অবশেষে কিছুটা স্বস্তির হাওয়া দেশের গাড়ি শিল্পমহলে। অন্তর্বর্তী বাজেটে উৎপাদন শুল্ক কমানো এবং নয়াদিল্লিতে আয়োজিত অটো এক্সপো এই দুইয়ের উপর ভর করে ফেব্রুয়ারিতে দেশে সামান্য হলেও বাড়ল যাত্রী গাড়ি বিক্রি। চার মাস পর এই প্রথম। গাড়ি সংস্থাগুলির সংগঠন সিয়াম-এর পরিসংখ্যান অনুসারে, এই সময়ে তা ১.৩৯% বেড়ে হয়েছে ১,৬০,৭১৮। বাণিজ্যিক গাড়ির বিক্রি ফের কমলেও, দু’চাকার গাড়ির ভাল ফলের দৌলতে সব মিলিয়ে বিক্রি বেড়েছে প্রায় ৫%।
এ বারের অন্তর্বর্তী বাজেটে এসইউভি (স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিকল)-সহ বিভিন্ন ছোট গাড়ি, মোটরসাইকেল, স্কুটার ও বাণিজ্যিক গাড়ির উৎপাদন শুল্ক কমিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। কমেছে অন্য বড় ও মাঝারি গাড়ির উৎপাদন শুল্কও। এ ছাড়া চেসিস ও ট্রেলারের উপরও শুল্ক হ্রাসের প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। তার পর থেকেই দাম কমিয়েছে বেশ কিছু সংস্থা। পাশাপাশি, অটো এক্সপো-য় বেশ কিছু নতুন গাড়ির প্রদর্শন উৎসাহ জুগিয়েছে ক্রেতাদের মনে। সিয়ামের ডিরেক্টর জেনারেল বিষ্ণু মাথুর জানান, এই সব কারণে ক্রেতারা ফের বিপণিতে ফিরতে শুরু করেছেন।
কিন্তু ক্রেতারা খোঁজ খবর নিলেই যে আগামী দিনে এই শিল্পের চাকা ঘুরবে, তা নয়। মাথুরের মতে, ফেব্রুয়ারিতেও মারুতি, হোন্ডার মতো হাতে গোনা কয়েকটি সংস্থা ছাড়া অন্য সংস্থাগুলি বিক্রি বাড়াতে পারেনি। টানা ১০ মাস (ফেব্রুয়ারিতেই প্রায় ৩০%) কমেছে বাণিজ্যিক গাড়ি বিক্রিও। কিছুটা ভাল ফল করেছে দু’চাকার গাড়ি নির্মাতারা। কিন্তু চলতি অর্থবর্ষের এপ্রিল-ফেব্রুয়ারির পরিসংখ্যান দেখলে বোঝা যাবে অবস্থা কতটা করুণ। এই সময়ে যাত্রী গাড়ি বিক্রি কমেছে ৪.৬%। তাই পরিস্থিতির দিকে নজর রাখার পরামর্শই দিয়েছেন তিনি। তাঁর মতে, গত কয়েক মাস জুড়ে গাড়ি বিক্রির ক্ষেত্রে এতটাই অস্থিরতা দেখা গিয়েছে যে, একটি মাস দেখেই নির্দিষ্ট করে চাকা ঘুরছে বলা সম্ভব নয়। বরং মার্চে সংস্থাগুলি ভাল ফল করলেও, সব মিলিয়ে চলতি অর্থবর্ষে গাড়ি বিক্রি কমবে বলেই তাঁর ধারণা। তবে তিনি জানান, আগামী ক’মাস গাড়ি শিল্পের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ লোকসভা নির্বাচনের পর নতুন সরকারের আমলে খনি শিল্প-সহ কয়েকটি ক্ষেত্রে নয়া নীতি প্রণয়ন হতে পারে।