বৈদ্যুতিন বাণিজ্যের ফুলেফেঁপে ওঠা বাজারের সুযোগ নিয়ে নিজেদের আয় বাড়াতে ঢেলে সাজছে ডাক বিভাগ। সেই সঙ্গে, গ্রাহকের সুবিধার জন্য ব্যাঙ্কের মতো ডাকঘরেও চালু হচ্ছে কোর ব্যাঙ্কিং সলিউশন (সিবিএস) পরিষেবা।
বেসরকারি ক্ষেত্রের সঙ্গে পাল্লা দিতে কী ভাবে ডাক বিভাগ এগোবে, সে ব্যাপারে পরামর্শ দিতে গড়া টাস্ক ফোর্স কেন্দ্রের কাছে সম্প্রতি রিপোর্ট দিয়েছে। বৃহস্পতিবার কলকাতায় এক অনুষ্ঠানে এ কথা জানিয়ে কেন্দ্রীয় ডাক সচিব কাবেরী ভট্টাচার্য বলেন, আগামী ৩ বছরে গোটা বিভাগকে নানা ভাবে ঢেলে সাজা হবে। এ জন্য টাস্ক ফোর্সের রিপোর্ট খতিয়ে দেখে তা রূপায়ণের চেষ্টা করা হবে।
প্রসঙ্গত, ২০০৭-এ যেখানে ভারতে ই-কমার্স বা বৈদ্যুতিন বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১৭৫০ ডলার, সেখানে ২০১০ এবং ২০১২-তে তা দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১০ হাজার ও ১৬ হাজার ডলার। সমীক্ষায় প্রকাশ, ২০১৬-এ তা ৮৮ হাজার ডলার ছোঁবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, স্ন্যাপডিল, ফ্লিপকার্ট, অ্যামাজন ইত্যাদি সংস্থার হাত ধরে ই-কমার্সের এই রমরমায় হু হু করে বাড়ছে ক্রেতার দরজায় পণ্য পৌঁছে দেওয়ার পরিষেবা। যার জেরে স্বভাবিক ভাবেই লাভের কড়ি ঘরে তুলছে বেসরকারি ক্যুরিয়ার সংস্থা। অন্য দিকে মান্ধাতার আমলের পরিকাঠামো নিয়ে পিছিয়ে পড়েছে ডাক বিভাগ।
এ দিন ডাক সচিব বলেন, “দেরিতে হলেও আমরা এ ব্যাপারে সক্রিয় হয়েছি। ক্যুরিয়ারের পরিষেবা মেলে মূলত বড় শহরে। কিন্তু বৈদ্যুতিন বাণিজ্য গ্রামেও সম্প্রসারিত হচ্ছে। আমরা দেশের প্রত্যন্ত প্রান্তরে দ্রুত ই-কমার্স-এর সুবিধা ক্রেতার দরজায় পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করব।” তিনি বলেন, “গত ৬ মাসে ডাক বিভাগ ই-কমার্সের হাত ধরে ২৮০ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। বছরে বৃদ্ধি অন্তত ২০%।”
বেঙ্গল সার্কল-এর প্রথম ডাকঘর হিসেবে টালিগঞ্জে সিবিএস প্রকল্পের সূচনা করেন ডাক সচিব। বেঙ্গল সার্কল অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম, আন্দামানে ডাক পরিষেবায় সি বি এসের সুফল অবশ্য এখনই মিলবে না। এই সার্কল-এর চিফ পোস্ট মাস্টার জেনারেল অরুন্ধতী ঘোষ বলেন, “সার্কলের ৪৭টি প্রধান ডাকঘরে আগামী মার্চের মধ্যে এই সুবিধা পৌঁছনোই আমাদের লক্ষ্য। রাজ্যের ১৭৬০টি ডাকঘরে পর্যায়ক্রমে এর সুযোগ মিলবে।” তিনি জানান, চলতি মাসে আরও ৫টি প্রধান ডাকঘরে সিবিএসের পরিকাঠামো তৈরি হবে।