দীনেশচন্দ্র রচনাসমগ্র ১
লেখক: দীনেশচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৪০০.০০
পত্রভারতী
‘‘প্রবল ও উন্নত এক আদর্শবাদ, যে আদর্শবাদ পরে তিনি ছোটদের ভাবনাচিন্তার মধ্যে গেঁথে দেওয়ার জন্য লিখেছেন তাঁর সমস্ত রচনা, প্রকাশ করেছেন তাদের জন্য আনন্দময় ও স্বাস্থ্যপ্রদ সব গ্রন্থ এবং প্রকাশ করেছেন ‘কিশোর ভারতী’।... তিনি চাইতেন আমাদের ছেলেমেয়েদের মনে স্বপ্ন জাগুক, তারা জানুক জীবনটা কত বিরাট, পৃথিবীটা কত বিস্তীর্ণ, তারা বুঝুক যে, বাস্তবে যেমন দুঃখ কষ্ট বঞ্চনা লাঞ্ছনা আছে তেমনই সাহসী ও উদ্যোগীর জন্য আছে নানা সুযোগ, এগিয়ে যাওয়ার নানা কঠিন কিন্তু মূল্যবান পথ। তিনি জানতেন, স্বপ্ন দেখার সাহস আর উদ্যম থাকলে অনেক বাস্তব বাধাকেও পার হওয়া যায়।’’ দীনেশচন্দ্র রচনাসমগ্র ১ শীর্ষক আলোচ্য বইটির ভূমিকায় লিখেছেন পবিত্র সরকার। ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্র দীনেশচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের নিরলস চেষ্টা ছিল কিশোর-কিশোরীদের মনের মধ্যে দুরাকাঙ্ক্ষা আর উদ্দীপনা সৃষ্টির। সমাজ ও ইতিহাসকে তিনি বিজ্ঞান এবং মার্ক্সবাদের দৃষ্টি দিয়ে বিশ্লেষণ করতেন। আর সেই কারণেই তাঁর রচনায় কোনও অলৌকিক অন্ধবিশ্বাসের রূপকথারা স্থান পেত না। এই সংকলনে জায়গা পেয়েছে তাঁর রচিত ‘নীল ঘূর্ণি’, ‘নাম তার ভাবা’, ‘অপরাজেয়’-র মতো বিখ্যাত আটটি উপন্যাস, বারোটি গল্প, দু’টি কবিতা, একটি নিবন্ধ, তিনটি বিশেষ রচনা, চারটি বিবিধ রচনা এবং পরিশিষ্টে সংকলিত হয়েছে রচনাগুলির ক্ষুদ্র-ইতিহাস এবং প্রকাশকাল।
ভাষা-জ্যোতিষ্ক জ্যোতিভূষণ
সম্পাদক: শুভাশিস চক্রবর্তী
১২০.০০
সুতরাং
‘‘দেশি-ওদেশি নানা ভাষায় চটজলদি বিনোদনের প্রত্যুৎপন্ন এই প্রতিভার জন্যেই সুভাষ মুখোপাধ্যায় তাঁকে ঘুঙুরবাঁধা এক হরবোলা বলে চিহ্নিত করেছিলেন’’, লিখছেন অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত। আর জগদ্বন্ধু ইনস্টিটিউশনে তাঁরই ছাত্র চিন্ময় গুহের কথায়, ‘‘বিদ্বান জ্যোতিভূষণ চাকীকে এই পোড়ারমুখো বাংলায় অনেকে না হলেও কেউ কেউ চেনেন, কিন্তু ভাষাবিদ-বানান বিশারদ-অনুবাদক-বৈয়াকরণ-অভিধানকার জ্যোতিভূষণকে; ছড়াকার, সংগীতজ্ঞ ও প্রাবন্ধিক জ্যোতিবাবুকে যতটা চেনা উচিত ছিল ক্রমক্ষীয়মান মনীষার এই পল্লীগ্রাম তা চেনেনি।... জ্যোতিবাবুর আরেকটি বড় পরিচয় তাঁর আপন পাঁজরের মতো প্রিয় ছাত্রেরা জানে: শিক্ষক জ্যোতিভূষণ চাকী...।’’ এ হেন মানুষটির প্রয়াণের দশ বছর পরে বিস্মৃতি থেকে তাঁকে ফিরিয়ে আনতে এমন একটি সঙ্কলনের প্রয়োজন ছিল। বিচিত্রকর্মা মানুষটির বিভিন্ন দিক এখানে নানা জনের লেখায় উদ্ভাসিত। শাহ্নাজ নবী লিখেছেন উর্দু আর বাংলার সেতু জ্যোতিভূষণকে নিয়ে, তাঁর বাংলা আকাদেমি পর্বের কথা জানিয়েছেন উৎপল ঝা, ছোটদের জন্য জ্যোতিভূষণের লেখাপত্রের আলোচনা করেছেন কল্যাণ দাশগুপ্ত, তাঁর সকৌতুক বাগ্বৈদগ্ধ্য প্রসঙ্গে বলেছেন সুভাষ ভট্টাচার্য, শৈলেন চক্রবর্তী সংগ্রহ করে দিয়েছেন তাঁর কয়েকটি ছড়া কবিতা গজল, স্মৃতিচারণ করেছেন হর্ষ দত্ত মিহির বন্দ্যোপাধ্যায় প্রসূন দত্ত সর্বানন্দ চৌধুরী, শিক্ষক জ্যোতিভূষণের কথা চিন্ময় গুহ ছাড়াও লিখেছেন অভিজিৎ সেন। অনির্বাণ রায় সযত্নে তৈরি করে দিয়েছেন সংক্ষিপ্ত জীবনপঞ্জি, গ্রন্থপঞ্জি ও রচনাপঞ্জি।
নাটক সমগ্র ১/ হরিমাধব মুখোপাধ্যায়
সম্পাদক: ফণীভূষণ মণ্ডল
৬৩০.০০
কথোপকথন
কোনও দিন নাটক লিখবেন ভাবেননি, কিন্তু নাট্যসমালোচকের তীব্র আক্রমণে তাঁর ‘দ্বিতীয় উত্তরণ’ ঘটে, ‘আমাদের নিজেদের থিয়েটার দরকার যেটা আমাদের মৌলিক’— এই ভাবনা থেকে অভিনেতা ও নির্দেশকের পাশাপাশি নাট্যকার হরিমাধব মুখোপাধ্যায়ের যাত্রা শুরু। এই খণ্ডে সঙ্কলিত ১৯৮০ থেকে ’৯০-এর মধ্যে লেখা পাঁচটি নাটক ‘জল’, ‘দেবাংশী’, ‘বিছন’, মন্ত্রশক্তি’ ও ‘অনিকেত’ তাঁরই নির্দেশনায় এবং ‘ত্রিতীর্থ’ নাট্যদলের প্রযোজনায় দর্শক সমালোচক তথা নাট্যতাত্ত্বিকদের নজর কেড়েছিল। এতটাই যে, শমীক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ভূমিকায় লিখেছেন, ‘‘বাংলা থিয়েটারের ইতিহাসে একাধারে নাট্যকার, নাট্যনির্দেশক ও অভিনেতার যুগপৎ উপস্থিতি প্রথমাবধিই রয়ে গেছে— সেই গিরিশচন্দ্র থেকে অজিতেশ-বিভাস-অরুণ-মনোজ পর্যন্ত। সেই ধারায় বিজন ভট্টাচার্য, উৎপল দত্ত, বাদল সরকার, অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়, মনোজ মিত্র ও হরিমাধব ব্যতিক্রমী, তাঁদের নাট্যকারসত্তায় তাঁদের স্বাতন্ত্র্যচেতনায়।... হরিমাধব যখন জল, বিছন, দেবাংশী লিখতে বসেন, তখন নাটককারের দর্শন, নাট্যনির্দেশকের প্রয়োগভাবনা ও অভিনয়ের ভাবনা আলাদা স্থান করে নেয়।’’ তিন-চার দশক আগে লেখা নাটকের পাণ্ডুলিপিগুলি ট্রাঙ্কবন্দি হয়েই পড়ে ছিল, এত দিনে সম্পাদকের উদ্যোগে তা আলোর মুখ দেখল। সঙ্কলনে নাটকগুলি ছাড়াও আছে বিস্তারিত নাট্যপরিচিতি— পাঁচটি নাটকের প্রযোজনার খুঁটিনাটি তথ্য।