সহারা কাণ্ডে নাটকীয় মোড়। এ বার সুব্রত রায়ের জামিনের টাকা জোগাড়ে উদ্যোগী হলেন কর্মীরাই। সহারার দাবি, সুব্রতবাবুকে তিহাড় জেলের কুঠুরি থেকে বার করে আনতে অত্যন্ত আবেগপ্রবণ হয়েই তহবিল সংগ্রহের এক অভিনব প্রস্তাব দিয়েছেন উদ্বিগ্ন কর্মীরা। যেখানে বলা হয়েছে, সংস্থার কর্মী ও শুভাকাঙ্খীদের কাছ থেকে কমপক্ষে ১ লক্ষ টাকা করে তুলে অন্তত ৫,০০০ কোটি জোগাড় করার কথা। প্রস্তাব অনুযায়ী, তহবিলে যাঁরা টাকা দেবেন, তাঁদের প্রত্যেককে সহারার শাখা সংস্থা সহারাইন ই-মাল্টিপারপাস সোসাইটির শেয়ার দেওয়া হবে। শুক্রবার এই আর্জি জানিয়ে গোষ্ঠীর সমস্ত কর্মীর কাছে এক পাতার একটি চিঠিও পাঠানো হয়েছে। তাতে স্বাক্ষর রয়েছে ওই সোসাইটির ডিরেক্টর ও সহারা গোষ্ঠীর বিভিন্ন সহযোগীদের।
এ প্রসঙ্গে সহারার এক উচ্চপদস্থ কর্তার দাবি, সুব্রতবাবু বা সংস্থা তরফে ওই চিঠি পাঠানো হয়নি। তাঁর কথায়, “বর্তমান প্রতিকূল পরিস্থিতিতে আবেগপ্রবণ হয়েই কর্মীরা টাকা জোগাড়ে উদ্যোগী হয়েছেন।” সে ক্ষেত্রে তাঁর সতর্ক বার্তা, সহারা গোষ্ঠী তার কর্মীদের এ ভাবে টাকা জমা দিতে বলেছে এই মর্মে যেন উদ্যোগটিকে ব্যাখ্যা করা না-হয়। প্রসঙ্গত, সুব্রত রায় তিহাড় জেলে বন্দী ৪ মার্চ থেকে। গত বুধবারই সুপ্রিম কোর্ট তার রায়ে জানিয়েছিল, ১০ হাজার কোটি টাকা জমা দিলেই জামিন পাবেন সহারা কর্তা এবং গোষ্ঠীর অপর দুই ডিরেক্টর। আর তার পর গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার সহারা সর্বোচ্চ আদালতে জানিয়ে দেয়, জামিনের জন্য এখনই ১০ হাজার কোটি টাকা জোগাড় করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। অথচ এই সহারাই এর আগে দাবি করেছে যে, তাদের সংস্থার নিট সম্পদ ৬৮ হাজার কোটি টাকারও বেশি। মোট সম্পত্তি ছাড়িয়ে গিয়েছে দেড় লক্ষ কোটি টাকার মাইলফলক। সংস্থার হাতে থাকা সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে মহারাষ্ট্রে নিজস্ব টাউনশিপ অ্যাম্বি ভ্যালি সিটি, ভারতের ফর্মূলা ওয়ান দল ফোর্স ইন্ডিয়া, লন্ডনের গ্রসভেনর হাউজ, নিউ ইয়র্কের প্লাজা হোটেল ইত্যাদি।
এ দিন টাকা জোগাড়ের আর্জি জানিয়ে সহারা কর্মীদের কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, সহারাইন ই-মাল্টিপারপাস সোসাইটির দেওয়া এই প্রস্তাব সংস্থার কর্মী, সহযোগী ও শুভানুধ্যায়ীদের পক্ষে একটি ‘লাভজনক প্রকল্প’। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে ‘সহারা ইন্ডিয়া পরিবার’ তৈরিতে সুব্রত রায়ের ভূমিকার কথাও। সেই সঙ্গে আবেদন জানানো হয়েছে এই বলে যে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সংস্থার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এবং সম্পদ বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা থাকায় টাকা জোগাড় এই মুহূর্তে অসম্ভব। এমনকী সম্পদ বিক্রির উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হলেও, বর্তমান পরিস্থিতিতে সেগুলির সঠিক মূল্য পাওয়া সম্ভব নয়। আর এই কারণেই সহারা কর্তাকে ছাড়াতে কর্মী-সহযোগীদের সমর্থন জরুরি। সে ক্ষেত্রে ১, ২, ৩ লক্ষ বা তারও বেশি, যে যতটা পারবে, ততটা অর্থ দিয়েই সাহায্য করলে ভাল হয় বলে আর্জি জানানো হয়েছে চিঠিতে।