চোখ কপালে তোলা ছাড় দেখে ওয়েবসাইটে হুমড়ি খেয়ে পড়া ভিড়। আর তারপর জিনিস কিনতে গিয়ে অনেক ক্রেতার হয়রানি। গত সোমবার এই জোড়া কাণ্ডের পর থেকেই খবরের শিরোনামে ফ্লিপকার্ট। ওয়েবসাইট কিছুটা বেহাল হওয়ায় ক’দিন প্রায় লাগাতার শিরোনামে থেকে যাওয়া ফ্লিপকার্টের ভাবমূর্তির দীর্ঘমেয়াদে কোনও ক্ষতি হল কি না, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা কার্যত দু’ভাগ।
বিতর্ক তৈরি হয়েছে এ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের মন্তব্যেও। ই-কমার্স সংস্থাগুলির বিপুল ছাড়ের বহরে আতঙ্কিত হয়ে কেন্দ্রের দ্বারস্থ হয়েছে ভারতে ব্যবসায়ীদের সংগঠন সিএআইটি। দাবি জানিয়েছে, অনলাইন রিটেলের উপর নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ কড়া করার। বিষয়টি খতিয়ে দেখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কেন্দ্রও। আর ঠিক এখানেই আতঙ্কিত মুক্ত অর্থনীতির সমর্থকেরা। কোন সংস্থা কত দামে পণ্য বিক্রি করবে, সরকার তা স্থির করতে শুরু করলে সাবেক নিয়ন্ত্রণ জমানা ফিরে আসতে পারে বলে ভয় পাচ্ছেন তাঁরা।
কিন্তু এই পুরো ঘটনায় বিশেষজ্ঞরা দু’ভাগ কেন?
এক পক্ষের মতে, ওই দিন জিনিস কিনতে গিয়ে হয়রান হয়েছেন অনেক ক্রেতা। পরে যাঁদের অনেকেই নিজেদের হতাশা উগরে দিয়েছেন ফেসবুক, টুইটার-সহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায়। ফলে সে দিক থেকে দেখলে ভাবমূর্তি ধাক্কা খেয়েছে ফ্লিপকার্টের। টোল খেয়েছে তার বিশ্বাসযোগ্যতা। অনেকের মতে, অ্যামাজন, স্ন্যাপডিলের মতো প্রতিদ্বন্দ্বীর কাছে এর জেরে কিছুটা মাটি হারাতে পারে ফ্লিপকার্ট।
কিন্তু আবার অন্য পক্ষের দাবি, ওই দিন সাইটে অপ্রত্যাশিত ভিড় সামাল দিতে গিয়ে ই-কমার্স সংস্থাটি নাকাল হয়েছে ঠিকই, কিন্তু তেমনই গত কয়েক দিনে সংবাদ মাধ্যমে নিখরচার প্রচারও চেটেপুটে খেয়েছে তারা। আগামী দিনে কৌশলী ভাবে যা নিজেদের ভাবমূর্তি পোক্ত করতে ব্যবহার করবে সংস্থাটি।
এঁদের যুক্তি, গত ৬ অক্টোবর ফ্লিপকার্টের সাইট থেকে জিনিস কেনা নিয়ে গত কয়েক দিনে যে-পরিমাণ চর্চা হয়েছে, তাতে অনেকেই নতুন করে খোঁজ করছেন ই-কমার্স সম্পর্কে। জানতে চাইছেন, নেটে হেঁটে পণ্য কেনার পদ্ধতি ঠিক কী রকম, তাতে ছাড়ই বা কেমন মেলে। শুধু তা-ই নয়, জিনিস কিনতে হয়রানির জন্য ক্ষমা চেয়েছে ফ্লিপকার্ট। ক্রেতাদের কাছে ই-মেল পাঠিয়েছেন সংস্থার দুই কর্ণধার সচিন ও বিন্নি বনসল। অনেকের মতে, এর মাধ্যমে ক্রেতাদের প্রতি দায়বদ্ধতার ছবিই তুলে ধরতে চেয়েছে সংস্থাটি।