প্রতীকী ছবি।
“আরে বাবা, বাঙালি স্বর্গে গেলেও ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান করবে।” উপন্যাসের গোড়াতেই চরিত্রের মুখ দিয়ে বলিয়ে নিয়েছেন লেখক। কিন্তু, ডার্বি কি শুধু এই দুই দলের খেলাই? ভূগোল আর ইতিহাসের মধ্যে কী ভাবে লুকিয়ে থাকে চেনা মানুষের অচেনা আত্মপরিচয়, নেত্রকোনা-নদিয়া-নিউ ইয়র্কের স্থানিক ও কালিক ত্রিভুজে সেই আখ্যান বুনেছেন লেখক।
কয়েক দশকের সঙ্গীতজীবন আর সঙ্গীত-পুরোধাদের সঙ্গ যখন কলমে লেখা জোগায়, তার স্বাদই আলাদা। অলক রায়চৌধুরীর বইটির আরও গুণ তার গদ্যভাষা, বিষয়বিশেষে রসমধুর বা স্মৃতিমেদুর। ফিরোজা বেগম জটিলেশ্বর মুখোপাধ্যায় সাগর সেন ঋতু গুহের স্মৃতিনিবন্ধ, ছায়া দেবী ভি বালসারা রামকুমার চট্টোপাধ্যায় নীলিমা সেনের সাক্ষাৎকার এ বইয়ের সম্পদ। আছেন আলি আকবর-হেমন্ত-মান্না থেকে পীযূষকান্তি-অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, বাঙালির গানজীবনের নানা মণিমুক্তোর ডুব-সন্ধান।
ডার্বি
বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়
৩৫০.০০
আনন্দ
আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস দিনটি কেন গুরুত্বপূর্ণ? শ্রমিক কাকে বলে আর শ্রমজীবী শ্রেণিই বা কী? দেশে-দেশে শ্রম আন্দোলনের চরিত্র কেমন? বছর-বছর ছুটি পালন করলেও এ সব প্রশ্নের উত্তর অনেকের কাছেই স্পষ্ট নয়, বিশেষত শিশু-কিশোরদের। সারা বিশ্বে এবং প্রাক্-স্বাধীন ভারতে মে দিবস পালনের তেমনই সচিত্র এক ইতিহাস দু’মলাটে তুলে ধরেছেন শিল্পী কুমার চক্রবর্তী।
হলুদ পোস্টকার্ড
প্রশান্ত মাজী
২৫০.০০
ঋক প্রকাশনী
১৯৭০-এ সিধু চৌধুরী সাইকেলে চেপে বেরিয়েছিলেন দেশ দেখতে। অর্ধশতক পরে সেই ভ্রমণবৃত্তান্ত ও তাঁর ‘মুভমেন্ট ডায়েরি’, প্রকাশিত খবর-কর্তিকা, ছবি, সরকারি শংসাপত্র-সহ সব কিছু পাওয়া গেল, সেই সবই ধরা দু’মলাটে। নেপাল নালন্দা মোতিহারি চম্বল কুমায়ুন নীলগিরি... চেনা-অচেনা প্রকৃতি আর মানুষের সান্নিধ্যের কথা আছে এই বইয়ে। বর্ণনাশক্তির জোরে ছবির মতোই ফুটে ওঠে সব।
‘পরিতোষ কেবল একটা লেখার কথাই ভাবে, ভেবেই যায়। কিন্তু সে লেখা এখনও লেখা হয়নি। কবে হবে সে তা জানেও না।’ এই না-হওয়া লেখার কথা ভাবতে ভাবতেই তার দিন কেটে যায় মায়াবী সংসারে। এমনই ‘মায়াবী’ কিছু গল্পের ছোট আকারের সঙ্কলন এই বই। মফস্সলের মায়াগন্ধময় দিনযাপন থেকে কলকাতার সত্তর-আশি দশকের কলেজ স্ট্রিটের মায়াভুবন— দশটি গল্পের পরতে পরতে ছড়িয়ে। পাঠকের প্রাপ্তি হতে পারে এই গ্রাম-শহরের দ্বৈত অভিজ্ঞতার বুনন।
“নিঠুর বর্তমান-সিক্ত গ্রাম আরও আরও রক্তাক্ত হচ্ছে নগরগড়ানি সভ্যতায়।” পাল্টে যাওয়া এই সময়ে বাংলার গ্রাম, গ্রামসমাজ, রাজনীতি, পরিবেশ ও মন ফুটে উঠেছে স্বাদু গদ্যে। ব্যক্তিগত ও নৈর্ব্যক্তিকে মেশা লেখাগুলির ধরন নজর কাড়ে । ভিতর-সজ্জার সরল অলঙ্করণগুলিও সুন্দর।
সূর্যমুখীর এরোপ্লেন
ইন্দ্রাণী
১৩০.০০
গুরুচণ্ডা
সাহিত্যিক, চিত্রশিল্পী, চিন্তক, শিক্ষাবিদ, চিকিৎসক, সমাজকর্মী থেকে সরকারি কর্মী। সমাজের বিভিন্ন স্তরের, নানা পেশার মানুষ কোভিড-অতিমারিকে দেখেছেন নিজেদের ভাবনা ও অভিজ্ঞতার আলোয়। এমনই আঠারোটি প্রবন্ধ সঙ্কলিত বইয়ে। শমীক বন্দ্যোপাধ্যায় অনিতা অগ্নিহোত্রী পবিত্র সরকার সুশোভন অধিকারী প্রমুখের লেখাগুলি একুশ শতকের এই স্বাস্থ্য-দুর্যোগ নিয়ে পাঠকের ভাবনা উস্কে দেবে। পার্থ দাশগুপ্তের অলঙ্করণ তারিফযোগ্য।
“একজন গল্পকার তাঁর মায়াময় ভাষা, আশ্চর্য কাহিনি বয়ন নিয়ে কতদূর উড়ান দিতে পারেন, তা ইন্দ্রাণীর গল্প পড়লে আন্দাজ করা যায়,” বইটির মুখবন্ধে লিখেছেন অমর মিত্র। মোট ১২টি গল্পের সঙ্কলন। গল্পগুলির কেন্দ্রীয় চরিত্ররা প্রায়শই আমাদের চেনা, কিন্তু অচেনা। বিদেশে নিঃসঙ্গ স্বাতী তার প্রয়াত স্বামীকে চিঠি লিখে জানায়, ‘আজ প্রথম বরফ পড়ল’। স্বভাব-নিস্পৃহ অনিন্দ্য বার বার তার স্কুলজীবনের বন্ধুর আস্তানায় যায় টেবিল টেনিস খেলার টানে, হয়তো হারানো কৈশোরের টানেই। সূর্যমুখী হয়ে ওঠে অলৌকিক এয়ারহোস্টেস।