বেশ কিছু দিন পড়ার পরে ফের ধীরে ধীরে উঠতে শুরু করেছে শেয়ার বাজার। সোমবার সেনসেক্স বেড়েছে ১৫৪ পয়েন্ট। থিতু হয়েছে ২৭,৩৯৫.৭৩ অঙ্কে। এই নিয়ে টানা দু’দিনে সূচক বাড়ল ১৮৭ পয়েন্ট।
তবে ডলারের সাপেক্ষে টাকার দাম এ দিন আরও ১০ পয়সা পড়েছে। প্রতি ডলার দাঁড়িয়েছে ৬৩.৬৭ টাকায়। যা গত ১৩ মাসের মধ্যে সব থেকে কম। আমদানিকারীদের ডলার কেনার জেরেই বেড়ে যায় তার চাহিদা। যার ফলে টাকার অঙ্কে ডলারের দামও বেড়েছে। তবে বাজার সূত্রে খবর, শেয়ার বাজারে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি বিনিয়োগ করতে থাকায় দেশে ডলারের আমদানিও কিছুটা বৃদ্ধি পায়। যা টাকার দামে বড় মাপের পতন রুখতে সাহায্য করেছে।
এক দিকে পড়তি বাজার আর অন্য দিকে দেশের আর্থিক অবস্থার ভবিষ্যৎ নিয়ে অর্থমন্ত্রীর আশাব্যঞ্জক মন্তব্য এই দু’টি বিষয়ই লগ্নিকারীদের শেয়ার কিনতে এ দিন উৎসাহ জুগিয়েছে বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের। এমনিতেই এর আগে বাজার টানা পড়ায় সেনসেক্স ২৮ হাজারের ঘর থেকে নেমেছে ২৭ হাজারের ঘরে। যাকে শেয়ার কেনার মূল্যবান সুযোগ হিসেবে নিয়েছেন লগ্নিকারীরা। পাশাপাশি, অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেন যে, এই অর্থবর্ষে দেশের বৃদ্ধিতে আরও গতি আসবে। এবং সেই গতি আগামী ২০১৫-’১৬ সালে আরও দ্রুত হবে। চলতি আর্থিক বছরে উন্নয়নের হার ৫.৫ শতাংশে ঠেকার ভবিষ্যদ্বাণীও করেছেন জেটলি। বাজারকে উৎসাহিত করেছে এই সমস্ত আশ্বাসও।
এ দিকে, দীর্ঘ দিন টানা বেচার পর ফের শেয়ার কিনতে শুরু করেছে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি। সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের খবর অনুযায়ী ওই সব সংস্থা গত শুক্রবার ভারতের বাজারে প্রায় ৪০ কোটি টাকার শেয়ার কিনেছে। যদিও সাধারণত ওই সব সংস্থা প্রতিদিন যে-পরিমাণ শেয়ার কেনে, তার তুলনায় কেনার পরিমাণ কম ছিল। কিন্ত দীর্ঘ দিন বাদে তাদের ফের ক্রেতার ভূমিকায় দেখে শেয়ার বাজার মহল খুশি।
তবে বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, বাজেটের আগে বাজারে স্থিতিশীলতা আসার সম্ভাবনা কম। তাঁদের ধারণা, বাজেট পর্যন্ত পড়তি বাজারে শেয়ার কিনে দাম অল্প কিছুটা বাড়লেই তা বিক্রি করে দেওয়ার প্রবণতা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে লগ্নিকারীদের মধ্যে। এর ফলে দীর্ঘ মেয়াদি লগ্নি আসার সম্ভবনা এই মুহূর্তে তেমন দেখতে পাচ্ছেন না বিশেষজ্ঞরা।
এ দিন বিশেষ করে বেড়েছে রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ আইটিসি, টিসিএস, টাটা মোটরস, হিরো মোটো কর্প ইত্যাদি সংস্থার শেয়ার দর।
সোমবার এশিয়া-সহ আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও বহু শেয়ার সূচকের মুখ উপরের দিকে ছিল। জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ার সূচক পড়লেও বেড়েছে চিন, হংকং, সিঙ্গাপুর ও তাইওয়ানের বাজার। এটাও ভারতের শেয়ার বাজারে ভাল প্রভাব ফেলেছে, মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।