ভাইরাস। প্রতিষেধকও নতুন। তাই অনেকেই দ্বিধাগ্রস্থ। তাই আমরা আশ্বস্ত করছি, এই প্রতিষেধক নেওয়ার পরে কারও কোনও সমস্যা হলে আমারাই তার সমাধান করব।’’
তবে স্বাস্থ্যকর্মীদের অনাগ্রহের অভিযোগ পুরোটাই ঠিক নয় বলে মন্তব্য করেছেন জেলার এক জন সরকারি চিকিৎসক। তাঁর দাবি, ‘‘মঙ্গলবার সালানপুরের পিঠাইকেয়ারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রায় ৫০ জন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সদস্য প্রতিষেধক নিতে এসেছিলেন। কিন্তু তালিকায় তাঁদের নাম নেই। তাই তাঁদের ফিরে যেতে হয়েছে। তাই নামের তালিকা তৈরির কাজ কেন্দ্রীয় ভাবে দিল্লি থেকে নিয়ন্ত্রণ না করে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের হাতে দিলে লক্ষ্যমাত্রা সহজেই পূরণ হয়ে যেত।’’
আইএমএ-র আসানসোল শাখা সূত্রের খবর, সংগঠনের চিকিৎসক ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের প্রায় সাড়ে চারশো জনের নামের একটি তালিকা তৈরি করে জেলা স্বাস্থ্য দফতরে জমা করা হয়েছে। সংগঠনের সভাপতি তথা প্রাক্তন এসিএমওএইচ শ্যামল সান্যাল বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রতিষেধক নিতেই হবে। এখনও পর্যন্ত জেলায় এই প্রতিষেধক নেওয়ার পরে শারীরিক সমস্যার কথা শোনা যায়নি। জেলা জুড়ে প্রচার করছি। প্রচারে সোশ্যাল মিডিয়াকেও ব্যবহার
করা হচ্ছে।’’