পুস্তক পরিচয় ২

‘বাসের টিকিটের পেছনে কবিতা লিখেছি’

ভূমেন্দ্র গুহরায়কে নিয়ে শঙ্খ ঘোষের গদ্য ‘উদাসীন এক ডাক্তার’, চিকিত্‌সক হিসেবে সবাই তাঁকে ওই নামেই চেনে, কিন্তু কবি-লেখক হিসেবে চেনে ভূমেন্দ্র গুহ নামে। নতুন কবিসম্মেলন-এ (সম্পা: শ্যামলকান্তি দাশ) এই ধন্বন্তরি ডাক্তার, কবি ও গবেষক মানুষটি সম্পর্কে শঙ্খ ঘোষ লিখছেন ‘পরম-লিপ্ত কিন্তু পরম-উদাসীন বিচিত্রমুখী এই মানুষটির স্বতঃপ্রণোদিত উপচিকীর্ষার কথা আমার ভাবতে ভালো লাগে সবসময়েই।’

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:০১
Share:

ভূমেন্দ্র গুহরায়কে নিয়ে শঙ্খ ঘোষের গদ্য ‘উদাসীন এক ডাক্তার’, চিকিত্‌সক হিসেবে সবাই তাঁকে ওই নামেই চেনে, কিন্তু কবি-লেখক হিসেবে চেনে ভূমেন্দ্র গুহ নামে। নতুন কবিসম্মেলন-এ (সম্পা: শ্যামলকান্তি দাশ) এই ধন্বন্তরি ডাক্তার, কবি ও গবেষক মানুষটি সম্পর্কে শঙ্খ ঘোষ লিখছেন ‘পরম-লিপ্ত কিন্তু পরম-উদাসীন বিচিত্রমুখী এই মানুষটির স্বতঃপ্রণোদিত উপচিকীর্ষার কথা আমার ভাবতে ভালো লাগে সবসময়েই।’ অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত ‘শরণার্থীর মিলনমেলায়’ লিখেছেন তাঁর ছাত্রী ও নারী আন্দোলনের কর্মী গাব্রিয়েলা-র কথা, যিনি ঘানার কবি কোয়েসি ব্রু-র কবিতা পড়ার পর জানালেন ‘আমি শুধু প্রতিপন্ন করতে চেয়েছিলাম, শত দুঃখকষ্টের মধ্যেও নিজের দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার কোনো মানেই হয় না।’ সুধীর চক্রবর্তী অলোক রায় অশ্রুকুমার সিকদার অরুণ সেন নবনীতা দেব সেন শরত্‌কুমার মুখোপাধ্যায় কমল চক্রবর্তী রুশতী সেন রণজিত্‌ দাশ মৃদুল দাশগুপ্ত যশোধরা রায়চৌধুরী প্রমুখের গদ্যরচনায় ঋদ্ধ এ পত্রে জয় গোস্বামীর গুচ্ছ কবিতার সঙ্গে আলোক সরকারের কাব্যনাটক ‘নিশীথ যাত্রী’। দীর্ঘ কবিতা বাংলাদেশের শিল্পী ধ্রুব এষ-এর ‘স্টোরিবোর্ড’, আর বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর ‘কলকত্তা’: ‘এই শহরেই তোমার সঙ্গে দেখা হয়েছিল আমার/ কতগুলো বছর কেটে গেল/ পুরনো সেই বছরগুলো/ গায়ে গা লাগিয়ে শুয়ে আছে।’ মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় অমিয় দেব ও চিন্ময় গুহ’র অনুবাদ-কবিতা। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় সাক্ষাত্‌কারে জানিয়েছেন ‘বাসের টিকিটের পেছনেও কবিতা লিখেছি।’

Advertisement

অনুষ্টুপ-এ (সম্পা: অনিল আচার্য) সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের (১৮৬৫-১৯৪৮) দেশভাবনা নিয়ে লিখেছেন সৌরীন ভট্টাচার্য: ‘কারিগরি ও বস্তুগত উন্নতিতে পিছিয়ে থেকে যে কোনো কল্পিত আধ্যাত্মিক সমৃদ্ধিতে পৌঁছনো যায় না, এই বোধ সতীশচন্দ্র ও তাঁর অনুগামীদের মনে যথেষ্ট পরিষ্কার ছিল।’ দীপেশ চক্রবর্তী তাঁর ‘পিতা-পুত্র সম্বাদ: পারিবারিক চিঠিপত্রে যদুনাথ সরকার’-এ জানিয়েছেন ‘নিয়ম, নীতি ও সত্যনিষ্ঠ একজন মানুষের ছবি ফুটে ওঠে এইসব চিঠিতে। আবার একজন প্রতিষ্ঠিত, নামী, পিতৃতান্ত্রিক মানুষ যিনি নিজের সামাজিক সম্মান ও মর্যাদাবোধ সম্বন্ধে সচেতন ও উত্‌কণ্ঠিত, স্যর যদুনাথের এই চেহারাটিও ফুটে ওঠে।’ অরিন্দম চক্রবর্তী স্বপন চক্রবর্তী সুমন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় মৈত্রীশ ঘটক প্রদীপ বসু শাশ্বতী ঘোষ স্বাতী ভট্টাচার্য প্রমুখের রচনায় সমাজচিন্তার নানা ধরন। রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে ক্রোড়পত্রে অমিয় দেবের ‘জীবনস্মৃতি’-র ‘আমি’, শিবাজী বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘রবীন্দ্রনাথের গান: একটি ব্যক্তিগত প্রতিবেদন’। অসম আর কবি ওক্তাভিও পাজ নিয়ে ক্রোড়পত্র। শিশিরকুমার ভাদুড়ীকে নিয়ে শমীক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘আমার ডায়েরী থেকে: নাট্যাচার্যের সান্নিধ্যে’ (মুখবন্ধ ও প্রাসঙ্গিক তথ্য: মলয় রক্ষিত) জরুরি রচনা।

আহ্বান-এ (সম্পা: গোপাল চট্টোপাধ্যায়) প্রকাশিত বীরেন দাশশর্মার ‘১৯৪৩-এর মন্বন্তর: একটি গোপন তথ্যচিত্রের সন্ধানে’ প্রসঙ্গে অতিথি সম্পাদক মধুময় পাল লিখছেন ‘পঞ্চাশের মন্বন্তরে ৫০ লাখ বাঙালি মারা গিয়েছেন। বাংলার ইতিহাসের ভয়ংকরতম ঘটনার একটি।... পাওয়া গেল একটি তথ্যচিত্র। পঞ্চাশের মন্বন্তরের সময় তোলা। অসামান্য পুনরুদ্ধার। এই প্রথম এদেশে প্রকাশিত হল।’ আছে অনেকগুলি স্থিরচিত্র। সরোজ দত্তকে নিয়ে ক্রোড়পত্র। অকালপ্রয়াত কেয়া চক্রবর্তীর একমাত্র গল্পের পুনর্মুদ্রণ।

Advertisement

শূদ্রক-এর বহুবিধ নাটকের সংকলন প্রসঙ্গে সম্পাদক দেবাশিস মজুমদার জানিয়েছেন ‘বাংলা মৌলিক নাটক গঙ্গা-পদ্মার তীর-বরাক উপত্যকা ছুঁয়ে এই সংকলনে আমরা উপস্থিত করতে চেয়েছি।’ রমানাথ রায়ের গল্প অনুসরণে বিভাস চক্রবর্তীর নাটক ‘স্বাধীনতা-হীনতায়’। মামুনুর রশীদের ‘অমানুষ’। সঙ্গে চন্দন সেন সীমা মুখোপাধ্যায় উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় সুরজিত্‌ বন্দ্যোপাধ্যায় তীর্থঙ্কর চন্দ প্রমুখের নাটক।

উত্‌সবের মরসুমে প্রকাশ পেল কথা সোপান-এর প্রস্তুতি সংখ্যা। এই প্রথম সম্পাদনার ভার নিয়েছেন অমর মিত্র, জানিয়েছেন ‘বইয়ের কথা এই পত্রিকায় গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বাংলা বই নিয়ে আলোচনার জায়গা খুব সীমিত।’ ক্রোড়পত্রে গাবরিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ। মুসলিম নারী, উদ্বাস্তু বা প্রান্তিক জীবন ইত্যাদি নিয়ে অনিতা অগ্নিহোত্রী নলিনী বেরা সামরান হুদা সৌমিত্র দস্তিদার অরিন্দম বসু প্রমুখের রচনা।

সম্পাদক গিরীন্দ্রশেখর চক্রবর্তী সদ্য প্রকাশিত বাঁকুড়ার খেয়ালী-র অনুষঙ্গ-এ জানিয়েছেন “পত্রিকাটির বিষয় ‘জঙ্গলমহল’ অর্থাত্‌ পশ্চিম মেদিনীপুর তথা পূর্বতন মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ার সীমানাভুক্ত অঞ্চলের কৃষ্টিচর্চা।... জঙ্গলমহলের মানুষের অতীত ও বর্তমান সময়ের ভাবনার অন্বেষণ।” বাঁকুড়ার মাছ ধরার সরঞ্জাম, মাটির গান, বিষ্ণুপুরের পিরস্থান থেকে মেদিনীপুরের লোকক্রীড়া, পুরুলিয়ার ‘মদনভেরি’, জঙ্গলমহলের আদিম জনজাতি ইত্যাদি বিবিধ বিষয় নিয়ে তৈরি এ-পত্র।

কোরক-এর (সম্পা: তাপস ভৌমিক) শারদীয় সংখ্যার বিষয়: ‘মহাভারত চর্চা’। বহু বিশিষ্ট রচনায় ঋদ্ধ এ পত্রিকা তিন পর্বে বিন্যস্ত: ‘মহাভারত ও মহাভারতকার’, ‘মহাভারত ও বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতি’, এবং ‘ভারতে ও বহির্ভারতে মহাভারত চর্চা’। সম্পাদকের নিবেদন-এ জানানো হয়েছে ‘রবীন্দ্রনাথ মহাভারতকথাকে বলেছেন ভারতবর্ষের চিরকালের ইতিহাস।... এই দৃষ্টিভঙ্গিতেই আমরা সংখ্যাটিকে সাজাতে চেয়েছি।’

প্রায় পঞ্চাশ বছর আগে প্রকাশিত দুই মনস্বী গোপাল হালদার ও শম্ভু মিত্রর ভিন্ন মতের দু’টি লেখা পুনরায় প্রকাশ পেল শারদীয় পরিচয়-এ (সম্পা: বিশ্ববন্ধু ভট্টাচার্য)। বিজ্ঞান গবেষণার সুযোগ ও সম্ভাবনা নিয়ে অশোক সেনের সাক্ষাত্‌কার। বামপন্থার সংকট নিয়ে শোভনলাল দত্তগুপ্ত রতন খাসনবিশ অভ্র ঘোষের আলোচনা। সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধাদি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement