কল্পনা করতেই পারি, শুণ্ডির রাজপ্রাসাদে দুই ভায়রাভাইয়ের জামাই ষষ্ঠী ছিল প্রতি দিনের ব্যাপার। অলঙ্করণ: তিয়াসা দাস।
আচ্ছা, গুপী গাইন ও বাঘা বাইনের কি জামাই ষষ্ঠী হত? তেমন কোনও ইঙ্গিত কি পাওয়া যায় সত্যজিৎ ও সন্দীপ রায়ের তিনটি ছবিতে? ‘হীরক রাজার দেশে’-তে বিরাট গৌরবের সঙ্গে নিজেদের পরিচয় ‘রাজার জামাই’ হিসেবে দিলেও, জামাই ষষ্ঠীর ব্যাপারে কিছু জানায়নি ভূতের রাজার প্রসাদপ্রাপ্ত এই গায়েন-বায়েন মানিকজোড়। কিন্তু আমরা কল্পনা করতেই পারি, শুণ্ডির রাজপ্রাসাদে দুই ভায়রাভাইয়ের জামাই ষষ্ঠী ছিল প্রতি দিনের ব্যাপার। প্রথম ছবিতে যদিও গুপী আর বাঘা যথাক্রমে শুণ্ডি ও হাল্লার রাজার জামাই ছিল, দ্বিতীয় ছবিতে তাদের শুণ্ডির জামাই হিসেবেই দেখানো হয়েছিল। সে যাই হোক, কার্যত তারা দু’জনেই ‘রাজার জামাই’। বাংলার সংস্কৃতিতে জামাতাকে ‘জামাই রাজা’ বলে ডাকা হয় না বটে, কিন্তু গুগাবাবা-র উদাহরণে ‘রাজার জামাই’ অতি চেনা লব্জ। ষষ্ঠী হোক বা না হোক, জামাই মানেই খাতিরের একশেষ— এই সার সত্য বাঙালি জানে।
বাংলা সাহিত্যে জামাই ষষ্ঠীর তেমন রমরমা দেখা না গেলেও, অস্বীকার করার উপায় নেই, বাঙালির সংস্কৃতিতে জামাই ষষ্ঠী একটা রীতিমতো জম্পেশ ব্যাপার। মনে রাখতে হবে, সেলুলয়েডে বাঙালির বোল ফুটেছিল জামাই ষষ্ঠীরই কল্যাণে। ১৯৩১ সালে তোলা হয় বাংলার প্রথম সবাক কাহিনিচিত্র ‘জামাই ষষ্ঠী’। পরিচালক ছিলেন অমর চৌধুরী। সেই ছবি দেখার সৌভাগ্য না হলেও অনুমান করা যায়, সে ছবি ছিল নির্ভেজাল কমেডি। সেকালের ছায়াছবির দস্তুর মোতাবেক তা স্ল্যাপস্টিক কমেডিও হতে পারে। কিন্তু ভাবার ব্যাপার একটাই, কেন অমরবাবু তাঁর প্রথম সবাক ছবির বিষয় হিসেবে জামাই ষষ্ঠীকে বেছে নিলেন?
একটু তলিয়ে ভেবে দেখলে বোঝা যায়, জামাই ষষ্ঠী এমন এক পরব, যার খাতির রয়েছে, কিন্তু মান নেই। মানে, জামাই নামক সম্পর্কটাকে ধরে খাতিরদারি দেদার এই উৎসবের, কিন্তু বাজারে কেমন যেন একটা তিরছি নজরে দেখা হয় জামাই ষষ্ঠীকে। জামাইয়ের আদর আছে, কিন্তু জামাই ষষ্ঠী কেমন যেন একটা টিটকিরি-মাখা অ্যাফেয়ার। কিন্তু আদতে এই অনুষ্ঠানটির পিছনে ছিল সংসারের শুভকামনা আর পরবর্তী প্রজন্মের কল্যাণের আকাঙ্ক্ষা। ষষ্ঠীদেবীর উৎস লৌকিক। শাস্ত্র-পুরাণে তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। লোকজীবনে সন্তান-কামনা ও সন্তানের সার্বিক শ্রী কামনা করেই তাঁর ব্রত ধারণ করে আসছেন মহিলারা। জামাই ষষ্ঠী তার ব্যতিক্রম নয়। কন্যাসন্তানের সুবাদে পরিবারে আগত জামাতাকেও সন্তান হিসেবে বরণ করে নেওয়ার অভিজ্ঞান এই আচারের পরতে পরতে। সেই অনুষঙ্গেই খাওয়াদাওয়া। আরও একটা সামাজিক ব্যাপার এই আচারের মধ্যে নিহিত। সেটা এই পালন উপলক্ষে কন্যার পিতৃগৃহে আগমন। সেকালে মেয়েদের বাপের বাড়ি যাওয়া খুব নিয়মিত ছিল না। দূরে বিয়ে হলে তো কথাই নেই! কলকাতার বনেদি বাড়িগুলোয় বিশ শতকের প্রথমার্ধেও বউ আনা হত দূর থেকে। এর পিছনে একটা পুংতান্ত্রিক কলকাঠি কাজ করত অবশ্যই। বউ যাতে সহজে বাপের বাড়ি যেতে না পারে, তার বন্দোবস্ত আর কি! কিন্তু এহেন বজ্র আঁটুনির মাঝখানেই ষষ্ঠী ঠাকরুন খাপ পাততেন। জামাই ষষ্ঠী সেই পুংতন্ত্রকেই ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে মেয়েদের নিজস্ব এক আচার, যেখানে জামাইয়ের সঙ্গে মেয়ের আগমনটাও সুনিশ্চিত। আর বছরে ক’বারই বা জামাই আসেন শ্বশুরবাড়িতে! ফলে খাতিরদারি জমজমাট।
আরও পড়ুন: চব্বিশ বছরের বিবাহিত জীবনে এই প্রথম বাপের বাড়ি থেকে জামাইষষ্ঠীর তত্ত্ব এল না
পুরনো প্রসঙ্গ নিয়ে আলাপ শুরু করতেই কেমন নস্ট্যালজিক হয়ে পড়লেন অধ্যাপক পবিত্র সরকার। জানালেন, জামাই ষষ্ঠী শুধু জামাইয়ের জন্য নয়। সন্তানদের জন্যও পালিত হত এই অনুষ্ঠান। ‘‘মনে আছে, পূর্ববঙ্গে তালপাতার পাখা ভিজিয়ে বা কচি বাঁশপাতার গোছায় গঙ্গাজল দিয়ে মা সন্তানদের মাথায় ছিটে দিতেন। জামাই ষষ্ঠীর দিন বাড়ির ছেলেমেয়েদের নতুন জামাকাপড়ও হত। সব মিলিয়ে এটা ছিল সন্তানদের কল্যাণ কামনা করে পালিত এক আচার।’’
সমাজ-নৃতত্ত্বের এই সরল আখ্যানের সঙ্গে কী ভাবে কৌতুক জড়িয়ে পড়ল, সেটা অবশ্য ভেবে দেখার। ভারতীয় উপমহাদেশে জামাই নামক জীবটির উপরে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিটাই খানিকটা তেঁতুল মেশানো। এহেন অম্লরসের পিছনে কি রয়েছে জামাতাদের শ্বশুরবাড়ি ‘দোহন’-এর বিপরীতে দাঁড়িয়ে একটা প্রতিশোধ গ্রহণের প্রয়াস? পণপ্রথা, বধূ নির্যাতন, বিবিধ উপলক্ষ খাড়া করে শ্বশুরবাড়ি থেকে এটা-সেটা আহরণের উল্টো পিঠে জামাইকে নিয়ে পরিহাসের অছিলায় খানিক দাদ তোলা? হিন্দু বাঙালির বিয়ের লোকাচারগুলির মধ্যেই এই মনোবৃত্তির খানিকটা আঁচ পাওয়া যায়। সেই মনোবৃত্তির বাৎসরিক রিনিউয়ালই কি জামাই ষষ্ঠীর প্রতি এই বঙ্কিম চাহনি?
আরও পড়ুন: হিমসাগরের বদলে কাশ্মীরি আপেল, রসগোল্লার বদলে জয়নগরের মোয়া
অথচ এমনটা হওয়ার কথা নয়। কার্যত ১৯ শতকেও জামাই ষষ্ঠী নিয়ে রসিকতার তেমন ঢল ছিল না বাংলায়। হুতোম তাঁর নকশায় চড়ক, মাহেশের জগন্নাথদেবের স্নানযাত্রা, বারোইয়ারি ইত্যাদি নিয়ে সরব হলেও জামাই ষষ্ঠী নিয়ে একেবারেই নীরব। কারণটা কী? দীনবন্ধু মিত্র ‘জামাই বারিক’ নামের প্রহসন লিখলেও জামাই ষষ্ঠী বিষয়ে উচ্চবাচ্য করেননি। পঞ্জিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞাপনে ‘জামাই বদল’ বা ‘সাবাস জামাই বাবু’ নামের প্রহসনের নামও পাওয়া যাচ্ছে তা অসিত পাল মশাই তাঁর বিপুল শ্রমলব্ধ গবেষণা ‘আদি পঞ্জিকা দর্পণ’-এ দেখিয়েছেন। সে দিন থেকে হাল আমলের ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ’ পর্যন্ত জামাই নামক এক আর্কিটাইপের বাড়বাড়ন্ত। এই আর্কিটাইপটির ভিতরে রয়েছে শ্যালিকা-মোহন, শ্যালক-রঞ্জন, শ্বশুর-শোষক, শাশুড়ি-তোষক একটা চরিত্র। যে বাস্তবে হয়তো হয়ই না। কিন্তু বাংলার আবহমানের কালেক্টিভ ইম্যাজিনেশনে সে-ই হিরো। জামাই ষষ্ঠী কি সেই হিরোপন্থী-কেই সেলিব্রেট করার উৎসব? না কি নিজেও জামাই বলে হুতোম বা দীনবন্ধু এড়িয়ে গিয়েছেন জামাই ষষ্ঠী নিয়ে রসিকতার গলতা?
আদতে জামাই ষষ্ঠীর অনুষ্ঠানটির পিছনে ছিল সংসারের শুভকামনা আর পরবর্তী প্রজন্মের কল্যাণের আকাঙ্ক্ষা। অলঙ্করণ: তিয়াসা দাস।
জামাইদের সামাজিক স্তরে হাস্যকর করে তোলার পিছনে ক্রিয়াশীল ছিলেন ঘরজামাইরা। নইলে একগাদা অকর্মণ্য জামাইদের ব্যারাক নিয়ে কেন প্রহসন লিখবেন দীনবন্ধু মিত্র? ভারতের অন্যত্রও যে ঘরজামাইরা খাতিরের পাত্র ছিলেন না, তার আভাস পাওয়া যায় ‘তুলসীদাসের দোহা’ নামে পরিচিত ওরাল ট্র্যাডিশনেও। জামাতা যে ‘দশম গ্রহ’, এ কথা লিখে গিয়েছেন শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তাঁর অন্যতম সেরা ব্যোমকেশ-কাহিনি ‘দুর্গরহস্য’য় ভিলেন বাড়ির জামাই মণিলাল। সেই দশম গ্রহ আবার ঘরজামাই। ফলত সোনায় সোহাগা (সোনা আর সোহাগার ব্যাপারটা ‘দুর্গরহস্য’-র মূল জায়গা, এটা ভুললে চলবে না। তাই ঘরজামাই মণিলালের কুচক্রীপনার সঙ্গে সেটার কোনও অবচেতনগত সম্পর্ক রয়েছে কি না, সেটা ভেবে দেখা যেতে পারে।)। সেখানে অবশ্য চিরাচরিত রসিকতা থেকে জামাই অনেক দূরে। ফলে মণিলালের জামাই ষষ্ঠী নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য শরদিন্দুও করেননি।
বরং আর একটু পিছিয়ে গিয়ে গোপাল ভাঁড়ের কাহিনিগুলো ঘেঁটে দেখা যেতে পারে। শ্বশুরবাড়িতে এসে (জামাই ষষ্ঠীর নেমন্তন্ন রক্ষা করতে কিনা কে জানে!) জামাই বাবাজি আর ফেরত যাওয়ার নামটি করেন না। এমন অবস্থায় তাঁকে তাড়াতে শ্বশুর গোপাল স্ত্রীকে সন্ধেবেলা পাঠালেন লেবু গাছ থেকে লেবু পাড়তে। আবার ও দিকে জামাইকে তিনি বলে রেখেছেন, কারা যেন লেবু চুরি করছে। জামাই পারলে যেন একটু নজর রাখেন বিষয়টায়। জামাই দেখলেন, আমাথা ঘোমটা দেওয়া কে যেন লেবু পাড়ছে চুপিসাড়ে। তিনিও সন্তর্পণে গিয়ে তাকে জাপটে ধরলেন। শাশুড়ি আঁতকে উঠে হতবাক। ও দিকে গোপাল লণ্ঠন হাতে অকুস্থলে এসে জামাইকে সোজা দোষারোপ করতে শুরু করলেন শ্বাশুড়িকে জাপটে ধরার জন্য। এর পরে আর কোন জামাই শ্বশুরের অন্ন ধ্বংস করে?
আরও পড়ুন: আজকের জলভরা তৈরি হয়েছিল জামাইকে বোকা বানাতে, জামাই ষষ্ঠী নিয়েও রয়েছে ঘটি-বাঙাল ‘লড়াই’
আরও খানিক পিছিয়ে গেলে একটা চেনা প্রবাদের পিছনে জামাইদের বিচিত্র ছ্যাঁচড়ামির উদাহরণ খুঁজে পাওয়া যায়। ‘প্রহারেণ ধনঞ্জয়’ বলে যে লব্জটি আমরা প্রায়শই ব্যবহার করে থাকি, তার পিছনেও রয়েছে কোনও অনুষ্ঠান উপলক্ষে শ্বশুরবাড়ি এসে (এখানেও সন্দেহ হয় অনুষ্ঠানটি জামাই ষষ্ঠী কি না) চার জামাই স্থানুবৎ আস্তানা গাড়লেন। দিনের পর দিন জামাই-আপ্যায়ন করতে করতে শ্বশুরমশাইয়ের নাভিশ্বাস ওঠার উপক্রম। তাই শুরু হল কৌশলে জামাই বিতাড়নের চেষ্টা। প্রথম দিন জামাইদের পাতে ঘি দেওয়া হল না। তাতে অপমানিত হয়ে বড় জামাই হরি শ্বশুরবাড়ি ত্যাগ করলেন। পরের দিন খেতে বসার সময়ে পিঁড়ি দেওয়া হল না জামাইদের। অপমানিত হয়ে মেজ জামাই মাধব বেরিয়ে গেলেন। এর পরের দিন খুব খারাপ রান্না পরিবেশিত হল। সেজ জামাই পুণ্ডরীকাক্ষ রাস্তা দেখলেন। এ সবের পরেও দেখা গেল, ছোট জামাই ধনঞ্জয় গাত্রোৎপাটনের নামগন্ধ করছে না। আর কোনও উপায় না দেখে তাকে উত্তম-মধ্যম দিয়েই বিদেয় করতে হল। এই কাহিনির মধ্যেও জামাইদের সম্পর্কে, তাদের অলজ্জ স্বভাব সম্পর্কে সমাজের মনোভাব টের পাওয়া যায়। ফলে জামাই ষষ্ঠীর ঘাড়ে যে একটা তির্যক দৃষ্টির বোঝা চেপে বসবে, তাতে সন্দেহ কী!
তবে সেই দিনকাল আর নেই। ‘ঘরজামাই’ বস্তুটিও বাংলা বাজার থেকে হাওয়া। শ্বশুর বা শাশুড়ির সঙ্গে একত্রে বাসরত জামাইয়ের সংখ্যা বঙ্গদেশে কম নয়। মানবিক কারণেই একত্রবাস বেশির ভাগ ক্ষেত্রে। একমাত্র মেয়ের বিয়ে দেওয়ার পরে নিঃসহায় বৃদ্ধ দম্পতিকে একলা ফেলে যাওয়াটা কোনও কাজের কথা নয়। আবার অনেক ক্ষেত্রেই শ্বশুর বা শাশুড়ির এক জন গত হওয়ার পরে অবশিষ্ট জনকে নিজের কাছে রেখে দিচ্ছেন, এমন জামাইয়ের সংখ্যাও কম নয়। ফলে এই সব ক্ষেত্রে জামাই ষষ্ঠীর মহিমা আর তেমন টিকে নেই। শাশুড়ি বিগত হলে তো ল্যাঠাই চুকে গেল। তদুপরি জেনারেশন জেড বঙ্গীয় জামাইকুল আর এই ‘প্রিহিস্টোরিক’ সেলিব্রেশন নিয়ে ভাবেন কি না সন্দেহ রয়েছে।
কিন্তু বাজার এই ‘প্রাগৈতিহাসিক’ উৎসবকে দিব্বি ভাসিয়ে রেখেছে। ব্র্যান্ডেড জামাকাপড় থেকে বাসমতি চাল অথবা ঘি— বিজ্ঞাপনে মসৃণ ভাবেই উঠে আসে জামাই ষষ্ঠী। জিনস পরা জামাইকে ট্রিট দেওয়ার জন্য স্টার রেস্তরাঁ আয়োজন করে স্পেশাল লাঞ্চ বা ডিনার প্যাকেজের। সেখানে শুধু জামাই নন, বেয়াই-বেয়ান মিলেমিশে একটা চমৎকার ফ্যামিলি রিইউনিয়নের হাওয়া। জামাই ষষ্ঠী সেখানে উপলক্ষ মাত্র, তার বেশি কিছু নয়।
কিন্তু এ সব পরিবর্তন সত্ত্বেও জ্যৈষ্ঠ-দুপুরের হলকা হাওয়ায় এলোমেলো হয়ে যায় স্মৃতি। মনকেমন করা একটা ঘুর্ণি পাক দিতে থাকে কোথাও। ফিনফিনে গোলাপি প্রচ্ছদে হর-পার্বতীর ছবি, তাঁদের ঘিরে রাশিচক্র। উল্টে যায় পঞ্জিকার মলাট। কাঠের ব্লকে ছাপা ছবিতে উদ্ভাসিত হয় বাংলার চিরায়ত এক দৃশ্য। জামাই আসনপিঁড়ি হয়ে খেতে বসেছেন, ঘোমটা দেওয়া শাশুড়ি তাঁর সামনে বেড়ে দিচ্ছেন পঞ্চব্যঞ্জন-সহ অন্ন। একটু দূরে দাঁড়িয়ে শ্যালিকারা। দরজার কোণ থেকে উঁকি দিচ্ছে কিশোর বয়সি শ্যালকটিও। আর একটা দরজার পাশে দাঁড়িয়ে লজ্জাবনতা বধূটি। এ সবের মাঝখানে জামাই বাবাজির পাতের পাশটিতে এসে বসেছে এক অনবদ্য হুলো বেড়াল। সে না হলে এ ছবি অসম্পূর্ণ। সেই তো ষষ্ঠীদেবীর রিপ্রেজেন্টেটিভ। এই পুরো ছবিটা আজ আর বাংলায় নেই। থাকার কথাও নয়। কিন্তু বাঙালির স্মৃতিতে ছবিটা আছে। স্থায়ী ভাবেই আছে। পঞ্জিকা-প্রকাশকেরা তাকে শত মন্বন্তরেও বদলে দেননি।