ছবি সংগৃহীত
বিশ্ব ব্যাঙ্কের ‘সহজে ব্যবসার পরিবেশ’ (ইজ় অব ডুয়িং বিজ়নেস) সূচকে ভারতের উন্নতি নিয়ে বরাবর বড়াই করে মোদী সরকার।
অনিয়মের অভিযোগে সেই রিপোর্ট প্রকাশ বন্ধ হওয়ায় এ বার বিরোধীদের কটাক্ষের মুখে পড়ল তারা। বিরোধী কংগ্রেসের তোপ, তথ্যে কারচুপি নিয়ে কোনও সূচক চালু হলে মোদীর ‘নতুন ভারত’ তাতে প্রথম স্থান পাবে। এর আগে গত বছর এই অভিযোগের কারণে রিপোর্ট সাময়িক ভাবে স্থগিত রেখেছিল বিশ্ব ব্যাঙ্ক। পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার সেটি আর প্রকাশ করা হবে না বলে ঘোষণা করেছে তারা। জানিয়েছে, অনিয়মের পিছনে প্রাক্তন চিফ এগ্জ়িকিউটিভ ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা-সহ উচ্চপদস্থ কর্তাদের একাংশের চাপ কাজ করেছে। তথ্যে কারচুপি করে বাড়ানো হয়েছে চিনের রেটিং। এখন আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডারের প্রধান জর্জিয়েভা যদিও তদন্ত রিপোর্টের সঙ্গে একমত নন। আর ভারতের সরকারি সূত্রের দাবি, এতে চিনের জালিয়াতিই প্রকাশ পেয়েছে। এ বার ভারতে আরও বেশি করে লগ্নি সরিয়ে আনবে সংস্থাগুলি।
ব্যবসার পরিবেশ কতটা সহজ, কর-কাঠামো, পরিকাঠামো ইত্যাদি মাপকাঠির বিচারে দেশগুলির ক্রমতালিকা প্রকাশ করত বিশ্ব ব্যাঙ্ক। বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশগুলিতে লগ্নি টেনে আনার ক্ষেত্রে তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করত। শেষ রিপোর্ট অনুসারে ভারত ছিল ৬৩ নম্বরে। ২০১৪ সাল থেকে এগিয়েছে ৭৯ ধাপ।
এ দিকে, তালিকায় প্রথম ৫০-এর মধ্যে ঢোকার জন্য ছ’টি ক্ষেত্র চিহ্নিত করা-সহ বিভিন্ন পদক্ষেপ ইতিমধ্যেই করেছে কেন্দ্র। এমনকি দিল্লি, মুম্বইয়ের সঙ্গে কলকাতা ও বেঙ্গালুরুকে নিয়ে সমীক্ষার দাবি করে তারা। রাজি হয় বিশ্ব ব্যাঙ্ক। বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও কথা বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই রিপোর্টের ধাঁচে রাজ্যগুলির জন্য
সহজে ব্যবসার পরিবেশের তালিকা প্রকাশের পথে হেঁটেছে মোদী সরকার।
যদিও এই সূচককে ‘অর্থহীন’ তকমা দিয়ে, তা নিয়ে সরকারি মহলের মাতামাতিকে গুচ্ছের সময় নষ্ট বলে আগেই তোপ দেগেছে কংগ্রেস, সিপিএমের মতো দলগুলি। গত বছর গাফিলতি সামনে আসার পরেই তারা বলেছিল, দেশের সমস্যায় আমল না-দিয়ে যে র্যাঙ্কিং-কে পাখির চোখ করা হয়েছিল, তা কতটা সারবত্তাহীন প্রমাণ হল। আর আজ কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশেরও তোপ, ইজ় অব ডুয়িং বিজ়নেস সূচকে ২০১৪ সালের পর থেকে ভারতের উন্নতি হচ্ছে বলে দাবি করা হচ্ছিল। এখন সেই প্রক্রিয়াই অর্থহীন। তা বাতিলও হয়েছে।
কেন্দ্র সরাসরি মন্তব্য না-করলেও সরকারি সূত্রের দাবি, ‘‘ভারতের তথ্যে অনিয়ম পাওয়া যায়নি।... চিনের এই জালিয়াতিতে সংস্থাগুলি ভারতে উৎপাদন সরিয়ে আনবে।’’