বিশ্ব অর্থনীতি কি এ বছর মন্দার খাদে পড়তে চলেছে? প্রতীকী ছবি।
বিশ্ব অর্থনীতি কি এ বছর মন্দার খাদে পড়তে চলেছে? ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) মঞ্চ থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন দেশের মুখ্য অর্থনীতিবিদদের দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী, এই প্রশ্নে দ্বিধাবিভক্ত তাঁরা। তবে একটি বিষয়ে একমত। জোগানশৃঙ্খল ধাক্কা খাওয়ার ফলে তৈরি হওয়া সঙ্কট মেরামত করতে করোনাকাল থেকে তাতে বদল আনার যে উদ্যোগ শুরু হয়েছে, তার সুফল পেতে চলেছে ভারত। আমেরিকা এবং ইউরোপের আর্থিক পরিস্থিতি বিভিন্ন ধরনের অনিশ্চয়তায় মোড়া হলেও পূর্ব এবং দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতি মোটামুটি গতিশীল থাকবে। কিন্তু একই সঙ্গে রিপোর্টে এমন কিছু বিষয়ের কথা বলা হয়েছে, যাতে উদ্বেগ বৃদ্ধির যথেষ্ট কারণ আছে। যেমন, মূল্যবৃদ্ধির ফলে জীবনযাপনের খরচ যে ভাবে বাড়ছে তাতে চাপে পড়ছেন খেটে খাওয়া মানুষ। বিপদ আরও বাড়াতে পারে প্রযুক্তির গ্রাসে উবে যেতে বসা কাজ।
মঙ্গলবার থেকে জেনিভায় শুরু হয়েছে দু’দিনব্যাপী সম্মেলন, ‘ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরাম গ্রোথ সামিট’। তার উদ্বোধনী কর্মসূচিতে প্রকাশিত হয়েছে ‘চিফ ইকনমিস্টস আউটলুক’ বা মুখ্য অর্থনীতিবিদদের দৃষ্টিভঙ্গি। তাঁদের সতর্কবার্তা, কাজের বাজারকে এখন সচল মনে হলেও চড়া মূল্যবৃদ্ধির ফলে জীবনযাপনের খরচ বেড়েই চলেছে। দুর্গতি বাড়ছে মানুষের। শুধু তা-ই নয়, বিভিন্ন দেশের ৮০০টিরও বেশি সংস্থার সঙ্গে কথা বলে তৈরি রিপোর্টে বলা হয়েছে, আগামী পাঁচ বছরে গোটা পৃথিবীতে ১.৪০ কোটি কাজ উবে যেতে পারে। ওই সময়ের মধ্যে নতুন ৬.৯ কোটি কাজ তৈরি হলেও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, যন্ত্রের উন্নতি-সহ বিভিন্ন কারণে সঙ্কুচিত হতে পারে ৮.৩ কোটি কাজ। ফলে নিট কর্মহারার সংখ্যা বাড়তে পারে ১.৪ কোটি। যা বিশ্বের এখনকার মোট কর্মসংস্থানের ২%।
অর্থনীতিবিদেরা জানিয়েছেন, আমেরিকার ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার ডামাডোলের প্রভাব সারা বিশ্বে না পড়লেও সমস্যা আরও কিছু দিন বহাল থাকবে। ইউরোপের অর্থনীতির গতি আরও কমবে। মূল্যবৃদ্ধির মোকাবিলায় বিভিন্ন দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্ক সুদ বাড়ানোয় শিল্পের মূলধন সংগ্রহের খরচ এখনও বেশ কিছু দিন চড়া থাকবে। তবে সরবরাহ ব্যবস্থার সঙ্কট কাটাতে বিভিন্ন পদক্ষেপের সুফল পাবে ভারত, ভিয়েতনাম, তাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, মেক্সিকো, তুরস্ক এবং পোল্যান্ড। চিনের অর্থনীতি ফের গতিশীল হওয়ার ইতিবাচক প্রভাব পড়বে পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়া এবং প্রশান্তমহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনীতিতে।