কয়লা থেকে ডিজেল তৈরির ৬১ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প স্থগিত রাখার কথা জানাল জিন্দল স্টিল অ্যান্ড পাওয়ার।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ৯টি কয়লাখনি হাতছাড়া হয়েছে সংস্থাটির। তার উপর কর্ণধার নবীন জিন্দলের অভিযোগ, তাঁদের এই প্রকল্পকে সহায়তার বিষয়ে তেমন আগ্রহ দেখায়নি কেন্দ্রের মোদী সরকার। আর এই জোড়া কারণেই প্রকল্প এগিয়ে নিয়ে না-যাওয়ার এই সিদ্ধান্ত।
প্রতিষ্ঠাতা ও পি জিন্দলের ছোট ছেলে নবীন জিন্দল শুধু জিন্দল স্টিলের চেয়ারম্যান নন, কংগ্রেসের প্রাক্তন সাংসদও। তাঁর দাবি, পেট্রোল ও ডিজেলের চাহিদা মেটাতে বিপুল পরিমাণে অশোধিত তেল আমদানি করতে হয় ভারতকে। সেখানে তাঁর ওই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে, নিচু মানের কয়লা থেকে প্রতিদিন তৈরি হতে পারত ৮০ হাজার ব্যারেল ডিজেল। কিন্তু দেশের পক্ষে এমন গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প নিয়েও মোদী সরকার তেমন আগ্রহ দেখায়নি বলেই জিন্দলের অভিযোগ। শীর্ষ আদালতের নির্দেশের পরে কেন্দ্র অবশ্য প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, বাতিল কয়লা খনিগুলি ফের বণ্টনের জন্য আগামী মার্চের মধ্যেই নিলাম শেষ করবে তারা।
অনিয়মের জন্য সেপ্টেম্বরে দেশের ২১৪টি কয়লা খনির বণ্টন বাতিল করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। তার মধ্যে রয়েছে ওড়িশায় ১৫০ কোটি টনের খনি-সহ জিন্দল স্টিলের ৯টি। তার জেরে স্বাভাবিক ভাবেই সমস্যার মুখে পড়েছে জিন্দল স্টিল। ওই ঘোষণার পর থেকে প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকার এই সংস্থার শেয়ার দর নেমেছে ৪২%। তা-ও আবার এমন সময়ে, যখন সেনসেক্স উঠেছে ৩৪%।
শুধু তা-ই নয়। হাতছাড়া হওয়া কয়লা খনি ফেরত পেতে নিলামে জিন্দল স্টিল যোগ দেবে ঠিকই, কিন্তু তার আগে ডিসেম্বরের মধ্যে তাদের মোটা টাকা জমা দিতে হবে সরকারের ঘরে। কারণ শীর্ষ আদালতের রায়েই বলা ছিল, আগে বণ্টন হওয়া খনি থেকে যে-সব সংস্থা কয়লা তুলেছিল, সেই তুলে নেওয়া কয়লার জন্য লেভি গুনতে হবে তাদের। জিন্দল স্টিলের ক্ষেত্রে তার সম্ভাব্য অঙ্ক ৩,০০০ কোটি টাকা।
এই প্রেক্ষাপটে ১,০০০ কোটি ডলারের (৬১,৭৫০ কোটি টাকা) এই প্রকল্প স্থগিত রাখার কথা বলতে গিয়ে নবীনের প্রশ্ন, যদি কয়লার ব্লকই না-থাকে, তা হলে আর তা থেকে ডিজেল তৈরির প্রকল্প হবে কী ভাবে? সেই হিসেবে এই ঘোষণাকে খনি বণ্টন বাতিলের প্রথম বড় বলি বলে মনে করছেন অনেকেই।