—প্রতীকী চিত্র।
এগোনোর পথে এখনও কাঁটা চড়া মূল্যবৃদ্ধি। আর তাতেই আটকে যাচ্ছে গ্রামীণ অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর প্রক্রিয়া। গ্রামাঞ্চলে নতুন করে হোঁচট খাওয়ার কথা বলছে খোদ ভোগ্যপণ্য শিল্প। তবে শহরাঞ্চলে উল্টো ছবি। সংশ্লিষ্ট বিক্রেতা সংস্থাগুলির দাবি, মূলত আধুনিক বিপণন ব্যবস্থা এবং বড় মোড়কের উপর ভিত্তি করে শহুরে বাজারে স্বল্পমেয়াদি ভোগ্যপণ্যের ব্যবসা আগের থেকে বেড়েছে।
গত এপ্রিল-জুনে মাথার তেল, সাবান, শ্যাম্পু, ব্রাশ-পেস্ট, চিপ্স, নরম পানীয়, বিস্কুটের মতো স্বল্পমেয়াদি ভোগ্যপণ্যের গ্রামীণ বাজারে চাহিদা কিছুটা বেড়েছিল। তার মধ্যেই পরের ত্রৈমাসিক অর্থাৎ জুলাই-সেপ্টেম্বরে ফের কিছুটা থমকে গিয়েছে চাহিদা। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, হিন্দুস্তান ইউনিলিভার, আইটিসি, নেস্লের মতো এগুলির বিভিন্ন অগ্রণী বিক্রেতা সংস্থা সম্প্রতি তাদের সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকের আর্থিক ফল বিশ্লেষণের সময়ে এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। দাবি করেছে, গ্রামীণ বাজারে চাহিদা ফের ঢিমে হওয়ার প্রধান কারণ বিভিন্ন পণ্যের ধারাবাহিক মূল্যবৃদ্ধি এবং কিছু অঞ্চলে অনিয়মিত বৃষ্টি। ময়দা, চিনি, গম, আলু, কফি ইত্যাদির উৎপাদন কমার আশঙ্কা বাড়িয়ে দিচ্ছে দৈনন্দিন ব্যবহার্য পণ্যের দাম।
আইটিসি যেমন বলছে, গ্রামীণ বাজারে চাহিদা বেশ খানিকটা ঝিমিয়ে পড়ে জুলাই-সেপ্টেম্বরে। সব জায়গায় সমান ভাবে বৃষ্টি না হওয়ার কারণে ভুট্টা, কফি, চিনি, তৈলবীজ এবং মশলা উৎপাদন ধাক্কা খাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। ফলে সেগুলির বেড়ে যাওয়া দাম ধাক্কা দিয়েছে কেনাকাটায়। একই ইঙ্গিত দিয়ে নেস্লেও জানিয়েছে, কফি নিয়ে অনিশ্চয়তা বহাল। আসন্ন শীতের মরসুম প্রভাব পড়তে পারে গম উৎপাদনেও।
মোদী সরকার দেশের আর্থিক অবস্থা চাঙ্গা বলে লাগাতার দাবি করলেও, কখনও বেকারত্ব, কখনও বা চড়া মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে তোপ দেগেছেন বিরোধীরা। তুলে ধরেছেন গ্রামীণ অর্থনীতির নড়বড়ে অবস্থাকে। এর আগে অনেক সংস্থা সাবান, শ্যাম্পু, বিস্কুটের দাম না বাড়ালেও, মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে যুঝতে প্যাকেট বা মোড়কের মাপ ছোট করেছিল। তারা বলছে, ক্রেতার হাতে নগদের টানাটানি স্পষ্ট কম দামি বা ছোট প্যাকেট কেনার ঝোঁক বাড়ায়। ফলে বাজারে আধিক্য বেড়েছে স্থানীয় ও ছোট সংস্থাগুলির। বহু মানুষ ব্যবহার করেন এমন কম দামি পণ্যের (যেমন সাবান, চা) বাজারে অংশীদারি ধাক্কা খেয়েছে এইচইউএলের মতো সংস্থারও।
উপদেষ্টা সংস্থা নুভামা ইনস্টিটিউশনাল একুইটিস-এ এগ্জ়িকিউটিভ ডিরেক্টর অবনীশ রায়ের মতে, বিস্কুট, ভোজ্য তেল, মাথার ব্যবহারের তেলের মতো আরও কিছু পণ্যের বাজারে দখলদারি আরও বাড়বে স্থানীয় ছোট সংস্থাগুলির। তবে আগামী দিনে কিছু ইতিবাচক দিকের কথাও বলেছেন অবনীশ। যেমন, ভোটের আগে সরকারের তরফে নানা সুবিধা মিলতে পারে। সেপ্টেম্বরে বর্ষা ভাল হয়েছে। মূল্যবৃদ্ধি খুচরো বাজারে খানিক নেমেছে। চলতি উৎসবের মরসুমও তৃতীয় ত্রৈমাসিকে ব্যবসার চাকা ঘোরাতে পারে।