উৎসবের মরসুমে আশার বার্তা বয়ে আনল দেশের পরিকাঠামো। অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা আরও উজ্জ্বল করে অগস্টে এই ক্ষেত্র বাড়ল ৫.৮%। তার আগের মাসে ওই বৃদ্ধির হার মাত্র ২.৭ শতাংশে নেমে আসায় উদ্বেগ বাড়ে সরকার, শিল্পমহল-সহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের। এমনকী গত বছরের অগস্টেও পরিকাঠামোয় বৃদ্ধির হার তুলনায় ছিল অনেকটাই কম (৪.৭%)।
মঙ্গলবার কেন্দ্র প্রকাশিত পরিসংখ্যান জানিয়েছে, মূলত কয়লা, সিমেন্ট ও বিদ্যুৎ উৎপাদনের চোখে পড়ার মতো বৃদ্ধিই পরিকাঠামোকে এতটা ভাল জায়গায় নিয়ে গিয়েছে। যদিও শিল্পমহলের আশঙ্কা, সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের ২১৪টি কয়লা ব্লকের বণ্টন বাতিলের সিদ্ধান্ত আগামী দিনে কয়লা উৎপাদন বৃদ্ধির এই হার ধরে রাখার পথে বাধা তৈরি করবে। সে ক্ষেত্রে তারা নতুন করে কয়লা খনি বণ্টন করতে দ্রুত যথার্থ নীতি নির্ধারণের জন্যও সওয়াল করেছেন কেন্দ্রের কাছে।
মোট আটটি ক্ষেত্র নিয়ে তৈরি হয় দেশের পরিকাঠামো। এগুলি হল, অশোধিত তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস, তেল শোধন ক্ষেত্র, ইস্পাত, কয়লা, সার, সিমেন্ট ও বিদ্যুৎ। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এর মধ্যে কয়লা, সিমেন্ট ও বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছে সব থেকে বেশি। যথাক্রমে ১৩.৪%, ১০.৩% ও ১২.৬%। ইস্পাত বেড়েছে ৯.১%। তবে অশোধিত তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎপাদন কমেছে যথাক্রমে ৪.৯% ও ৮.৩%। একই পথের সঙ্গী হয়ে ৪.৩% করে কমে গিয়েছে তেল শোধন ক্ষেত্র এবং সার উৎপাদনও।
বিচ্ছিন্ন ভাবে দু’একটি ক্ষেত্রের উৎপাদন চিন্তায় রাখলেও সামগ্রিক ভাবে পরিকাঠামোর এতটা বৃদ্ধি খুশি করেছে শিল্পমহলকে। কারণ শিল্প সূচকে এই ক্ষেত্রটির ভূমিকা প্রায় ৩৮%। সুতরাং পরিকাঠামো উন্নতি করলে ভবিষ্যতে শিল্পোৎপাদন ভাল হওয়ার ভিত আরও শক্ত হয়। আর শিল্প বৃদ্ধি মাথা তুললে আর্থিক বৃদ্ধির হার আরও ভাল হওয়ার সম্ভাবনা নিশ্চিত হয়। চাঙ্গা হয় অর্থনীতি।
যে কারণে এ দিন বণিকসভা অ্যাসোচ্যামের সেক্রেটারি জেনারেল ডি এস রাওয়াত বলেন, “অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা জোরালো করল পরিকাঠামোয় এই বৃদ্ধি।” তবে উন্নতি ধরে রাখতে চাহিদা আরও বাড়ানো জরুরি বলেও জানান তিনি। এবং সে ক্ষেত্রে রাওয়াতের অভিমত, “চাহিদা বাড়া নির্ভর করবে আগামী দিনে শীর্ষ ব্যাঙ্কের সুদ নিয়ে অবস্থানের উপর। প্রয়োজনে বৃদ্ধির জন্য অবস্থান পাল্টাতে হবে তাদের।”