নতুন বছরের প্রাক্কালেই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির প্রশাসনিক কাঠামোয় প্রতীক্ষিত বদলটি ঘটিয়ে ফেলল কেন্দ্র। জানিয়ে দিল চিরাচরিত প্রথা থেকে বেরিয়ে এসে ব্যাঙ্কগুলির চেয়ারম্যান-ম্যানেজিং ডিরেক্টর (এমডি) পদকে দু’টি আলাদা পদে ভাঙার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। ঠিক যেমন বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলিতে হয়ে থাকে। একই সঙ্গে বুধবার ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক-সহ চার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এমডি-সিইও পদে নবনিযুক্ত ব্যক্তিদের নামও ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। তাদের দাবি, বাকিগুলির জন্যও প্রার্থী নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। যার খুঁটিনাটি শীঘ্রই ঘোষণা করা হবে।
সিএমডি (চেয়ারম্যান-এমডি) পদ ভাঙার সিদ্ধান্তের ফলে এখন থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যানরা থাকবেন ‘নন-এগ্জিকিউটিভ’ হিসেবে। অর্থাৎ তাঁদের আর সরাসরি ব্যাঙ্কের দৈনন্দিন কাজকর্মের দায়-দায়িত্ব নিতে হবে না। সেগুলি পালন করবেন এমডি ও চিফ এগ্জিকিউটিভ অফিসারেরা (সিইও)। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে যা এর আগে হয়নি। তবে কেন্দ্র জানিয়েছে, স্টেট ব্যাঙ্কের কাঠামো বদলাচ্ছে না। যেখানে প্রধান চেয়ারম্যান আর তাঁকে কাজকর্মে সাহায্য করেন চার জন এমডি। ফলে এসবিআই ছাড়া বাকিগুলির চেয়ারম্যান এ বার থেকে আংশিক সময়ের জন্য পর্ষদের সদস্য হবেন ও বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন।
এ দিন অর্থ মন্ত্রকের দেওয়া বিবৃতি মাফিক, ইন্ডিয়ান ওভারসিজ ব্যাঙ্কের এমডি-সিইও হচ্ছেন আর কোটেশ্বরন। তিনি ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার এগ্জিকিউটিভ ডিরেক্টর (ইডি)। ওরিয়েন্টাল ব্যাঙ্ক অব কমার্সে ওই পদে বসছেন অনিমেষ চহ্বাণ। তিনি সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কের ইডি। পঞ্জাব অ্যান্ড সিন্ধ ব্যাঙ্কের ইডি কিশোর কুমার সংসি আসবেন বিজয়া ব্যাঙ্কে। আর ব্যাঙ্ক অব বরোদার পি শ্রীনিবাস আসছেন ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ায়। তিন বছর বা অবসর নেওয়ার দিন, যেটা আগে পড়বে, তত দিন পর্যন্তই ওই পদে বহাল থাকবেন তাঁরা।
এতদিন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিতে সর্বোচ্চ এগ্জিকিউটিভ হিসেবে থাকতেন সিএমডি। ফলে তাঁর হাতেই থাকত ব্যাঙ্কিং কাজকর্মের নিয়ন্ত্রণ। যা আটকাতে বহু আগেই ওই পদকে ভাঙার সুপারিশ করেছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ও অর্থ মন্ত্রক। সম্প্রতি রাষ্ট্রায়ত্ত সিন্ডিকেট ব্যাঙ্কের সিএমডি ঘুষ কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়া ও আরও দুই ব্যাঙ্ক-প্রধানের বিরুদ্ধে আর্থিক নয়ছয়ের অভিযোগ ওঠার পরে দুই পদ আলাদা করার প্রয়োজনীয়তা ফের সামনে আসে।