Book Review

নায়ক আর ‘ব্র্যান্ড’-এর আড়ালে কোন মানুষ

গানের জন্যই তাঁর পরিচিতি ও খ্যাতি, ১৯৯৪-এর গান ‘আমি বাংলায় গান গাই’ গত ত্রিশ বছরে হয়ে উঠেছে বিশ্বের যে কোনও প্রান্তে থাকা বাঙালির আত্মপরিচিতির দ্যোতক।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২৩ ১০:৩৫
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

ব্র্যাড পিটকে নিয়ে লেখা একটি বই পর্যালোচনা করতে গিয়ে এই গ্রন্থলেখকের মনে হয়েছিল, এক জন অভিনেতাকে সেখানে ‘অধ্যয়ন’ করা হয়েছে। তা থেকেই তিনি আলোচ্য বইটি লেখার কথা ভাবেন, বেছে নেন সলমন খানকে। ভূমিকা অংশেই বেছে নেওয়ার কারণটি স্পষ্ট, দীর্ঘ দিন ধরে বিতর্ক ও আলোচনায় থাকা সলমনের প্রভাবকে একটি নির্দিষ্ট আঙ্গিকে ধরা যায় না, এটাই লেখককে ভাবিয়েছে। ন’টি অধ্যায়ে বিন্যস্ত বই, শুরু হচ্ছে ‘দিল মে আতা হুঁ, সমঝ মে নেহি: বিয়িং সলমন খান’ অংশটি দিয়ে, এক অভিনেতার ‘সলমন খান’ হয়ে ওঠার বর্ণনা। সলমন সম্পর্কে পাঠককে এক জিজ্ঞাসু বিশ্লেষণের সামনেও তা দাঁড় করিয়ে দেয়, এই বিশ্লেষণকে রহস্যাবৃত, বিতর্কিত, আলোচিত ও সফল এক বলিউড তারকার ‘ব্যক্তিত্বের বিভিন্ন পরত’ দেখা ও বোঝার চেষ্টা বলা যেতে পারে। পাওয়া যায় ব্যক্তি, তারকা ও অভিনেতা সলমনকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া জটিল সম্পর্ক ও দ্বন্দ্বের ইঙ্গিত। ব্যর্থতার পরীক্ষা দিয়েও একাধিক প্রজন্ম ধরে সলমন কী ভাবে তাঁর আবেদন ধরে রেখেছেন, কী ভাবে নিজেকে ভেঙেছেন তা বোঝাতে অমিতাভ বচ্চনের প্রসঙ্গ টেনেছেন লেখক। ‘ব্যর্থ’ প্রেম, ঝগড়া, মামলা, অহং-এর আতশকাচে ব্যক্তি সলমনকে খুঁজেছে ‘উইথ হিউম্যান ফেলিংস’ নামের অধ্যায়টি। তার পরেও কী ভাবে সলমন এক ‘ব্র্যান্ড’ হয়ে ওঠেন, আছে সেই বয়ানও। দেখান অভিনেতার প্রস্তুতিপর্ব; প্রেম, সুলতান, বজরঙ্গী ভাইজান, চুলবুল পাণ্ডে, টাইগার চরিত্রগুলির সঙ্গে তিনি কতখানি সঙ্গতিপূর্ণ। এক নায়কের সিনে-যাত্রা ও ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে ফুটে ওঠে একটি সামগ্রিক ধারণা।

Advertisement

সলমন খান: দ্য ম্যান, দি অ্যাক্টর, দ্য লেজেন্ড

দেবপ্রিয়া সান্যাল

Advertisement

৬৯৯.০০

ব্লুমসবেরি

গানের জন্যই তাঁর পরিচিতি ও খ্যাতি, ১৯৯৪-এর গান ‘আমি বাংলায় গান গাই’ গত ত্রিশ বছরে হয়ে উঠেছে বিশ্বের যে কোনও প্রান্তে থাকা বাঙালির আত্মপরিচিতির দ্যোতক। তুলনায় প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের অন্য লেখালিখির সঙ্গে বাঙালি পাঠকের আলাপ কম। অথচ ছড়া, কবিতা, নিবন্ধ মুক্তগদ্য রম্যগদ্যও লিখেছেন তিনি, এবং ধরতে হবে মুদ্রিত সাক্ষাৎকারগুলিকেও— বিভিন্ন সময় প্রকাশিত নানা পত্রপত্রিকায়।

কথায় কলমে: প্রতুল মুখোপাধ্যায়

সঙ্কলন ও সম্পা: অনুপ বন্দ্যোপাধ্যায়

৩০০.০০

অনুপমা প্রকাশনী

সেগুলিরই নির্বাচিত বেশ কিছু দু’মলাটে পাওয়া যাবে এই বইয়ে। ছোট-বড় ছড়াগুলি ছোটবেলায় ফিরিয়ে দেয়: “বড়ি দিয়ে পালং শাক/ বাড়ির সবাই ভালং‌ থাক।” আবার স্বাদ দেয় এই সময়েরও: “বুকে নিলাম ভালবাসা, বুকপকেটে ঘৃণা।/ দেখি এবার বাকি পথটা চলতে পারি কিনা।” নিবন্ধ-গদ্যগুলির বহুলাংশই গান নিয়ে, ভাল লাগে হেমাঙ্গ বিশ্বাসের সঙ্গে কল্পকথন, বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কবিতায় সুরারোপ প্রসঙ্গ, রবীন্দ্রগান নিয়ে শিল্পীর সমর্পণ-স্বীকারোক্তি ‘আমি পাইনে তোমারে’। লৌকিক উদ্যান, একুশে সংসদ, পর্বান্তর-এর তরফে তিনটি সাক্ষাৎকারে এসেছে গণসঙ্গীত, চ্যাপলিনের শতবর্ষে গান বাঁধা-সহ নানা প্রসঙ্গ।

ঢেঁকি: ইতিহাস বিশ্বাস বিবর্তন

মানস শেঠ

৩৫০.০০

তবুও প্রয়াস

ঢেঁকির ইংরেজি কী, কে জানেন? তা নাহয় না-ই বা জানা থাকল, এই প্রজন্মের ক’জন ঢেঁকি চেনেন? ঢোঁক গিলতে হবে অনেককেই। অথচ সামগ্রিক বঙ্গজীবনে তার অস্তিত্ব ও উপস্থিতি একদা ছিল নিবিড়, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে। বাংলার কৃষিজীবন ও কৌম যাপন বেয়ে ঢেঁকি হয়ে উঠেছিল লোকাচার ও লোক-উৎসবের অঙ্গ, গান ও সাহিত্যের উপাত্ত, এমনকি নারীর নিজস্ব ‘মুক্তি’র হাওয়া ও আবহাওয়া এনে দেওয়া এক আশ্চর্য উপকরণ। পুরাণকথাতেও তার ছক-ভাঙা উপস্থিতি— পশ্চিমি রূপকথায় ডাইনির বাহন ঝাঁটা আর ভারতীয় দেবকথায় নারদের বাহন ঢেঁকি, শুনে চকচক করে উঠত শৈশবচোখ। ইতিহাস, জনবিশ্বাস ও বিবর্তনের পথ বেয়ে ঢেঁকির এই পরিক্রমণ-কথাই লিখেছেন মানস শেঠ। মুইনি, বেদে, মনা, গুলো, গড়, সিকে লড়ি, পঠনে— ধ্রুপদী ঢেঁকির গঠন থেকে শুরু করে আজকের ডিজিটাল ও মোবাইল ঢেঁকি সম্পর্কেও জানতে পারবেন পাঠক, সহায়ক মুদ্রিত ছবিগুলি। ঢেঁকি ও নারদ, লোকবিশ্বাসে ঢেঁকি নিয়ে দু’টি অধ্যায়; উনিশ শতকের শান্তিপুরের বীরবর আশানন্দ মুখোপাধ্যায় কী ভাবে হয়ে উঠলেন জনমান্য ‘আশানন্দ ঢেঁকি’, সেই আশ্চর্য কাহিনিও বিবৃত। আছে রাইস মিলের কথা, কালে কালে যা হয়ে উঠেছে ঢেঁকির কালান্তক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement