ধুলোবালির মানুষ
প্রচেত গুপ্ত
২৫০.০০, আনন্দ
“দেশে চাল, ডাল, তেল, নুন, কেরোসিন সবকিছুর অভাব আছে, লেখাপড়া জানা ছেলেমেয়ের কোনও অভাব নেই। ফ্যা-ফ্যা করে ঘুরে বেড়াচ্ছে।” কাহিনি শুরুর কিছু ক্ষণেই এই রূঢ় উক্তি উপন্যাসের মেজাজ ও সম্ভাব্য গতিপ্রকৃতির দিগ্নির্দেশ করে। লেখক সহজ-সরল ভাবে বলে চলেন জটিল পৃথিবীর ততোধিক জটিল মানব সম্পর্কের কথা। উপন্যাসটির মূল চরিত্র বিধান। ভাল মানুষ, প্যাঁচহীন, সাদামাটা। তাই দুনিয়ার হিসেবে সে মাটির মানুষও নয়— ধুলোবালির মানুষ। কেউ তাকে ফুৎকারের তাচ্ছিল্যে ওড়ায়, কেউ জীবন থেকে অক্লেশে ঝেড়ে ফেলে। এ হেন চরিত্রের ঠিক বিপ্রতীপে বিধানের তেজি ঘোড়ার মতো টগবগে স্ত্রী। সম্পর্কের ছেঁড়া সুতোটা আঁকড়ে থাকতে গিয়ে বিধান জীবনের রাস্তায় বার বার হুমড়ি খেয়ে পড়ে, আর রক্তে ভেসে যায়।
মনস্তাত্ত্বিক এই উপন্যাসের প্লট পরিচিত। চরিত্রের ভিড় নেই, ঘটনার ঘনঘটা নেই। বর্ণনা কৌশলে লেখক চেনা ঘাত-প্রতিঘাতকে আকর্ষক করে তুলেছেন। কথকের দৃষ্টিকোণ বদলে, বিভিন্ন রূপে দেখিয়েছেন ঘটনাপ্রবাহকে। সূক্ষ্ম ভাবে যৌনতার নারীস্বাধীনতার উদ্যাপন করেছেন। ধরতে না পারলে, মনে হতে পারে, নারী চরিত্রগুলি বেশি শরীরসর্বস্ব। বিধান চরিত্রটি গড়তে বুকঢালা জ্বালার সঙ্গে মিশিয়েছেন বিষণ্ণ হিউমার।
সাদা কালো
জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়
২৫০.০০, দীপ প্রকাশন
লকডাউনে জুনিয়রদের কাছে শুনতেন, ‘আর ভাল লাগছে না।’ ফেসবুকে তাঁদের উদ্দেশে বার্তা দিলেন, “সময়টাকে কাজে লাগাও। এমন কিছু করো, যা সময়ের অভাবে এত দিন করে উঠতে পারোনি।” বলতে বলতে নিজেই ধরলেন কাগজ-কলম। গল্পের আকারে লিখতে শুরু করলেন নিজের জীবনের নানা অভিজ্ঞতা। আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়ের কলমে জন্ম নিল গোয়েন্দা কন্দর্পনারায়ণ, পেশায় উকিল, নেশায় রহস্যভেদী। জুনিয়রদের সঙ্গে নিয়ে যিনি সমাধান করেন একের পর এক রহস্যের। ইতিমধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে জয়ন্তনারায়ণের দুটি বই, সাদা কালো আর গরাদের আড়ালে। আইনজীবীর কথায়, “আমার চরিত্ররা সকলেই আপাত-সাধারণ। তারা জীবনের লড়াইয়ে বার বার ঠোক্কর খায়, আবার উঠে দাঁড়ায়। জীবনযুদ্ধে একশোয় একশো পাওয়াদের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলে তারা।”