প্রতীকী ছবি।
ছ’সাত মাস ধরে আর্থিক সাহায্যের আর্জি জানিয়েও হাত শূন্য। আতিথেয়তা শিল্পের একাংশের ভয়, দ্রুত করোনা সংক্রমণ পিছু না-ছাড়লে বহু হোটেল-রেস্তরাঁয় তালা ঝুলতে পারে। কাজ হারাতে পারেন আরও বহু কর্মী। এই অবস্থায় অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের তৃতীয় দফার দাওয়াইয়ের আশ্বাসে যতটা খুশি হওয়ার কথা ছিল, ততটা হতে পারছে না হোটেল ও রেস্তরাঁ মহল। অনেকেই বলছেন, আগের দু’দফায় কিছু মেলেনি। তারা করোনায় সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত পরিষেবা ক্ষেত্রগুলির একটি হওয়া সত্ত্বেও। ফলে এ বার না-আঁচালে বিশ্বাস নেই।
সম্প্রতি আর্থিক বিষয়ক সচিব তরুণ বজাজ জানিয়েছেন, নতুন ত্রাণ ঘোষণার আগে সকলের সাহায্যের আর্জি খতিয়ে দেখছেন নির্মলা। শীঘ্রই অনেকের আশা বাস্তবায়িত হবে। বুধবার সংশ্লিষ্ট শিল্পের সংগঠন ফেডারেশন অব হোটেল অ্যান্ড রেস্তরাঁ অ্যাসোসিয়েশন্স অব ইন্ডিয়ার (এফএইচআরএআই) সেক্রেটারি জেনারেল জেসন চাকো অবশ্য বলেন, বহুবার সাহায্যের আর্জি জানালেও এখনও কিছু মেলেনি। তাই কেন্দ্রের আশ্বাসে কিছুটা আশার সঞ্চার হলেও যতক্ষণ না কিছু মিলছে, সঙ্কট কাটার কোনও পথ দেখছে না এই শিল্প।
চাকোর দাবি, বিপুল কর্মসংস্থানের উৎস যে ব্যবসা, তা থমকে গিয়েছিল দেশে-বিদেশে পর্যটন বন্ধের পরেই। সংক্রমণ এড়াতে শারীরিক দূরত্ব রক্ষা যখন বাধ্যতামূলক, তখন রেস্তরাঁ যে মাথা খুঁড়বে সে কথাও মনে করাচ্ছেন অনেকে। তাঁদের বার্তা, তাই আরও আগে সাহায্য পাওয়ার আশা ছিল। কিন্তু আশা ও বাস্তবের মধ্যে যে যোজন ফারাক, সেটা পরিষ্কার ইতিমধ্যেই।
শিল্পের দাবি
• বছরের শুরুতে বিদেশি পর্যটক আসার ক্ষেত্রে কোপ পড়ায় ধাক্কা খায় হোটেল-রেস্তরাঁর ব্যবসা।
• যা ব্যবসা হত, এখন তার ২০-৩০% হচ্ছে।
• গাড়ি, আবাসনের থেকেও ক্ষতিগ্রস্ত হোটেল-রেস্তরাঁগুলি। ফলে টান পড়ছে কার্যকরী মূলধনে।
• যে ব্যবসা জিডিপির ৯ শতাংশের সূত্র, যেখানে কর্মরত প্রায় ৮.২ কোটি মানুষ (মোট কর্মসংস্থানের ১২%), তাদের আর্থিক সাহায্য পৌঁছনো জরুরি দেশের স্বার্থেই।
• টিকে থাকতে দরকার কম সুদে ধার, ঋণ পাওয়ার যোগ্যতা যাচাইয়ের জন্য মূল্যায়নের ব্যবস্থা স্থগিত রাখার মতো পদক্ষেপও।
• সাহায্য না-মিললে ৪০-৫০% রেস্তরাঁ ও ৩০-৪০% হোটেলের ঝাঁপ বন্ধ হতে পারে। আরও মানুষ কাজ হারাবেন।
ত্রাণ প্রকল্পের আর্জি জানিয়ে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিল এফএইচআরএআই। কম সুদে ঋণের আর্জিও জানিয়েছে তারা। সংগঠনের ভাইস প্রেসিডেন্ট সুরেন্দ্রকুমার জয়সওয়াল বলেছেন, ‘‘অতিমারিতে ব্যবসা প্রথম বন্ধ হয় ও সব শেষে চালু হয়। সব থেকে বেশি দিন আমাদের ব্যবসাই বন্ধ রাখতে বলেছিল সরকার। ফলে নগদে টান পড়েছে। লক্ষ লক্ষ কাজ গিয়েছে। ঋণ পেতেও সমস্যা হচ্ছে। তাই ত্রাণ ছাড়া গতি নেই।’’