পুস্তক পরিচয় ১

কোন মন্তরে এক সুতোয় গাঁথা যাবে

কবির অভিপ্রায়, বাঙ্ময় হয়ে উঠুক অতীত। সুদূর, অস্পষ্ট অতীতের মর্মবাণী পৌঁছে যাক ঘটমান বর্তমানে। অতীত আর বর্তমানের যোগসূত্র প্রসারিত হোক অনাগত ভবিষ্যতে। জিজ্ঞাসুর সমস্যা, কোন মন্ত্রে সবার কাছে বোধগম্য হয়ে উঠবে অতীতের কণ্ঠস্বর কেমন করেই বা অনুধাবন করা যাবে অতীতের অবয়ব? ভারতবর্ষে আমাদের দেশে অতীত কি সর্বত্রগামী, সর্বব্যাপ্ত? জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত আমাদের জীবনযাত্রার ব্যক্ত ও অব্যক্ত উপাদানগুলি তাদের প্রাণরস আহরণ করে অতীত থেকে। সেই অতীত আমাদের অতীত কি একক এবং অবিভাজ্য? নাকি, তার স্বরূপ অনেকান্তবাদী; কূট প্রশ্ন, গূঢ় সংশয়, প্রকট তর্ক, তীক্ষ্ন বিশ্লেষণ, প্রগাঢ় বিশ্বাস, প্রগাঢ়তর অবিশ্বাস, গভীর অনিশ্চয়তা এ সব মিলেমিশেই তার বিচিত্র বুনট। আমাদের অতীত সময়চিহ্নিত, যুগান্ত তার পরিচয় উৎকীর্ণ করে রেখেছে অতীতের অবয়বে।

Advertisement

গৌতম সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০১৪ ০০:৫৬
Share:

কবির অভিপ্রায়, বাঙ্ময় হয়ে উঠুক অতীত। সুদূর, অস্পষ্ট অতীতের মর্মবাণী পৌঁছে যাক ঘটমান বর্তমানে। অতীত আর বর্তমানের যোগসূত্র প্রসারিত হোক অনাগত ভবিষ্যতে। জিজ্ঞাসুর সমস্যা, কোন মন্ত্রে সবার কাছে বোধগম্য হয়ে উঠবে অতীতের কণ্ঠস্বর কেমন করেই বা অনুধাবন করা যাবে অতীতের অবয়ব? ভারতবর্ষে আমাদের দেশে অতীত কি সর্বত্রগামী, সর্বব্যাপ্ত? জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত আমাদের জীবনযাত্রার ব্যক্ত ও অব্যক্ত উপাদানগুলি তাদের প্রাণরস আহরণ করে অতীত থেকে। সেই অতীত আমাদের অতীত কি একক এবং অবিভাজ্য? নাকি, তার স্বরূপ অনেকান্তবাদী; কূট প্রশ্ন, গূঢ় সংশয়, প্রকট তর্ক, তীক্ষ্ন বিশ্লেষণ, প্রগাঢ় বিশ্বাস, প্রগাঢ়তর অবিশ্বাস, গভীর অনিশ্চয়তা এ সব মিলেমিশেই তার বিচিত্র বুনট। আমাদের অতীত সময়চিহ্নিত, যুগান্ত তার পরিচয় উৎকীর্ণ করে রেখেছে অতীতের অবয়বে।

Advertisement

দ্য পাস্ট বিফোর আস/
হিস্টরিক্যাল ট্র্যাডিশনস অব
আর্লি নর্থ ইন্ডিয়া, রোমিলা থাপার।
পার্মানেন্ট ব্ল্যাক, ১৩৯৫.০০

অসমস্বর অতীতের একটি অংশ রোমিলা থাপারের আলোচনার বিষয়বস্তু আদি পর্বের উত্তর ভারতের ইতিহাস-পরম্পরা। এ বিষয়ে লেখকের আগ্রহ এবং চর্চার সময়ক্রম পাঁচ দশক ব্যাপ্ত। নিষ্ঠাবান পাঠক এই গ্রন্থের পূর্বসূত্র খুঁজে পাবেন তাঁর ফ্রম লিনিয়েজ টু স্টেট (১৯৮৪) এবং কালচারাল পাস্টস (২০০০) গ্রন্থে। আলোচ্য গ্রন্থে দক্ষিণ ভারতের প্রাচীন ইতিহাস-পরম্পরা সম্পূর্ণ ভাবে অনালোচিত স্পষ্টতই লেখক দুটি পরম্পরার স্বাতন্ত্র্যে বিশ্বাসী। আদি পর্বের উত্তর ভারতের ইতিহাস-পরম্পরার ব্যাপ্তি এবং কালক্রম প্রায় দুই হাজার বছরের, প্রথম খ্রিস্টপূর্ব সহস্রাব্দ থেকে প্রথম খ্রিস্ট সহস্রাব্দের অন্তিম পর্যায় পর্যন্ত প্রসারিত। বিষয়ের বৈচিত্র এই গ্রন্থের সম্পদ। বৈদিক সাহিত্য, মহাকাব্যদ্বয়, পৌরাণিক আকরগ্রন্থ, প্রাচীন লেখমালা, বৌদ্ধ পরম্পরা, শ্রীলঙ্কার বৌদ্ধ সঙ্ঘকেন্দ্রিক গ্রন্থাবলি, বৌদ্ধ জীবনীগ্রন্থ, ইতিহাস-নির্ভর জীবনকথা, বাণভট্টের হর্ষচরিত এবং সন্ধ্যাকর নন্দীর রামচরিত, আখ্যান (ক্রনিকল) যেমন কল্হনের রাজতরঙ্গিণী, চম্বা রাজাদের বংশাবলি এবং পশ্চিম ভারতে লেখা প্রবন্ধ-চিন্তামণি। বিন্ধ্য পর্বতের উত্তরে বিশাল বিস্তীর্ণ ভূখণ্ডের বহু বিচিত্র ঐতিহাসিক পরম্পরার সানুপুঙ্ক্ষ আলোচনা। রোমিলার জিজ্ঞাসা ও বিশ্লেষণ এক অর্থে উত্তর ভারতের ইতিহাস-পরম্পরার সম্ভবত সমৃদ্ধতম ভাষ্য।

Advertisement

ব্রিটিশ ঐতিহাসিক ই এইচ কার-এর একটি বিখ্যাত মন্তব্য উদ্ধৃত করে রোমিলা থাপার তাঁর আলোচনার সূচনা করেন। সমাজ এবং ইতিহাসের সম্পর্ক নিবিড়, ইতিহাস-পরম্পরা একই সঙ্গে এক বৌদ্ধিক এবং সামাজিক প্রক্রিয়া, ভাবাদর্শ এবং সামাজিক প্রেক্ষিত (কনটেক্সট) দুইয়ে মিলে একে গড়ে তোলে। এই পর্যায়ে রোমিলা থাপার তাঁর পাঠকদের সতর্ক করে দেন, ইতিহাস-পরম্পরা এবং ইতিহাসকে পৃথক ভাবে চিহ্নিত করা হয়। উত্তর ভারতীয় ইতিহাস-পরম্পরার প্রবেশিকা হিসাবে আসে অন্যান্য পরম্পরার কথা গ্রিক রোমান আদি ইউরোপীয় খ্রিস্টীয় ইসলামি ইত্যাদি। স্বাভাবিক ভাবেই এসে পড়ে ঔপনিবেশিক পর্বের বিতর্ক, সাম্রাজ্যবাদী-জাতীয়তাবাদী ইতিহাসতত্ত্ব, ব্যতিক্রমী ধারায় কার্ল মার্কস এবং ম্যাক্স ওয়েবার-এর ইতিহাসতত্ত্বের তাৎপর্য।

এ সব অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক আলোচনার শেষে যে কয়েকটি প্রশ্ন অনিবার্য ভাবে উত্থাপিত হবে তার অন্যতম হল প্রাক্-আধুনিক বা আরও স্পষ্ট ভাবে প্রাক্-মধ্যযুগের ভারতবর্ষে (শুধুমাত্র উত্তর ভারতেই নয়) ইতিহাসের সংজ্ঞা, চরিত্র, এবং সীমারেখা কি নির্ধারিত হয়েছে? ইতিহাস শব্দটির ব্যুৎপত্তি এবং তার সাধারণ অর্থ বহুল পরিচিত। কিন্তু সেই অর্থের আলোয় কি দুই সহস্রাব্দ ব্যাপ্ত নানান বিচিত্র পরম্পরার কোনও সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দেওয়া সম্ভব? রোমিলা গোড়াতেই বলেছেন, প্রাচীন গ্রন্থাদিতে বর্ণিত তথ্যের প্রামাণ্যতা প্রতিষ্ঠা তাঁর অভিপ্রেত নয়। বিগত পাঁচ দশক ধরে ইতিহাসবিদেরা প্রাচীন ভারতে ইতিহাসের অস্তিত্ব/ অনস্তিত্বের প্রশ্নেও উদ্বেল হয়েছেন। স্পষ্টতই এই সব আলোচনায় পূর্বপক্ষ ইউরোপীয় ভাবনায় ইতিহাসতত্ত্ব এবং উত্তরপক্ষ হল সেই ভাবনার নিরিখে ভারতবর্ষের ইতিহাসের চরিত্র নির্ধারণ। এই প্রয়াস কতখানি প্রাসঙ্গিক? জ্ঞানের সর্বজনীনতার প্রশ্নটিকে অগ্রাহ্য না করেও, এই প্রশ্নটি শেষ পর্যন্ত অমীমাংসিতই থেকে যায় ভারতবর্ষে অতীত চর্চার বহুবিধ প্রকরণ আছে, সেগুলিই কি সার্বিক ভাবে আমাদের ইতিহাস-পরম্পরায় গ্রথিত? অথবা আমাদের ইতিহাস-পরম্পরা আমাদের অতীতের মতোই বহুধা সংগত ভাবেই রোমিলার গ্রন্থের অধঃশিরোনামে ‘ট্র্যাডিশনস’ শব্দটির ব্যবহার। সে ক্ষেত্রে প্রশ্ন থাকে, এমন কোনও উপাদান বা অনেক ক’টি উপাদানকে কি চিহ্নিত করা যায়, যাদের যোগফলে পরম্পরাগুলিকে ‘উত্তর ভারতীয়’ অভিধা দেওয়া সম্ভব? আদিতম ইতিহাস-পুরাণ পরম্পরা থেকে, আদি মধ্যযুগের রাজতরঙ্গিণী কিংবা রামচরিত অথবা বিক্রমাঙ্কদেবচরিত কিংবা কয়েক শতাব্দী আগে লেখা হর্ষচরিত-কে কোন মন্তরে এক সুতোয় গাঁথা যাবে? উত্তর ভারত কি তা হলে শেষ পর্যন্ত শুধু একটি ভৌগোলিক রেফারেন্স? পূর্ব-পশ্চিম-মধ্য ভারতের বিভিন্ন পরম্পরাকে দুটি মলাটের ভিতরে ধরার একটি পদ্ধতি মাত্র? বৌদ্ধ-পরম্পরার ইতিহাস ভাবনার তাত্ত্বিক অবস্থান তো অবৌদ্ধ-পরম্পরা থেকে অনেকাংশেই স্বতন্ত্র। রোমিলা দুটি প্রধান ধারাকে চিহ্নিত করেছেন একটি পুরাণের কাঠামো অনুসারী, অন্যটি শ্রমণ-ভাবাদর্শ সঞ্জাত। এ ছাড়া আছে প্রাচীন কবি (বার্ডিক) পরম্পরা এবং শিলালেখ-তাম্রশাসনে ‘গ্রথিত (এমবেডেড) ইতিহাস’।

বৃহৎ গ্রন্থটির সার্বিক পরিচয় দেওয়ার অবকাশ এখানে নেই। দু-একটি প্রসঙ্গের অবতারণা করা যেতে পারে। রোমিলার মতে, বৈদিক সাহিত্য নানা খণ্ডিত আখ্যানের সমষ্টি এবং কয়েকটি খণ্ডিত আখ্যান থেকেই উদ্ভব হয় ইতিহাস-পরম্পরার। ইতিহাস-পুরাণ পরম্পরার ধারকবাহকদের ব্রাহ্মণত্ব সন্দেহাতীত নয়। এবং প্রথমাবধি, ইতিহাস শব্দটির অর্থ/ অভিপ্রায় বিতর্কিত। স্কন্দস্বামী-র ভাবনায় ইতিহাস শব্দটির ব্যাখ্যা আক্ষরিক নয়। বৈদিক সাহিত্য থেকে মহাকাব্যদ্বয়ের আলোচনায় উত্তরণে ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে সময়ের অনতিক্রম্য স্বাক্ষর, কাল পরিবর্তনের চিহ্ন। রামায়ণের বিভিন্ন পাঠে-- বাল্মীকি কিংবা বৌদ্ধ কাহিনিতে-- ইতিহাসের ধারণা অনুপস্থিত। কিন্তু ব্যতিক্রম জৈন রামায়ণ ‘পৌমচরিয়ম’। পরবর্তী পর্যায়টি, রোমিলার ভাষায়, ‘ইন্টারলুড: দি ইমার্জিং হিস্টরিক্যাল ট্র্যাডিশন’।

বোধিবৃক্ষ ও সম্রাট অশোক (ডান দিকে)।
কনগনহল্লি, কর্নাটক। ভারতীয়
প্রত্নতত্ত্ব সর্বেক্ষণ-এর সৌজন্যে

এই পর্যায়ে আলোচিত হয়েছে বিষ্ণুপুরাণের ভিত্তিতে ইতিহাস-পরম্পরা নির্মাণে ‘বংশানুচরিত’-এর ভূমিকা। পুরাণ থেকে রোমিলা চলে আসেন আদি পর্বের লেখমালায়। সংস্কৃত লেখমালা এবং আংশিক ভাবে প্রাকৃত ভাষায় রচিত লেখসমূহ স্থানিক বা আঞ্চলিক সীমানা অতিক্রম করে এক বৃহত্তর সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল গড়ে তোলে। লেখমালায় অতীত স্থান পায় কখনও শাসকের বৈধতা অর্জনের উপায় হিসেবে, কখনও অতীতের ঐতিহাসিক চরিত্র বা ঘটনার উল্লেখ সূত্রে। এই পর্যায়ের শেষ আলোচনা বিশাখদত্তের নাটক দেবী চন্দ্রগুপ্ত এবং মুদ্রারাক্ষস। নাটক দুটিতে একটি বিকল্প আখ্যানের আভাস আছে যা ব্রাহ্মণ্য-ভাবাদর্শ থেকে পৃথক। আর আছে কাল্পনিক কাহিনির পরিবর্তে ঐতিহাসিক পটপরিবর্তনের স্পষ্ট উল্লেখ। গ্রন্থের চতুর্থ পর্যায় ‘অল্টারনেটিভ হিস্টরিজ’-এর উপজীব্য মুখ্যত পালি ভাষায় লেখা বৌদ্ধ পরম্পরা ইতিহাস রচনায় ভিক্ষু সম্প্রদায়। বৌদ্ধ ইতিহাস-পরম্পরাকে ব্রাহ্মণ্য-পরম্পরা থেকে পৃথক করে চিনে নেওয়া যায়ধর্মীয় উপাদানের প্রাধান্য সত্ত্বেও সমকালীন রাষ্ট্রব্যবস্থা এবং ঐতিহাসিক পরিমণ্ডল ছায়া ফেলে বৌদ্ধ পরম্পরায়। সুতরাং এটি সংকীর্ণ অর্থে ধর্মীয় নয়। ভারতবর্ষে উদ্ভব হলেও, বৌদ্ধ পরম্পরা প্রবল রাজনৈতিক তাৎপর্য অর্জন করে শ্রীলঙ্কায়। শ্রীলঙ্কার ইতিহাস মিলে যায় মহাবিহারের ইতিহাসে। বৌদ্ধ সঙ্ঘ হয়ে ওঠে নির্ণায়ক শক্তি। সঙ্ঘের ইতিহাসের পাশাপাশি আছে বৌদ্ধ জীবনচরিতগুলি। সঙ্ঘকেন্দ্রিক পালি গ্রন্থগুলির তুলনায় ভিন্নতর ইতিহাস ভাবনার প্রকাশ ঘটেছে সংস্কৃতে লেখা জীবনচরিতে।

পঞ্চম পর্যায়: ‘দ্য হিস্টরিক্যাল ট্র্যাডিশন এক্সটারনালাইজড’। এখানে আলোচ্য রাজন্যবর্গের জীবনচরিত্র, যথা হর্ষচরিত এবং রামচরিত। এগুলির প্রধান চরিত্ররা এবং ঘটনা পরম্পরা অনেকাংশেই যথাযথ। ‘চরিত’গুলিতে লক্ষ করা যায় পূর্ববর্তী পরম্পরার আংশিক উপস্থিতি। এগুলি অন্য কোনও গ্রন্থের অংশ নয়, এরা স্বতন্ত্র, রচনায় এক নতুন লেখককুলকে চিনে নেওয়া যায়। এই সময় থেকেই ব্যাপক ভাবে প্রচলন ঘটে তাম্রশাসনের দানপত্র হওয়া ছাড়া এগুলিতে আছে রাজশক্তিকে বৈধতা দানের বিভিন্ন প্রকরণ, তার সূত্র ধরে অতীতের উপস্থাপনা। এরই পাশাপাশি আছে বংশাবলি। শেষ রচনায়, প্রবন্ধ-চিন্তামণি-র নিরিখে জৈন ধর্মাবলম্বীর ইতিহাস ভাবনার বিশ্লেষণ।

রোমিলা থাপারের রচনার প্রধান গুণ নির্ভার গদ্যে যুক্তির নিপুণ বিন্যাস। এই সংকলন থেকে স্পষ্ট হয়ে ওঠে আমাদের অনেকান্তবাদী অতীত এবং তার বহুমাত্রিক ভাষ্যের পরম্পরা। লেখক-কবি-নাট্যকার-ব্রাহ্মণ-শ্রমণের উদ্যমে সমৃদ্ধ এই অতীত ভাবনায় উদ্ভাসিত হবে বর্তমান?

পশ্চিমবঙ্গ প্রত্নতত্ত্ব ও সংগ্রহালয় অধিকর্তা

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement