—প্রতীকী চিত্র।
ঋতুপর্ণ ঘোষকে আদ্যোপান্ত চেনানোর চেষ্টা এই বইটিতে। তাঁর সামগ্রিক শিল্পকর্ম ও মনন নিয়ে সে ভাবে কোনও বই বেরোয়নি বাংলা ভাষায়। সেই ‘অভাব বোধ’ থেকেই বইটির পরিকল্পনা, জানিয়েছেন অন্যতম সম্পাদক। কলাকুশলী ও অভিনেতা-অভিনেত্রীরা, যাঁদের পাশে পেয়েছিলেন বলেই একের পর এক নিজের সৃষ্টিকর্মকে আজীবন জারি রাখতে পেরেছিলেন ঋতুপর্ণ, তাঁদের কথন-লিখনকে গ্রন্থিত করতে পেরেছেন সম্পাদকদ্বয়, নথিভুক্তকরণের এই অভিপ্রেত কাজটি সম্পন্ন হয়েছে তাঁদের দ্বারা। বিশিষ্ট সিনেম্যাটোগ্রাফার, শিল্প নির্দেশক, আবহসঙ্গীতকার, স্থিরচিত্রকার, সহযোগী পরিচালকদের আলোচনা পড়তে-পড়তেই টের পাওয়া যায়, কতখানি গভীর শিল্পভাবনায় মজে থাকতেন ঋতুপর্ণ। তাঁর দার্শনিক বীক্ষা ও মহাভারত পর্যবেক্ষণ নিয়ে আলোচনা যথাক্রমে জয় গোস্বামী ও নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ীর, তাঁর মনন নিয়ে লিখেছেন শমীক বন্দ্যোপাধ্যায় ও শিবাজী বন্দ্যোপাধ্যায়। আছে তাঁর রবীন্দ্রনাথ নিয়ে আজীবন চর্চা আর অননুকরণীয় গদ্যের কথাও। তাঁর নির্মিত ছবির পোস্টার, লবি কার্ড, শুটিং স্টিল, বিজ্ঞাপনেরও কিছু সংগ্রহ মজুত বইটিতে। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের চোখে ঋতুপর্ণ ‘আপসহীন ভাবে বিশিষ্ট’, বলেছেন— ‘যতখানি সাহস এবং সততা তা সত্যি বিস্মিত করে’।
ঋতুপর্ণ এবং...
সঙ্কলন ও সম্পা: অর্পণ ও তপোজা
৭৫০.০০
দে’জ
পশ্চিমবঙ্গের প্রতিবেশী ‘স্বতন্ত্র জঙ্গল প্রদেশ’ ঝাড়খণ্ড। এক সময়ের অতিপরিচিত ‘রাঢ়খণ্ড’— ২৭টি অধ্যায়ে এই ভূখণ্ডটিরই অতীত ও বর্তমানের সাংস্কৃতিক, আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক অবস্থা পরিপ্রেক্ষিতের কথা তুলে ধরেছেন লেখিকা। আলোচনায় ইতিহাসের পাতা থেকে তিনি জানাচ্ছেন, এই অঞ্চলের বসবাসকারী আদিবাসীরা এক সময় ছিলেন ‘বন্য, ধর্মহীন ও সর্বখাদক’। সময়ের সঙ্গে এই অঞ্চলে প্রভাব পড়েছে বিভিন্ন রাজত্ব ও সংস্কৃতির। তবে একই সঙ্গে এলাকার অনার্য বাসিন্দারা প্রতি বার আত্মপ্রতিষ্ঠা করার চেষ্টায় বাইরের সংস্কৃতির সঙ্গে লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন।
লাল-সবুজের ঝাড়খণ্ড: তখন আর এখন
সুপর্ণা লাহিড়ী বড়ুয়া
২৫০.০০
সেতু প্রকাশনী
বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য এই অঞ্চলের মহিলাদের ভূমিকাও। গৃহকর্ম থেকে বিদ্রোহ, আন্দোলন— সবেতেই তাঁদের এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। পাশাপাশি, বইটিতে ছুঁয়ে দেখার চেষ্টা করা হচ্ছে এক বৈপরীত্যের পৃথিবীকে। এই বৈপরীত্যটি তৈরি হয়েছে বিশ্ববাজারে শক্তিশালী হওয়ার দৌড়ের সঙ্গে সঙ্গে। এক দিকে যেমন তৈরি হচ্ছে নিত্যনতুন ব্যবসায়িক পন্থা, অপর দিকে সেগুলির প্রভাবেই বাড়ছে গৃহহীন, পরিযায়ী শ্রমিকের দল। করোনাকালে এই শ্রমগোষ্ঠীর ঘরে ফেরার বাধ্যবাধকতাও ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। রয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রসঙ্গও। সেই সঙ্গে এই ভূখণ্ডে কাটানো শৈশবস্মৃতি ও বছর ত্রিশ পরে সেখানে ফিরে আসার একটি তুলনামূলক আখ্যানও তৈরি করতে চেয়েছেন লেখিকা।
ভাষানগরের গদ্য সুবোধ সরকার,
সম্পা: দিব্যেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়
৪০০.০০
চিন্তা
সুবোধ সরকারের প্রধান পরিচয়, তিনি কবি। এ বইটি থেকে জানা সম্ভব তাঁর মানস-অভিমুখের কিছু অলিগলি, রাজপথের কথা। সেই চলনটি ধরার চেষ্টা করেছে বইটি। আর সে ক্ষেত্রে আধার এখানে ভাষানগর পত্রিকাটি। পত্রিকায় প্রকাশিত ২৩টি সম্পাদকীয়, একটি ভ্রমণকাহিনি এবং একটি গদ্য দিয়ে সাজানো বইটি। কবির ভাষানগর পত্রিকার পথ চলা, কী থেকে তার সূত্রপাত তা বোঝার চেষ্টা করা যায় গদ্যগুলি থেকে। পাঠক সেগুলিকে কয়েকটি পর্বে নিজের মতো করে ভাগ করতেই পারেন— প্রথমত, প্রসঙ্গ বাংলা, বাঙালি ও বাংলা ভাষা। দ্বিতীয়ত, ভারতীয় সাহিত্যের সাম্প্রতিক সময়ের তুলনামূলক আলোচনা। এবং তৃতীয়ত, যেগুলি সব ক’টি নিবন্ধের সঙ্গেই লগ্ন, তবুও আলাদা করে চোখে পড়ে— ব্যক্তিগত ধারণা। প্রথম পর্বে কবি উস্কে দিয়েছেন বাংলা ভাষায় ‘গভীরতার চর্চা’ কোনখানে দাঁড়িয়ে, সে প্রশ্নটি। কখনও তিনি সরবে চান বাংলা কবিতার মেজাজের পরিবর্তন। পরক্ষণেই তাঁর গদ্যে ফুটে ওঠে ‘কবির জোর’ কতখানি, সে কথাও। দ্বিতীয় পর্বে জানা যায় সাম্প্রতিক সময়ে ভারতীয় ভাষায় সাহিত্যচর্চা, নানা অনুবাদকর্ম সম্পর্কিত কথা। তৃতীয় পর্বে বিভিন্ন রাজনৈতিক ঘটনায় নিজস্ব মতামত জানানোর অভিপ্রায় ধরা পড়ে।